এমনটা হবে, আগেই বলেছিলেন কোহলি
বিশ্বকাপের আগে ধারণা করা হয়েছিল প্রায় সব ম্যাচই হবে বড় রানের। আড়াইশো তো নয়ই, তিনশো রানের পূঁজি নিয়েও ম্যাচ জেতার আশা করা হবে বাড়াবাড়ি। কিন্তু বাস্তবে সেটা একদম মিলেনি। বড় রান হয়েছে বটে, তবে হরহামেশাই নয়। এখনো তিনশোর বেশি রান তাড়া করে জিততে পেরেছে কেবল বাংলাদেশ। বিশেষ করে টুর্নামেন্টের শেষ দিকে এসে আগে ব্যাট করে তিনশো রান করাও হয়ে গেছে ভীষণ কঠিন। উইকেট নিয়ে তাই ব্রিটিশ মিডিয়ায় চলছে তোলপাড়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নামার আগে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি ব্যাপারটাকে দেখছেন অন্য চোখে।
বিশ্বকাপের আগে সব দলের অধিনায়কদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বড় রানের টুর্নামেন্ট প্রসঙ্গে কোহলি বলেছিলেন, বিশ্বকাপে চাপের কারণেই মাঝারি রান নিয়েও অনেক ম্যাচ জেতা যাবে। শেষ দিকে গিয়ে ব্যবহৃত উইকেট হয়ে পড়বে কঠিনও।
এবার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি তিনশো পেরিয়েছে ইংল্যান্ডই। একটা বাদে (পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪৮ তাড়ায় ৩৩৪ করে হার) সবগুলোই আগে ব্যাট করে। রান তাড়ায় তাদের দশা সবচেয়ে করুণ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩২ রান তাড়াতেও জিততে পারেনি ইয়ন মরগ্যানের দল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৮৫ রান তাড়া করতে গিয়েও হেরেছে বড় ব্যবধানে। হট ফেভারিট তকমা নিয়ে খেলা স্বাগতিকরা আছে সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নেওয়ার শঙ্কায়।
ইংল্যান্ডের এই অবস্থায় বিস্মিত কিনা? জবাবে ভারত অধিনায়ক মনে করিয়ে দিলেন তার আগের কথা, ‘দেখেন সবাই ভেবেছিল নিজেদের মাঠে ইংল্যান্ড প্রভাব বিস্তার করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় অনেকেই বিস্মিত। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগেই প্রেস কনফারেন্সে আমি বলেছিলাম চাপটা একটা বড় ভূমিকা রাখবে। এই কারণে কম রানও এখানে ডিফেন্ড করা যাবে। আমি আরও দুটি বিশ্বকাপ খেলেছি। দেখেছি এরকম টুর্নামেন্টে সব দলই শক্ত আর সেরা অবস্থায় থাকে।’
টুর্নামেন্টে বেশ কয়েকটা কম রানের ম্যাচ খেলেছে ভারতও। আফগানিস্তানের সঙ্গে ২২৪ রান করেও ম্যাচ বের করেছে। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৬৮ রান করেও পেয়েছে বড় জয়। এই ধরণের ম্যাচে চাপটা নিতে পারাকেই নিজেদের বাড়তি সক্ষমতা দেখছেন কোহলি, ‘যে কেউ যে কাউকে হারাতে পারে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমরা আঁতকে উঠেছিলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও আরেকটা লো স্কোরিং ম্যাচ ছিল। কিছুই এখানে নিশ্চিত না। ইংল্যান্ডকে অন্যদল (শ্রীলঙ্কা) কম রান করেও আটকে দিল। সবার সঙ্গেই এটা হতে পারে। আমরা এখনো হারিনি। কিন্তু দল হিসেবে এতেই আহ্লাদিত হওয়ার সুযোগ নেই। দল হিসেবে সব ম্যাচ জিতেছি কারণ আমরা চাপ নিতে পেরেছি, পেশাদার ক্রিকেট খেলেছি।’
উইকেটে এখন বড় রান মিলছে না বলে ইংলিশ ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো ক্ষোভ গোপন রাখেননি। বিগ হিটারদের নিয়ে গড়া ইংল্যান্ড দলও তাই শেষ দিকে এসে ভুগছে ভীষণ। কোহলির কথা নিজেদের কোয়ালিটি দিয়েই যেকোনো উইকেটে মানিয়ে নেওয়া সেরাদের লক্ষণ, ‘উইকেট কেমন হবে এমন কোন প্রত্যাশা নিয়ে আসিনি। ভালো দল হিসেবে আপনাকে যেকোনো উইকেটে মানিয়ে নিতে হবে। গত দুই ম্যাচে তো আমরা ভাঙা পিচে খেলেছি।’
‘এটা এমন না যে আমি কোন একটা পূর্ব ধারনা নিয়ে গেছি। একটা ধারণা নিয়ে গিয়ে সেটা মিললে মেরে গড়বড় করেছি, এমন হয়নি। আমার মনে হয় পরিস্থিতি কঠিন হয়ে গেলেও জেতার পথ বের করতে হয়। আর অন্য দল কী ভাবছে সেটা আমরা একদম খেয়াল করি না। তারা তাদের চিন্তা জানাবে।’
Comments