শেরপুরে নতুন এলাকা প্লাবিত, শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু

পুরানো ব্রহ্মপুত্র নদে পানিবৃদ্ধির ফলে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরানো ভাঙন অংশ দিয়ে পানি দ্রুতবেগে প্রবেশ করে চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত করছে।
Sherpur map

পুরানো ব্রহ্মপুত্র নদে পানিবৃদ্ধির ফলে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরানো ভাঙন অংশ দিয়ে পানি দ্রুতবেগে প্রবেশ করে চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত করছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা জানান, আজ (১৮ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে ১ মিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের পোড়ার দোকান কজওয়ের (ডাইভারশন) ওপর দিয়ে হাঁটু সমান উচ্চতায় প্রবল বেগে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ অফিসের তথ্যমতে, বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যায় শেরপুরের ৫ উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের ১৭২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ৬৩ হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এতে গত পাঁচদিনে বন্যার পানিতে ডুবে ছয়জনের মৃত্যু হলো।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম জানান, বন্যায় জেলার বিভিন্ন পুকুর, জলাশয় এবং খামারের মাছ ভেসে এবং পাড় ভেঙে প্রায় ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

বন্যার কারণে জেলার ৫২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ওঠায় ছয়দিন ধরে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

সদর উপজেলার নন্দির জোত এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বারি মিয়া জানান, ১৭ জুলাই সন্ধ্যাতেও এলাকায় পানি ছিলো না। হঠাৎ করেই রাত আটটার দিকে হু হু করে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। এমনকি শেরপুর-জামালপুর সড়কের ডাইভারশনের ওপর রাতের মধ্যেই হাঁটু সমান উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হতে থাকে।

এতে ওই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও যেকোনো সময় শেরপুর থেকে জামালপুর হয়ে রাজধানী ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল সাতটার দিকে শেরপুর-জামালপুর মহাসড়কের পোড়ার দোকান কজওয়েতে (ডাইভারশন) প্রায় তিন ফুট উচ্চতায় বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সিএনজি অটোরিকশা চলাচল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু বাস-ট্রাককে ঝুঁকি নিয়ে ডাইভারশনে চলাচল করতে দেখা যায়। সেখানে অনেককে নৌকা দিয়ে ডাইভারশন অংশটুকু পারাপার হতে দেখা যায়।

বন্যার পানিতে অনেকের বীজতলা, সবজি ও পাটের আবাদ তলিয়ে গেছে, বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকেছে। যেকোনো সময় ডাইভারশনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেখানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

Comments