আরো ৪ জেলের মরদেহ উদ্ধার, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০

কক্সবাজারে সাগর থেকে উপকূলে ভেসে আসা আরও চার জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত দুই দিনে ১০ জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো।
স্টার ফাইল ছবি

কক্সবাজারে সাগর থেকে উপকূলে ভেসে আসা আরও চার জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত দুই দিনে ১০ জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো।

গতকাল (১১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া, মহেশখালীর হোয়ানক ও রামুর হিমছড়ি সমুদ্র পয়েন্ট থেকে তিনজন এবং আজ বিকেলে অপর একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ওসি বলেন, রাতে কক্সবাজার সমিতিপাড়া সমুদ্র পয়েন্টে একজন, মহেশখালীর হোয়ানক থেকে একজন এবং রামুর হিমছড়ি থেকে একজন এবং আজ বিকেলে মহেশখালীর মোহনা থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত ১০ জেলের মধ্যে সাতজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন– ভোলার চরফ্যাশনের পূর্ব মাদ্রাজ এলাকার তরিফ মাঝির ছেলে কামাল হোসেন (৩৫), চরফ্যাশনের উত্তর মাদ্রাসা এলাকার নুরু মাঝির ছেলে অলি উল্লাহ (৪০), একই এলাকার ফজু হাওলাদারের ছেলে অজি উল্লাহ (৩৫), মৃত আবদুল হকের ছেলে মো. মাসুদ (৩৮), শহিদুল ইসলামের ছেলে বাবুল মিয়া (৩০), নজিব ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৬) এবং চরফ্যাশনের রসুলপুর এলাকার আসমান পাটোয়ারীর ছেলে শামসুদ্দিন পাটোয়ারী (৪৫)।

এর আগে ১০ জুলাই সকালে শহরের হোটেল সিগাল সমুদ্র পয়েন্ট থেকে ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেসময় ভোলা জেলার চরফ্যাশন এলাকার ওয়াজেদ উদ্দিনের ছেলে জুয়েল (১৭) ও মকবুল আহমদের ছেলে মনির আহমদ মাঝি (৫৫)-কে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চিকিৎসাধীন মনির মাঝি জানান, গত ৪ জুলাই ভোলা চরফ্যাশনের শামরাজঘাট থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ট্রলার নিয়ে তিনি সাগরে যান। তারা মোট ১৪ জন ওই ট্রলারে ছিলেন। গত ৬ জুলাই ভোরে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি থেকে তারা ছিটকে পড়েন। পরে ট্রলারটিও উল্টে যায়। এরপর কে কোথায় হারিয়ে গেছেন তা জানা যায়নি।

তিনি আরো জানান, কিন্তু, ট্রলার ধরে রাখেন অনেকে। ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলারটি বারবার উল্টে যায়। তবুও তারা ট্রলার ধরে রাখার চেষ্টা করেন। ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলার থেকে ছিটকে পড়ে আবার ধরেন। তবে সেসময় প্লাস্টিকের বেশ কয়েকটি পানির বোতল ড্রামের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন তারা। দুই-একটি বোতলে পানি রেখে বাকি সব বোতলের পানি ফেলে দেন। এতোদিন ওই পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন তারা।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, “সাগরে ভেসে আসা ১০ জেলের মধ্যে সাতজনের পরিচয় জানা গেছে। অপর দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”

তিনি আরও বলেন, “দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়া ট্রলারটির মালিকের নাম ওয়াজেদ উদ্দিন ওরফে পিটার। তিনি কক্সবাজারে আসার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, মৃতদহগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্বজনরা মৃতদেহগুলো চরফ্যাশনে নিজেদের গ্রামে দাফন করার জন্য নিয়ে গেছেন।

এছাড়া, আরো তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago