বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নেওয়ার দাবি করিনি: ডি ভিলিয়ার্স
এবি ডি ভিলিয়ার্স খেলতে চেয়েছিলেন বিশ্বকাপ, প্রস্তাব দিয়েছিলেন অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার- গেল মাসে গণমাধ্যমে এসেছিল এমন সংবাদ। নড়েচড়ে বসেছিল ক্রিকেট অঙ্গন। শুরু হয়েছিল আলোচনা ও সমালোচনা। পরেরটার পাল্লাই ভারী ছিল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা ব্যাটসম্যান তখন মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন। প্রোটিয়াদের বিশ্বকাপ অভিযানে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অবশেষে মুখ খুলেছেন ডি ভিলিয়ার্স।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে পুরো ঘটনা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন এবি। জানিয়েছেন, বিশ্বকাপে স্কোয়াডে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করার কোনো রকম দাবি বা প্রস্তাব তিনি রাখেননি। সমালোচনা তৈরির উদ্দেশ্য নিয়েই তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও মনে করছেন তিনি।
তিনি লিখেছেন, ‘আমি যেদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেই (২০১৮ সালের মে মাসে), সেদিন আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “বিশ্বকাপের দরজা আমার জন্য খোলা আছে কি-না”। আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। আমি প্রস্তাব দেইনি। আমি উত্তরে বলেছিলাম, “হ্যাঁ”। পরে মনে হয়েছিল, আমার না বলা উচিত ছিল।’
তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের যে ব্যক্তিটি তাকে প্রশ্নটি করেছিলেন, তার নাম উল্লেখ করেননি ডি ভিলিয়ার্স। আর প্রশ্নের জবাবে ‘হ্যাঁ’ বলার মাধ্যমে এবি বোঝাতে চেয়েছিলেন, যদি প্রয়োজন হয় তবে আবার খেলবেন তিনি।
ভিলিয়ার্স যোগ করেছেন, ‘এরপর সপ্তাহ গড়িয়ে গেল। মাস গড়িয়ে গেল। আমার এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ডের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়নি। আমি তাদেরকে ফোন করিনি। তারাও আমাকে করেনি। আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম (অবসরের) এবং প্রোটিয়ারা তাদের মতো করে এগিয়ে গেছে।’
‘ফ্যাফ (দু প্লেসি) ও আমি স্কুলজীবন থেকে বন্ধু। বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণার দুদিন আগে আমি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম, হালকা আলাপের জন্য। তখন আমি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ভালো ফর্মে ছিলাম। কথায় কথায় এক বছর আগের ওই ঘটনাটা তাকে বলি যা আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- যদি প্রয়োজন হয়, তবে আমাকে পাওয়া যাবে। যদি কেবলই প্রয়োজন হয়।’
‘আমি কোনো দাবি করিনি। প্রতিযোগিতা মাঠে গড়ানোর শেষ মুহূর্তে আমি জোর করে বিশ্বকাপ দলে ঢুকতে চাইনি আর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রত্যাশাও করিনি। আমার দিক থেকে জোরালো কোনো দাবি ছিল না, অন্যায্য কিছুও ছিল না।’
‘তারপর, হঠাৎ করে, যেদিন ভারতের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে গেল, সেদিন সন্ধ্যায় আমাদের (দু প্লেসির সঙ্গে) ওই আলাপের বিষয়টি গণমাধ্যমে ফাঁস হলো আর এমনভাবে বিকৃত করা হলো যেন আমাকে সবচেয়ে বাজেভাবে উপস্থাপন করা যায়।’
‘ঘটনাটা আমি বা আমার সঙ্গের কেউ ফাঁস করিনি। ফ্যাফও করেনি। সমালোচনা তৈরির উদ্দেশে সম্ভবত কেউ এটা করেছে। আমি জানি না।’
‘এর ফলে আমাকে অন্যায্যভাবে অহংকারি, স্বার্থপর, দ্বিধাগ্রস্ত বলা হয়েছে। কিন্তু আমি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আমার বিবেক পরিষ্কার। আমি যুক্তিসঙ্গত কারণেই (পরিবারকে সময় দেওয়া) অবসর নিয়েছিলাম। আর যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বিশ্বকাপে আমাকে পাওয়া যাবে কি-না, তখন ফেরার দরজা খোলা রাখতে রাজি হয়েছিলাম। আমাকে ছাড়াই প্রতিযোগিতায় (বিশ্বকাপে) গেছে দল। তাতে কোনো সমস্যা নেই। আমি কারও ওপর রেগে নেই।’
সবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এই অপ্রীতিকর ও অপ্রয়োজনীয় কাহিনীতে আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করার শেষে বলতে চাই, দলকে প্রবলভাবে সমর্থন দেওয়াটা আমি চালিয়ে যেতে যাই। এই খেলাটা আমার জীবনকে একটা সুনির্দিষ্ট রূপ দিয়েছে এবং অনেক চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব প্রদান করেছে ও অবিশ্বাস্য সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।’
Comments