গ্রেপ্তার এড়াতে দাড়ি কামিয়ে ফেলেন মূল আসামি খাদেম সাইফুল
রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থান জামে মসজিদের মূল খাদেমের পদ হারিয়ে সাইফুল নতুন খাদেম হানিফ শেখ হত্যার পরিকল্পনা করেন। লাশ গোপন করতে তিনি আজিমপুর কবরস্থানের একটি ভাঙ্গা কবরকে বেছে নেন।
গত ২ জুলাই বিকালে সহকর্মী হানিফ যখন ঘুমাচ্ছিলেন তখন সাইফুল তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হানিফের মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
এরপর তিনি হানিফের মরদেহটি বস্তায় ঢুকিয়ে রাখে। তার পরিকল্পনা ছিলো- রাতে সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়বেন তখন তিনি কবরস্থানে একটি ভাঙ্গা কবরে হানিফকে মাটিচাপা দিবেন। কিন্তু, রাতে অন্যদের ঘুমাতে দেরি হচ্ছিলো দেখে তিনি তাদেরকে বলেন যে তার বাবা মারা গিয়েছেন তাই তিনি চলে যাচ্ছেন।
এরপর, গ্রেপ্তার এড়াতে দাড়ি কামিয়ে সাধারণ মানুষের বেশ ধারণ করে খাদেম সাইফুল।
গতকাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খাদেম হানিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
আজ (৯ জুলাই) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার পিবিআই সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আজিমপুর কবরস্থান জামে মসজিদের খাদেম হানিফের মরদেহ পাওয়া যায় ৩ জুলাই। তিনি মসজিদের যে ফ্লোরে ঘুমাতেন সেই ফ্লোরের বারান্দায় রাখা ঝুড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে দুজন পুরনো খাদেম ও ঝাড়ুদারকে আটক করা হয়। তবে একজনকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। স্বাভাবিকভাবে তাকে সন্দেহ করা হয়। তিনিই হলেন সাইফুল ইসলাম।
পিবিআই প্রধান আরো জানান, নিহত হানিফ শেখের বাড়ি টুঙ্গীপাড়া। নয় মাস আগে তিনি মসজিদের মূল খাদেম হিসেবে যোগদান করেন। তার পরিবারের সদস্যরা টুঙ্গীপাড়ায় থাকে। হানিফ গত নয় মাসে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। সাইফুল আগে মূল খাদেম ছিলেন। তিনি কাজ ঠিকমতো করে না বলে হানিফকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। সাইফুল তার পদ হারানোর কারণে অত্যন্ত বিরক্ত ছিলো।
সাইফুল তার পদ ফিরে পাওয়ার জন্যে হানিফকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে বলেও উল্লেখ করেন বনজ কুমার মজুমদার।
মরদেহটি চিহ্নিত করা হয়েছে যেভাবে:
পিবিআই প্রধান বলেন, খাদেম হানিফ সেই রাতে ফিরে না এলে অন্যরা ঘুমিয়ে পড়ে এবং পরদিন সকালে যে যার কাজে বেরিয়ে যায়। কিন্তু, রাতে ফিরে এসে তারা যখন আবার ঘুমাতে যায় তখন তারা দুর্গন্ধ পায়। তখন সেই দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তারা বারান্দায় একটি বস্তা দেখতে পায় এবং সেই বস্তা খুলে এই মরদেহটি উদ্ধার করে।
Comments