প্রবল স্রোত, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় নৌচলাচল ব্যাহত

পদ্মায় উজানের পানির প্রবল স্রোতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্রোতের প্রতিকূলে চলতে গিয়ে বিকল হচ্ছে ফেরি। দেখা দিয়েছে ফেরি সংকট।
Paturia ferryghat
১৮ জুলাই ২০১৯, পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোত এবং ফেরি সংকটের ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পানি বাড়ার ফলে পন্টুন ডুবে যাচ্ছে। একারণে প্রতিদিনই পন্টুন সরিয়ে উপরে উঠানো হচ্ছে। ছবি: স্টার

পদ্মায় উজানের পানির প্রবল স্রোতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্রোতের প্রতিকূলে চলতে গিয়ে বিকল হচ্ছে ফেরি। দেখা দিয়েছে ফেরি সংকট।

পারাপারে দ্বিগুণ সময় লাগায় পদ্মার দুই পাড়ে আটকে পড়ছে হাজারেরও বেশি পণ্যবোঝাই ট্রাক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ঘাটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীবাহী বাসগুলোকেও। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

এছাড়াও, গত দুই-তিনদিন ধরে পার হতে না পারায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন ট্রাকচালক ও তাদের সহযোগীরা। সেই সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে আটকে থাকা বাস ও ছোট গাড়ির যাত্রীরাও পড়েছেন বিপাকে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক আজমল হোসেন আজ (১৯ জুলাই) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “পাটু্রিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে চলাচলকারী ১৫টির মধ্যে বিকল রয়েছে চারটি ফেরি। বাকি ১১টি ফেরি দিয়ে পারাপার করা হচ্ছে যানবাহন। স্রোতের বিপরীতে চলতে ফেরিগুলোকে নদী পার হতে সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি। এতে ফেরি পারাপারের সংখ্যা কমে গেছে।”

“ইঞ্জিন দুর্বল হওয়ায় কয়েকটি ফেরি স্রোতের বিপরীতে চলতে পারছে না,” উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “বিপুল সংখ্যক গাড়ি পাটুরিয়াঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় আছে। তবে এই সংকট মোকাবেলায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আরো দুটি ফেরি চাওয়া হয়েছে। বিকল ফেরিগুলি পাটুরিয়ায় ভাসমান কারখানায় মেরামতের জন্যে রাখা আছে। সেগুলি দ্রুত ফেরি বহরে যুক্ত হবে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই দুটি ফেরি এই রুটে যুক্ত হতে পারে বলে তিনি আশা করেন।”

এদিকে গতকাল বিকালে দৌলতদিয়া অভিমুখী রো রো ফেরি কেরামত আলী স্রোতের টানে তিন কিলোমিটার ভাটিতে চলে যায়। বারবার স্রোতের বিপরীতে চলার চেষ্টা করলে ফেরিটির ইঞ্জিনের সাইলেন্সার পাইপে আগুন ধরে যায়।

১৮ জুলাই ২০১৯, পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোত এবং ফেরি সংকটের ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পারাপারে দ্বিগুণ সময় লাগায় পদ্মার দুই পাড়ে আটকে পড়ছে হাজারেরও বেশি পণ্যবোঝাই ট্রাক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ঘাটে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রীবাহী বাসগুলোকেও। ছবি: স্টার

বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মহিউদ্দিন রাসেল জানান, ছোট-বড় ২০টি গাড়ি ও যাত্রী নিয়ে গতকাল বিকাল ৫টার দিকে ফেরিটি পাটুরিয়াঘাট থেকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। প্রবল স্রোতের বিপরীতে ফেরিটি দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর ফেরিটি দৌলতদিয়াঘাটের কাছে যায়। কিন্তু, দৌলতদিয়া ঘাটের কাছে নদীতে স্রোত বেশি থাকায় ফেরিটি বারবার চেষ্টা করেও ঘাটে ভিড়তে পারেনি। স্রোতের বিপরীতে দফায় দফায় চেষ্টা করার কারণে এক পর্যায়ে ফেরিটির ইঞ্জিনের সাইলেন্সার পাইপে আগুন ধরে যায়।

ইঞ্জিন দুর্বল থাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি। তবে এতে ফেরির বড় ধরণের কোনো ক্ষতি হয়নি। ফেরিতে থাকা গাড়ি বা যাত্রীদেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। উদ্ধারকারী জাহাজের সহায়তায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর ফেরিটিকে দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ফিরিয়ে আনা হয়। ফেরিতে থাকা গাড়ি ও যাত্রীদের অন্য ফেরিতে নিরাপদে দৌলতদিয়া ঘাটে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

পাটুরিয়াঘাট পুলিশ কন্ট্রোল রুমের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আরাফাত রাসেল বলেন, নদীতে তীব্র স্রোত এবং ফেরি সংকটের ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পানি বাড়ার ফলে পন্টুন ডুবে যাচ্ছে। একারণে প্রতিদিনই পন্টুন সরিয়ে উপরে উঠানো হচ্ছে। ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাটে বিপুল সংখ্যক গাড়ি আটকা পড়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস ও ছোট গাড়ি পার করা হচ্ছে। আটকা পড়ছে অন্তত ছয়শ পণ্যবাহী ট্রাক। পচনশীল, জরুরি পণ্য এবং শিশুখাদ্য বহনকারী ট্রাক ছাড়া অন্য ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।

পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, যানজট এড়াতে এবং যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস ও ছোট গাড়ি পারাপার করা হচ্ছে। ট্রাক টার্মিনালে এবং ঢাকা পাটুরিয়া মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাক আটকে রাখা হয়েছে। গত চারদিন ধরে ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে। এখনও ট্রাক আসছে। ফলে সমস্যা আরো বাড়ছে। একারণে তিনি ঢাকা পাটুরিয়া মহাসড়কে ট্রাক চলাচল না করে তাদের বিকল্প পথ ব্যবহার করতে অনুরোধ করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Saber Hossain Chowdhury minister for environment, forests and climate change

Saber Hossain Chowdhury arrested

The Detective Branch of police arrested former environment minister Saber Hossain Chowdhury from the capital’s Gulshan area today

15m ago