সেই ভুলে অনুশোচনা নেই ধর্মসেনার
এমনই এক ভুল করেছেন কুমার ধর্মসেনা, যার কারণে বিশ্বকাপ শিরোপাটাই হাতছাড়া হয়ে গেছে নিউজিল্যান্ডের। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ওভারথ্রো থেকে ৬ রান পেয়ে বিশ্বকাপটা জিতে নেয় ইংল্যান্ড। আর ধর্মসেনার সে ভুল নিয়ে তখন থেকেই চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। সে ভুল মেনে নিলেও এ নিয়ে কোন অনুশোচনাই নেই এ শ্রীলঙ্কান আম্পায়ারের। উল্টো সেই সিদ্ধান্তে আইসিসির প্রশংসাও পেয়েছেন বলে জানালেন তিনি।
লর্ডসে সেদিন দলকে জেতাতে হলে স্ট্রাইক ধরে রাখার বিকল্প ছিল না বেন স্টোকসের। পাশাপাশি রানও করতে হবে। তখনও দরকার ৪ বলে ৯ রান। চতুর্থ বলটি মিডউইকেটে ঠেলে দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় শেষ মুহূর্তে রানআউট ঠেকাতে ডাইভ দিলেন স্টোকস। আর তার ডাইভের সময় ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় সীমানার বাইরে। দৌড়ে ২ রান ও ওভারথ্রোর ৪ মিলিয়ে ৬ রান দিলেন আম্পায়ার। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী এটা ৫ রান দেওয়া উচিৎ ছিল।
ধর্মসেনার দেওয়া এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন খোদ আইসিসির পাঁচবারের বর্ষসেরা আম্পায়ার ও ক্রিকেট আইন প্রণয়নকারী সংস্থা এমসিসির উপ-কমিটির অন্যতম সদস্য সাইমন টাফেলও। আইনের ১৯.৮ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ওভারথ্রো ফলে বাউন্ডারি হলে, সেই বাউন্ডারি ব্যাটিং করা দলের খাতায় যোগ হবে এবং ব্যাটসম্যানরা যত রান দৌড়ে পূরণ করেছেন সেটাও যোগ হবে। যদি ওই থ্রো বা কাজের সময়ের আগে তারা একে অপরকে অতিক্রম করে ফেলেন। অর্থাৎ দৌড়ে মূলত ১ রান নিয়েছিলেন তারা। সঙ্গে বাউন্ডারি। ফলে ৫ রান পাওয়ার কথা ছিল ইংলিশদের।
সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ধর্মসেনা বলেন, 'টিভি রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেয়া অনেক সহজ। অনেকে অনেককিছু বলতে পারে। রিপ্লে দেখে আমিও মানছি সিদ্ধান্তে আমার ভুল ছিল। কিন্তু আমাদের তো আর আয়েশ করে মাঠে বসে টিভির রিপ্লে দেখার সুযোগ নেই এবং এ নিয়ে আমার কোনো অনুশোচনাও নেই। আমি যে তখন একটা সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি, সেজন্য আইসিসি আমার প্রশংসাও করেছে।’
তবে ভুল যে শুধু ধর্মসেনাই করেছেন তা নয়। ম্যাচের আরেক আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাসও তাকে ছয় রান দিতে বলেছেন বলে জানালেন তিনি, ‘আইন বলছিল, সিদ্ধান্তের জন্য আমরা থার্ড আম্পায়ারের কাছে যেতে পারবো না। সুতরাং, আমি লেগ আম্পায়ারের (ইরাসমাস) সঙ্গে আলোচনা করেছি। যোগাযোগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অন্য আম্পায়াররা কি বলেছেন সেটা শুনেছি। তারাও তখন টিভি রিপ্লে দেখেননি। সুতরাং, সবকিছু ভেবে চিন্তেই আমি আমার সিদ্ধান্ত দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, সে এক রানের সুবাদেই ম্যাচটি সুপার ওভারে গড়ায়। এরপর সুপার ওভারও টাই হলে বেশি বাউন্ডারি মারায় চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। তবে সেই ৬ রানকে ৫ রান দিলে পার্থক্য হতো আরও। সেক্ষেত্রে পঞ্চম বলটি স্টোকস নয়, মোকাবেলা করতেন আদিল রশিদ। আর তাহলে কিউইদের জন্য কাজটি কিছুটা হলেও সহজ হতো।
Comments