কিছু ডিসি, ওসি নিজেদের জমিদার মনে করে: হাইকোর্ট
“কিছু কিছু ওসি-ডিসি নিজেদের জমিদার মনে করে। মনে হয় তারাই অল ইন অল (সর্বেসর্বা)।” ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদনের শুনানির সময় বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে আজ মঙ্গলবার এ মন্তব্য এসেছে।
আদালত বলেন, মদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জীবন রক্ষা করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছেন সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন।
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানকে গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার দিন দশেক আগে নুসরাত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে সোনাগাজী থানায় যান। থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিব্রত করেন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেন। ওই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলায় কারাগারে রয়েছেন মোয়াজ্জেম হোসেন।
জামিন আবেদনের শুনানির পর হাইকোর্ট জামিন নামঞ্জুর করেন।
শুনানিতে মোয়াজ্জেমের আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ আদালতকে বলেন, মোয়াজ্জেমের মোবাইল থেকে ভিডিওটি এক সাংবাদিকের হাতে চলে যায়। সেখান থেকেই ভিডিওটি ছড়িয়েছে। নুসরাতের বক্তব্য মোবাইলে ধারণ করে মোয়াজ্জেম কোনো অপরাধ করেননি বলেও যুক্তি দেন তিনি।
মোয়াজ্জেমের আইনজীবী আরও বলেন, যে ধারায় তার (মোয়াজ্জেমের) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তার সাজার মাত্রা কম, অপরাধটি জামিনযোগ্য এবং তিনি বয়স্ক ও হৃদরোগ থাকায় তার চিকিৎসা দরকার বলেই জামিন আবেদন করেছি। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা, তার পেনশনের ব্যাপার রয়েছে। জামিন দিলে তিনি পালিয়ে যাবেন না।
এক পর্যায়ে আদালত বলেন, “সাংবাদিকদের হাতে ভিডিওটি আগে গেলে তাকে (নুসরাত) মরতে হতো না।”
মোয়াজ্জেমের জামিনের বিরোধিতা করে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, সরকারি অফিসার হয়ে তিনি (মোয়াজ্জেম) ভিডিও করলেন, তা ভাইরাল হলো। তাকে জামিন দিলে জনমনে কী মেসেজ যাবে?
Comments