বৈশ্বিক অভিযোজন কেন্দ্র বাংলাদেশে নির্মাণের প্রস্তাব বান কি-মুনের
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশন-এর চেয়ারম্যান বান কি-মুন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি বৈশ্বিক অভিযোজন কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছেন। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এই প্রস্তাব দেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে দু’ব্যাপী ঢাকা বৈঠকের যোগদানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মার্শাল আইল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট ড. হিলদা সি. হেইনে বান কি-মুনের সঙ্গে ছিলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব জলবায়ূ পরিবর্তন অভিযোজনের জন্য বাংলাদেশকে একটি মডেল হিসেবে বর্ননা করে বলেন, “জলবায়ূ পরিবর্তনের অভিযোজনে বাংলাদেশ সেরা শিক্ষক।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আপনি বিশ্ব নেতাদের মধ্যে অন্যতম যিনি জলবায়ূ পরিবর্তনের সমস্যাটি নিয়ে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।”
বান কি-মুন এবং ড. হিলদা দুজনেই অভিযোজনের প্রতিকূল প্রভাবকে মানিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় গৃহীত কৌশলের জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ প্রসঙ্গে তারা বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল, কিন্তু সরকারের সময়োপযোগী গৃহিত কৌশলের কারণে সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ফণীতে মাত্র কয়েকজন লোক মারা গেছে।
মুন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হবে বাংলাদেশ।
বৈঠককালে বিভিন্ন সময়ে এমনকি জাতিসংঘ মহাসচিব হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্তির আগেও বাংলাদেশ সফরের সুখস্মৃতি স্মরণ করেন মুন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বায়ুদূষণের জন্য দায়ী কার্বন বাংলাদেশ খুব সামান্যই নিঃসরন করে থাকে তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭০ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে স্বাধীনতার পর বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর পথ দেখিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে বঙ্গবন্ধু কক্সবাজারে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলেছিলেন এবং যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় তখন ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাছাড়া জাতিরপিতা জনগণের পাশাপাশি গৃহপালিত পশুদের জীবন রক্ষায় ‘মুজিব কিল্লা’ গঠন করেছিলেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে তাঁর সরকারের উদ্যোগের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে এবং জনগণের জন্য অভিযোজন কার্যক্রম গ্রহণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
Comments