যমুনা পাড়ের কান্না
একদা এখানে ছিলো ফসলের মাঠ, কৃষকের বসতবাড়ি। এখন শুধু পানি আর পানি। পাড় ভাঙে, যমুনার সীমানা বাড়ে। বাড়ে মানুষের কান্না। যমুনা পাড়ের অসহায় মানুষের চোখের পানি আর নদীর পানি আজ একাকার। জমি, ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীতে। ঠেকানোর সাধ্য নেই তাদের। শুধু তারা তাকিয়ে দেখছেন। ভাঙন ঠেকানোর দায়িত্ব যাদের তারা আগামী অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
ভিডিও: মানিকগঞ্জে শতাধিক বাড়ি যমুনায় বিলীন
এমন দৃশ্য দেখা গেলো মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায়। পানি বাড়তে শুরু করেছে যমুনায়। আর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নদীর ভাঙন।
ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়ন ও দৌলতপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের শতাধিক বাড়িঘর। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরো বহু ঘরবাড়িসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি।
জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতি বছরই বর্ষায় ভাঙন দেখা দেয়। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, বরাদ্দ না থাকায় তাদের এই মুহূর্তে তেমন কিছুই করার নেই।
সরেজমিন দেখা গেছে, যমুনার ভাঙনে শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার শতাধিক বাড়িঘর ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমির পাশাপাশি ভেঙে গেছে আবুডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একটি মসজিদ ও একটি মাদ্রাসা। ভাঙনের মুখে পড়েছে বাচামারা উত্তরখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি ভবন। নদী ভাঙনে আতংকিত হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষেরা।
জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এরই মধ্যে নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা ও ঢেউটিন দেওয়া হয়েছে। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙনরোধে ব্যবস্থাও নিতে বলা হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বলেন, ভাঙনরোধে স্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবছরই বর্ষায় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, জরুরি ভিত্তিতে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। সেটি পেলে আগামী অর্থ বছরে কাজ শুরু করা হবে।
জাহাঙ্গীর শাহ দ্য ডেইলি স্টারের মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা
Comments