গবেষণা বিকৃত করেছেন প্রিয়া সাহা, অভিযোগ অধ্যাপক বারকাতের

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নালিশ করতে গিয়ে তাদের নিরুদ্দেশ হবার যেসব উপাত্ত হাজির করেছেন প্রিয়া সাহা তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত।
অধ্যাপক আবুল বারকাত। স্টার ফাইল ছবি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে নালিশ করতে গিয়ে তাদের নিরুদ্দেশ হবার যেসব উপাত্ত হাজির করেছেন প্রিয়া সাহা তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রিয়া সাহা বলেন, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন। এর পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে অধ্যাপক আবুল বারকাতের গবেষণা থেকে পাওয়া উপাত্তের সঙ্গে ওই সংখ্যা মিলে যায়।

এর প্রতিবাদে আজ এক বিবৃতিতে অধ্যাপক বারকাত বলেন, “প্রিয়া সাহার বক্তব্যের সঙ্গে আমার তথ্য উপাত্তের কোনো মিল নেই। আমার হিসাবে পাঁচ দশকে (১৯৬৪-২০১৩) আনুমানিক ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ নিরুদ্দিষ্ট হয়েছেন। অর্থাৎ আমি কোথাও ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন এমন কথা বলিনি।”

প্রিয়া সাহা আরও বলেছিলেন যে তিনি ২০১১ সালে অধ্যাপক বারকাতের সঙ্গে কাজ করেছিলেন যে কারণে তিনি দেশান্তরি সংখ্যালঘুদের সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা পেয়েছিলেন। তার এমন দাবির ব্যাপারটিও অস্বীকার করেছেন আবুল বারকাত। তিনি বলেছেন, প্রিয়া সাহা কখনই তার গবেষণা সহকারী ছিলেন না।

বারকাত বলেন, “একজন সমাজ গবেষক হিসেবে আমি নিশ্চিত হতে চাই যে প্রিয়া সাহা আমার নাম উল্লেখপূর্বক যেসব বিভ্রান্তিমূলক ও নীতি গর্হিত বক্তব্য দিয়েছেন তিনি তা অতি দ্রুত প্রত্যাহার করে নেবেন।”

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে তাতে প্রিয়া সাহা নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে ট্রাম্পকে বলেন, “বাংলাদেশ প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশেই থাকতে চাই।”

“এখনও সেখানে ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছেন। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমি আমার ঘরবাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং জমিজমাও দখল করেছে। কিন্তু এর কোনো বিচার হয়নি।” কারা জমি ও ঘরবাড়ি দখল করেছে তা ট্রাম্প জানতে চাইলে প্রিয়া সাহা বলেন, “সব সময় রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা মুসলিম মৌলবাদী সংগঠনগুলো এসব দখল করেছে।”

তার এই বক্তব্য নিয়ে দেশে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হলে বক্তব্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন এই সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনকারী। তখন অধ্যাপক আবুল বারকাতের গবেষণার উদ্ধৃতি দেন তিনি।

ইউটিউবে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “২০০১ সালের পরিসংখ্যানে সংখ্যালঘুদের ওপর একটি চ্যাপ্টার রয়েছে। সেনসাস (আদম শুমারি) অনুসারে দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ২৯.৭ শতাংশ। এখন তা কমে ৯.৭ শতাংশ।”

প্রিয়া সাহা বলেন, অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত ২০১১ সালে এক গবেষণা করে দেখিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক হারিয়ে যাচ্ছে।

নিখোঁজ হওয়া বলতে তিনি কী বুঝিয়েছেন? এই প্রশ্নে প্রিয়া সাহা বলেন, “সংখ্যালঘুদের শতকরা ভাগ যদি এখনও একই রকম থাকতো তাহলে বর্তমানে তাদের সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ বেশি হতো। সেটাই আমি বলতে চেয়েছি।”

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago