মুশফিক-সাকিবের ব্যাটে মন্থর উইকেটে শক্ত পুঁজি

হাফসেঞ্চুরির দেখা পেলেন দুরন্ত ফর্মে থাকা সাকিব আল হাসান। তার বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়া বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম। এদিনও সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছিলেন তিনি। তবে হয়নি। শেষ দিকে রানের গতি বাড়ালেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তাতে উইকেট ও মাঠ বিবেচনায় বাংলাদেশ পেল শক্ত পুঁজি।
mushfiqur rahim
ছবি: এএফপি

হাফসেঞ্চুরির দেখা পেলেন দুরন্ত ফর্মে থাকা সাকিব আল হাসান। তার বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়া বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম। এদিনও সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছিলেন তিনি। শেষ দিকে রানের গতি বাড়ালেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তাতে উইকেট ও মাঠ বিবেচনায় বাংলাদেশ পেল শক্ত পুঁজি।

সোমবার (২৪ জুন) সাউদাম্পটনের রোজ বোলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৬২ রান করেছে বাংলাদেশ। মূলত তিনটি পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং একটি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটিতে স্কোরবোর্ডে এই সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে টাইগাররা। সাকিব ৬৯ বলে ৫১ ও মুশফিক ৮৭ বলে ৮৩ রান করেন। ২৪ বলে ৩৫ রানের দারুণ একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন মোসাদ্দেক।

এবার বিশ্বকাপে এই মাঠে ছিল মোট পাঁচটি ম্যাচ। এর মধ্যে একটি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। বাকি তিন ম্যাচের কোনোটিতেই কোনো দল আড়াইশো রান করতে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার ২২৭ রানের জবাবে ৪৮ ওভারে গিয়ে ম্যাচ জেতে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২১২ রানে আটকে সহজেই জেতে ইংল্যান্ড। আর সবশেষ ম্যাচে ভারতকে মাত্র ২২৪ রানে আটকেও ম্যাচ জিততে পারেনি আফগানিস্তান।

উইকেট মন্থর, স্পিন-বান্ধব। মাঠও বেশ বড়। প্রতিপক্ষ দলে মুজিব উর রহমান, রশিদ খান, মোহাম্মদ নবির মতো স্পিনার। তাই এ ম্যাচে কৌশল পাল্টে তামিমের সঙ্গী হিসেবে ওপেনিংয়ে নামেন লিটন দাস। পছন্দের পজিশনে শুরু থেকে সাবলীল ব্যাটিংই করছিলেন তিনি। তবে দলীয় ২৩ রানে ভাগ্যের ফেরে মাঠ ছাড়তে হয় লিটনকে।

মুজিবের বলে হাশমতউল্লাহ শহিদির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন। যদিও ক্যাচটা ঠিকমতো লুফে নেওয়া হয়েছে কী-না বা বলটা মাটিতে লেগেছিল কী-না তা নিশ্চিত হতে পারেননি থার্ড আম্পায়ার। তবে সফট সিগন্যাল (মাঠের সিদ্ধান্ত) আউট হওয়ায় সিদ্ধান্ত পাল্টাননি তিনি। লিটনের ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ১৬ রান।

এরপর তামিমের সঙ্গী হন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাকিব আল হাসান। এই জুটিতে আসে ৫৯ রান। জুটি ভাঙে ৫৩ বলে ৩৬ রান করা তামিমের বিদায়ে। নবির কিছুটা দ্রুতবেগে করা ডেলিভারিটি ঠিকমতো পড়তে না পেরে বোল্ড হয়ে যান তিনি।

পরের বলেই সাকিবের বিপক্ষে এলবিডাব্লিউয়ের আবেদন করেন রশিদ। আম্পায়ারও আঙুল উঁচিয়ে আউটও দিয়ে দেন। তবে রিভিউ নিয়ে সে যাত্রা রক্ষা পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। এরপর চলমান আসরে তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পথে বাংলাদেশের হয়ে আরেকটি অনন্য রেকর্ডের মালিক হন তিনি। পূরণ করেন বিশ্বকাপে এক হাজার রান। যার জন্য তাকে খেলতে হয়েছে মাত্র ২৭ ম্যাচ। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারকে টপকে ফের আসরের এক নম্বর রান সংগ্রাহক হয়ে যান এই বাঁহাতি।

সাকিবকে আউট করে বাংলাদেশের ৬১ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি ভাঙার পর পাঁচে ব্যাটিং করতে নামা সৌম্য সরকারকেও ফেরান মুজিব। নতুন পজিশনে সুবিধা করতে পারেননি সৌম্য। ১০ বলে করেন ৩ রান।

৮ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশকে। সে সুযোগে আফগানরা জেঁকে বসার চেষ্টা করে। ৩৭তম ওভারে দৌলত জাদরানকে ছক্কা হাঁকিয়ে এই চাপ ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দেন মুশফিকুর রহিম। সঙ্গে তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরিও।

ততক্ষণে থিতু হয়ে মাহমুদউল্লাহও হাত খোলার চেষ্টা চালান। তবে আফগান দলনেতা গুলবাদিন নাইবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে নবির হাতে ধরা পড়েন তিনি। ভাঙে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি। সেখানে মাহমুদউল্লাহর অবদান ৩৮ বলে ২৭ রান।

এরপর বাংলাদেশের স্কোর আড়াইশো পার হয় মুশফিক ও মোসাদ্দেকের কল্যাণে। ষষ্ঠ উইকেটে তারা যোগ করেন ৩৩ বলে ৪৪ রান। সেঞ্চুরির আশা জাগানো মুশফিককে ফেরান দৌলত জাদরান। আর ইনিংসের একদম শেষ বলে মোসাদ্দেক শিকার হন নাইবের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৬২/৭ (লিটন ১৬, তামিম ৩৬, সাকিব ৫১, মুশফিক ৮৩, সৌম্য ৩, মাহমুদউল্লাহ ২৭, মোসাদ্দেক ৩৫, সাইফউদ্দিন ২*; মুজিব ৩/৩৯, দৌলত ১/৬৪, নবি ১/৪৪, নাইব ২/৫৬, রশিদ ০/৫২, রহমত ০/৭)।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

7h ago