দ. আফ্রিকাকে হারিয়ে টিকে রইল পাকিস্তান
জিতলে টিকে থাকবে সেমি-ফাইনাল খেলার স্বপ্ন। হারলে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত। এমন সমীকরণ নিয়ে বাঁচা মরার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। পাকিস্তানের অবস্থাও ছিল প্রায় একই। তবে পেরে ওঠেনি প্রোটিয়ারা। তাদের হারিয়ে টিকে রইল পাকিস্তানের সেমিতে খেলার আশা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৯ রানে হারিয়েছে ১৯৯২ এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই হাশিম আমলাকে হারিয়ে ধাক্কা খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরান মোহাম্মদ আমির। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ফাফ দু প্লেসিকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়েন আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি কক। গড়েন ৮৭ রানের জুটি। এ জুটি ভাঙেন শাদাব খান। স্কোরবোর্ডে ১২ রান যোগ হতে এইডেন মার্করামকেও তুলে নেন তিনি। তাতে প্রোটিয়াদের চেপে ধরে পাকিস্তান।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকা বড় ধাক্কাটি খায় দলীয় ১৩৬ রান। আমিরের বলে সরফরাজের হাঁটে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরমুখী হন প্রোটিয়া অধিনায়ক। এরপর অবশ্য ভ্যান ডার ডুসেনকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নেমেছিলেন ডেভিড মিলার। ৫৩ রানের জুটিও গড়েছিলেন। কিন্তু শাদাবের ঘূর্ণিতে ভাঙে এ জুটি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালে ৯ উইকেটে ২৫৯ রান তোলে দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন দু প্লেসি। ৭৯ বলে ৫টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৬০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন ডি কক। এছাড়া ডুসেন ৩৬ ও মিলার ৩১ রান করেন। শেষ দিকে চেষ্টা করেছেন ফেলুকাওয়ো। ৩২ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৪৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। পাকিস্তানের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন শাদাব ও ওয়াহাব। ২টি উইকেট পান আমির।
এর আগে টস জিতে এদিন ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। শুরুটাও করে তারা দুর্দান্ত। ওপেনিং জুটিতেই আসে ৮১ রান। এ জুটি ভাঙেন ইমরান তাহির। দুই ওপেনার ইমাম-উল-হক ও ফখর জামান দুইজনকেই বিদায় করেন তিনি। ফলে কিছুটা চাপে পড়ে পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজকে নিয়ে দলের হাল ধরেন বাবর আজম। ৪৫ রানের জুটিতে সে চাপ সামলে নেন তারা।
দলীয় ১৪৩ রানে হাফিজের বিদায়ে হারিস সোহেলকে নিয়ে রানের গতি বাড়ানোর কাজে নামেন বাবর। উইকেটে নেমেই হাত খুলে ব্যাট করতে থাকেন হারিস। খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন বাবরও। ৬৮ বলে স্কোরবোর্ডে ৮১ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। ফেলুকাওয়োর বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাবর ভাঙে এ জুটি।
বাবরকে আউট হলেও রানের গতি বাড়ানোর দায়িত্বটা ইমাদ ওয়াসিমকে নিয়ে নেন হারিস। দুই জনই আগ্রাসী ব্যাট করতে থাকেন। ৪০ বলে ৭১ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। তাতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় দলটি। ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেছেন হারিস। ৫৯ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে র রান করেছেন তিনি। ৮০ বলে ৬৯ রান করেছেন বাবর। এছাড়া দুই ওপেনার ইমাম ও ফখর দুই জনই করেন ৪৪ রান করে। শেষ দিকে ১৫ বলে ২৩ রানের কার্যকরী একটি ইনিংস খেলেন ইমাদ। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৬৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান লুঙ্গি এনগিডি। ২টি উইকেট নেন তাহির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে (ইমাম ৪৪, ফখর ৪৪, বাবর ৬৯, হাফিজ ২০, হারিস ৮৯, ইমাদ ২৩, ওয়াহাব ৪, সরফরাজ ২*, সাদাব ১*; রাবাদা ০/৬৫, এনগিডি ৩/৬৪, মরিস ০/৬১, ফেলুকাওয়ো ১/৪৯, তাহির ২/৪১, মার্করাম ১/২২)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ২৫৯/৯ (আমলা ২, ডি কক ৪৭, দু প্লেসি ৬৩, মার্করাম ৭, ডুসেন ৩৬, মিলার ৩১, ফেলুকাওয়ো , মরিস ১৬, রাবাদা ৩, এনগিডি ১, তাহির ; হাফিজ ০/১১, আমির ২/৪৯, আফ্রিদি ১/৫৪, ইমাদ ০/৪৮, ওয়াহাব ৩/৪৬, শাদাব ৩/৫০)।
ফলাফল: পাকিস্তান ৪৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হারিস সোহেল (পাকিস্তান)।
Comments