ক্লান্তি ঝেড়ে উত্তপ্ত চুল্লির সামনে

উপমহাদেশের ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ তকমা গায়ে সাঁটা ভারত-পাকিস্তানের খেলা এখন কালেভদ্রে হয় এবং তা মেটাতে পারে না ক্রিকেট ভক্তের চাহিদাও। আওয়াজ যতখানি ওঠে, তার চেয়ে কয়েকগুণ কম ছড়ায় মাঠের উত্তাপ। কেমন একপেশে হয়ে পড়া এই ম্যাচের রোমাঞ্চও কমতির দিকে। অনেকের মতে, এই অভাবটা পূরণ করে নিয়েছে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। সীমিত পরিসরে দুদলের গত তিনটি ম্যাচই যে হয়েছে টানটান উত্তেজনায় ঠাসা। দুদলের সমর্থকরাও সারাক্ষণই তেতে থাকেন এই ম্যাচ ঘিরে। তর্ক-বিতর্কের মাত্রা এতটাই চড়া যে, ভারত-বাংলাদেশ খেলা হলে ক্রিকেটাররাও অনুভব করেন বাড়তি চাপ।
Mashafe & Dhoni
ছবি: বিসিবি

উপমহাদেশের ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ তকমা গায়ে সাঁটা ভারত-পাকিস্তানের খেলা এখন কালেভদ্রে হয় এবং তা মেটাতে পারে না ক্রিকেট ভক্তের চাহিদাও। আওয়াজ যতখানি ওঠে, তার চেয়ে কয়েকগুণ কম ছড়ায় মাঠের উত্তাপ। কেমন একপেশে হয়ে পড়া এই ম্যাচের রোমাঞ্চও কমতির দিকে। অনেকের মতে, এই অভাবটা পূরণ করে নিয়েছে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। সীমিত পরিসরে দুদলের গত তিনটি ম্যাচই যে হয়েছে টানটান উত্তেজনায় ঠাসা। দুদলের সমর্থকরাও সারাক্ষণই তেতে থাকেন এই ম্যাচ ঘিরে। তর্ক-বিতর্কের মাত্রা এতটাই চড়া যে, ভারত-বাংলাদেশ খেলা হলে ক্রিকেটাররাও অনুভব করেন বাড়তি চাপ।

ভারতের বাইরে সবচেয়ে বড় ক্রিকেট বাজার বাংলাদেশে হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবেও বাড়ছে এই ম্যাচের কদর। যেকোনো বিচারেই তাই এটা হাই ভোল্টেজ ম্যাচ। এই বিশ্বকাপের পরিস্থিতি মাথায় নিলে বাংলাদেশের জন্য তা তো মহা-গুরুত্বপূর্ণ। সেমিফাইনালে যেতে হলে ভারতকে হারানো চাই।

এমন হাইভোল্টেজ ম্যাচ বলেই হয়তবা। হাতে পাওয়া লম্বা বিরতিকে ভিন্নভাবে কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ দল। ২৪ জুন আফগানিস্তানকে হারিয়ে আসার পর সবাইকেই দিয়ে দেওয়া হয় টানা পাঁচদিনের ছুটি। এই সময়ে রাখা হয়নি কোন ধরণের ঐচ্ছিক অনুশীলনও। ছুটি পেয়ে কয়েকজন ম্যাচ ভেন্যুতে আসেননি।  অনেকে ঘুরতে বেড়িয়েছেন দূর-দূরান্তে। কাছে পিঠে গেছেন কেউ কেউ।

বাংলাদেশকে ছুটির মেজাজে রেখেই রোববার ম্যানচেস্টার থেকে এসে বার্মিংহামে হায়াত রিজেন্সি হোটেলে উঠেছে ভারত দল। যেখানে আগে থেকেই আছে বাংলাদেশ। হোটেলে ঢুকেই মহেন্দ্র সিং ধোনীর সঙ্গে দেখা হয়ে গেছে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজার। নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া দুজন খানিকক্ষণ আলাপ সেরেছেন।

বাংলাদেশ ম্যাচের আগে ভারতের লড়াই অবশ্য ইংল্যান্ডের সঙ্গে। বাংলাদেশ মনেপ্রাণে বিরাট কোহলিদের জয় চাইবে এদিন। জিতে আসা ভারতকে পরে নিজেরা হারিয়ে দিতে লড়বেন প্রাণপণ।

সামনে কঠিন ম্যাচ, কঠিন সমীকরণ।  প্রশ্ন উঠতে পারে, এত বড় খেলা রেখে সবাই কি করে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে! কিন্তু যখন জানবেন সেই আয়ারল্যান্ড সফর থেকেই শুরু হয়েছে ক্রিকেটারদের টানা খেলা, মানসিক আর শারীরিক ধকল গেছে বিস্তর। এমন একটা ছুটির যৌক্তিকতাও তখন পাওয়া যেতে পারে। তবে মোদ্দা কথা হলো টিম অফিসিয়াল থেকে ক্রিকেটার,  ছুটিটা সবাই চেয়েছেন এবং পেয়েছেন, তা নিজেদের মতো চুটিয়ে কাজেও লাগিয়েছেন তারা।

শনিবার ছুটির শেষ দিনে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন বার্মিংহামের বাইরে থাকা ক্রিকেটার আর সাপোর্ট স্টাফরা। রোববার থেকেই অনুশীলনে নামার কথা  বাংলাদেশের। মুশকিল হলো রোববার এজবাস্টনে ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ থাকায় মূল ভেন্যুতে নামার সুযোগ নেই। আইসিসির ঠিক করে দেওয়া আলাদা  প্রাক্টিস অ্যারেনায় চলবে হালকা অনুশীলন। অর্থাৎ ১ তারিখ ম্যাচের আগের দিনই কেবল মূল ভেন্যুতে ব্যাট বলে ঝালাই করতে নামবেন মাশরাফিরা।

প্রস্তুতিটা কি তবে কম হয়ে যাবে? বিশ্বকাপে খেলার মধ্যেই থাকায় অনুশীলন নিয়ে বিশেষ ভাবিত নন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বরং টানা খেলার পর, দিন-পাঁচেকের এই বিরতিতে তিনি দেখছেন ফুরফুরে হওয়ার আশা। অবশ্য ফুরফুরে হয়েই গা দুলিয়ে বেড়ানোর পরিস্থিতি নেই । মস্তিষ্কের ভেতরে কিলবিল করা নেতিবাচক চিন্তা সব ঝেড়ে ফেলা গেছে, আলগা চাপকেও হাওয়ায় উড়িয়ে দেওয়া গেছে বটে। এবার সতেজ হয়ে যে উত্তপ্ত চুল্লির আঁচ নেওয়ার পালা। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই হাওয়া গরম কিছু। সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে অনুশীলনে খেটে মরার চেয়ে মানসিকভাবে নিজেদের চাঙ্গা রাখতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। বোর্ড সেই চাওয়া মিটিয়েছে, এবার ক্রিকেটারদের কাছে দাবি মেটানোর পালা। ফুরফুরে হয়ে এসেই উত্তাপটা নিশ্চয়ই টের পাচ্ছেন মাশরাফিরা। কোন কারণে খারাপ খেললে বাড়তি এই বিরতিও যে প্রশ্নবোধক হয়ে আসবে তা বলাই বাহুল্য।

Comments

The Daily Star  | English

Schools to remain shut till April 27 due to heatwave

The government has decided to keep all schools shut from April 21 to 27 due to heatwave sweeping over the country

55m ago