রিফাতের খুনীদের আড়াল করতে শ্বশুরকে চাপ দেওয়া হচ্ছে: মিন্নি

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আজ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলেছেন, “রিফাতকে যারা হত্যা করেছে তারা খুবই শক্তিশালী। বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকতে ও মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তারা এখন আমার শ্বশুরকে চাপ দিচ্ছে।”
রোববার বিকেলে বরগুনা সদর উপজেলার নোয়াকাটা গ্রামে বাবার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। ছবি: স্টার

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আজ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলেছেন, “রিফাতকে যারা হত্যা করেছে তারা খুবই শক্তিশালী। বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকতে ও মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তারা এখন আমার শ্বশুরকে চাপ দিচ্ছে।”

শনিবার রাতে রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ সংবাদ সম্মেলন করে পুত্রবধূর ওপর দোষারোপ ও হত্যা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলার পর আজ এই কথা বললেন মিন্নি।

গতকাল রাত আটটার দিকে রিফাতের বাবা বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মিন্নির গ্রেপ্তার দাবি করেন। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত।

বিকেলে বরগুনা সদর উপজেলার নোয়াকাটা গ্রামে বাবার বাড়িতে লিখিত বক্তব্যে মিন্নি বলেন, যারা বরগুনায় ‘বন্ড ০০৭’ নামে সন্ত্রাসী গ্রুপ সৃষ্টি করিয়েছিলেন, তারা খুবই ক্ষমতাবান ও বিত্তশালী। তারা বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকা ও এই হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য শ্বশুরকে চাপ দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়েছেন।

ঘটনার পর কথিত বন্ধুকযুদ্ধে নিহত নয়ন বন্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, “সে একজন মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে অনেক মামলা ছিল। সে আমাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করত। আমার ছোট ভাই ও বাবাকে হত্যার হুমকি দিত। এ জন্য তার বিরুদ্ধে কখনো মুখ খোলার সাহস পাইনি।” আর শ্বশুর সম্পর্কে বলেন, “আমার শ্বশুর অসুস্থ। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমার স্বামীকে হত্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাকে নিয়ে নেতিবাচক, কুরুচিপূর্ণ নানা পোস্ট এবং এডিট করা ছবি আপলোড করে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু করে। এর মূল উদ্দেশ্য এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা।”

ঘটনার দিন নিজের ভূমিকা সম্পর্কে বলেন, “আমার স্বামীকে কোপানোর সময় আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি তাকে বাঁচাতে। এমনকি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের চেষ্টা করেছি। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় আমিই রিকশায় করে রিফাত শরীফকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই।”

শ্বশুরের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন দাবি করে তিনি বলেন, তিনি স্মৃতি বিভ্রাট সমস্যায় ভূগছেন। আর নয়ন বন্ডের সঙ্গে বিয়ের কথা গোপন করার অভিযোগের ব্যাপারে বলেন যে তার সঙ্গে নয়নের বিয়ে হয়নি। তবে একবার জোর করে সাদা কাগজে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল।

নিহত রিফাতের বাবা গতকাল মিন্নির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, “মিন্নি প্রতিদিন একাই কলেজে যেত। ঘটনার দিনও একা গেছে। পরে ফোন করে রিফাতকে কলেজে ডেকে নেয় মিন্নি। মিন্নি ও তার পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি পুলিশের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত নয়ন বন্ডের সঙ্গে বিয়ের কথা গোপন করেন এবং নয়ন বন্ডকে তালাক না দিয়েই রিফাত শরীফ বিয়ে করেন। বিয়ের পরও মিন্নি নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এমনকি নিয়মিত নয়নদের বাসায় যেতেন।

এদিকে মিন্নির গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বেলা ১১টায় বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। ‘বরগুনার সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধনে অংশ নেন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ।

মানববন্ধনে রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ, চাচা আবদুল আজিজ শরীফ, আবদুস সালাম শরীফ, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং বরগুনা সদর আসনের সাংসদের ছেলে সুনাম দেবনাথ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা মারুফ মৃধা বক্তব্য দেন।

গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বেলা তিনটার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago