দুর্বল অর্থনীতির মূল উদ্বেগ নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা প্রস্তাব

PM in China
২ জুলাই ২০১৯, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের দালিয়ান শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)-এর বার্ষিক সভায় ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকসই বিশ্ব গড়ে তুলতে এবং ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী অথবা অপেক্ষাকৃত দুর্বল অর্থনীতির মূল উদ্বেগ নিরসনের লক্ষ্যে আজ পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।

তিনি বলেন, “আমরা মাঝেমধ্যে শুধু কয়েকটি বৃহৎ অর্থনীতির সক্ষমতা অথবা তাদের প্রয়োজনের আঙ্গিকেই সবকিছু দেখি। কিন্তু টেকসই বিশ্বের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীসমূহের অথবা অপেক্ষাকৃত দুর্বল অর্থনীতিগুলোর মূল উদ্বেগ নিরসনের উপায়ও বের করতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ)-এর বার্ষিক সভায় অংশ নিতে এখন চীনের দালিয়ান শহরে অবস্থান করছেন। তিনি গতকাল (২ জুলাই) ডালিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ডব্লিউইএফ-এর সভায় ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণকালে এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার পাঁচ দশকের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আমাকে বলছে যে ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী ও দুর্বল অর্থনীতিকে মাথায় রেখেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যে কোন পদক্ষেপ নিতে হবে। এগুলো হচ্ছে- প্রথমত: দেশগুলোর মধ্যে পারস্পারিক শান্তি-সম্প্রীতি স্থিতিশীলতার পরিবেশ সৃষ্টি।

দ্বিতীয়ত: টেকসই উন্নয়নের সব দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

তৃতীয়ত: দেশগুলোর পারস্পারিক স্বার্থে বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

চতুর্থত: সবার জন্য সম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে সার্বিক উন্নয়ন করতে হবে।

পঞ্চমত: প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয় সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।”

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন ভারতের সাথে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন করা ছিলো বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ইস্যু। তিনি বলেন, “আমরা পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে মিয়ানমার এবং ভারতের সাথে আমাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারিত করেছি এবং এখন বাংলাদেশ ও ভারত আন্তঃসীমান্ত নৌপথ উন্নয়নে যৌথভাবে কাজ করছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি সব সময় বিশ্বাস করেন যে আয়তনের দিক দিয়ে ভারতের চেয়ে অনেক ছোট হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন ও যোগাযোগের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।

তিনি বলেন, “আমরা একটি নীতিভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। ভূ-রাজনীতি সবসময়ই জীবনের একটি অংশ। তবে আমাদের সতর্কতার সাথে ইস্যুগুলোকে মূল্যায়ন করে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। আমরা স্বল্প সময়ের অর্জনের জন্য দীর্ঘদিনের স্বার্থকে বিসর্জন দিতে পারি না।

শেখ হাসিনা বলেন, সব দেশের মধ্যে অভিন্ন সমৃদ্ধি নিশ্চিতে এখনো প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল অঞ্চল বলে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। একইভাবে, বঙ্গোপসাগর একটি উদীয়মান ও সমৃদ্ধ অঞ্চল। এই অঞ্চলে দেড় বিলিয়ন লোকের বাস। তিনি বলেন, “বঙ্গোপসাগরের আশপাশে বসবাসকারী মানুষের উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলটিকে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যু হিসেবে দেখার প্রবণতা রয়েছে।”

এরপর প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

43m ago