পাকিস্তানের বিপক্ষে একাদশ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি!
বাংলাদেশের সঙ্গে স্টিভ রোডসের বন্ধন ছিন্ন হয়েছে দলের বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই। সমঝোতার ভিত্তিতে হলেও কেন-কী কারণে ইংলিশ কোচকে মেয়াদ শেষের আগেই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হয়েছে, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ছিল। তবে এতদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কেউ খোলাসা করেননি কারণগুলো। অবশেষে এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপন।
বিশ্বকাপের মধ্যে টাইগার ক্রিকেটাররা লম্বা ছুটি পেয়েছিলেন। তাও আবার ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচের আগে। সেসময় অনুশীলন তো চলেই-নি, খেলোয়াড়রাও যার যার মতো করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। ছুটি দেওয়ার এই সিদ্ধান্তটা পছন্দ হয়নি বিসিবি প্রধানের। আর ছুটির বিষয়টা জানতেনও না তিনি!
বুধবার (২৪ জুলাই) পাপন জানান, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আগে পাঁচ দিনের ছুটি দেওয়া...বিশ্রাম দিতেই পারে। বিশ্রাম আর ছুটি দুই জিনিস। বিশ্বকাপে আমাদের সামনে তখন ভারত-পাকিস্তানের মতো শক্ত প্রতিপক্ষ। অথচ আপনার খেলোয়াড়েরা ইউরোপে বেড়াতে যাচ্ছে, এটা হতে পারে না। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। এক-দুই দিনের বিশ্রাম হতে পারত। তাদের ভাবনায় ক্রিকেটের বাইরে আর তো কিছু থাকার কথা না। এতে যে মনোযোগে ভীষণ বিঘ্ন ঘটে। আর জানিই না পুরো দল ছুটিতে! এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। এটা একেবারেই অস্বাভাবিক।’
ইংল্যান্ডে তখন বোর্ড সভাপতি ছিলেন না। তবে বিসিবির দুই পরিচালক আকরাম খান ও খালেদ মাহমুদ সুজন দলের সঙ্গে ছিলেন। তবে ছুটি দেওয়ার বিষয়টা তাদেরকেও না-কি জানানো হয়নি! পাপন যোগ করেন, ‘আকরাম-সুজন ওখানে ছিল। ওরাও জানে না। (ছুটি) হয়ে যাওয়ার পর জানতে পারে। তাহলে তো লাভ হলো না।’
একাদশ গঠনের ব্যাপারে রোডসের কিছু সিদ্ধান্তও স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি বোর্ড সভাপতি। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচের আগে অনুশীলনে হাতে চোট পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহীম। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা তো গোটা আসরেই ছিলেন চোটগ্রস্ত। এই দুজনকে বিশ্রাম দেওয়ার কথা ছিল পাকিস্তান ম্যাচে। পাপনও তাই জানতেন, সেভাবেই আঁটা হয়েছিল কৌশল। কিন্তু ম্যাচের দিন বাংলাদেশের একাদশে মাশরাফি-মুশফিককে দেখে যারপরনাই বিস্মিত হয়েছিলেন তিনি। রোডসের প্রতি তার অসন্তুষ্টির এটাও একটা বড় কারণ।
পাপন বলেন, ‘পাকিস্তান ম্যাচের আগের দিন রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত আমি দলের সঙ্গেই ছিলাম। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন। গিয়ে দেখলাম মুশফিকের হাত স্লিংয়ে ঝোলানো। ও বলছে, হাত নাড়াতেই পারছে না। কাজেই ওই ম্যাচে মুশফিক একাদশে ছিল না। মাশরাফি তো আগের দিন থেকেই নাই, অনুশীলন করেনি, পাকিস্তানের বিপক্ষে দলের পরিকল্পনা সাজানোর মিটিংয়েও আসেনি। ফলে মাশরাফিও ওই ম্যাচে ছিল না। তো আমরা সেদিন একটা একাদশ ঠিক করলাম, কোচ ছিল, সবাই ছিল। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার যে, পরের দিন গিয়ে দেখি অন্য দল খেলছে। এইগুলা তো আগে কখনও হয়নি। কাজেই অবশ্যই সমস্যা ছিল।’
Comments