‘বাংলার নানি’-কে দেখে মুগ্ধ বিশ্বখ্যাত সাইক্লিস্ট রশিদ আলী

বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সাইক্লিস্ট রশিদ আলী দেখে গেলেন ‘বাংলার নানি’-কে। গতকাল (২৮ জুলাই) বিকালে তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম হাজীগঞ্জ দুলালীতে ছুটে আসনে গরীবের ডাক্তার ‘বাংলার নানি’ খ্যাত জহিরন বেওয়ার বাড়িতে। রশিদ আলী গ্রামের প্রিয় মুখ ‘বাংলার নানি’র হাতে তুলে দেন নুতন একটি বাইসাইকেল ও কিছু প্রয়োজনীয় মেডিকেল জিনিসপত্র। আনন্দিত ও খুশি হন নানি।
Lalmonirhat banglar nani
২৮ জুলাই ২০১৯, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম হাজীগঞ্জ দুলালীতে গরীবের ডাক্তার ‘বাংলার নানি’ খ্যাত জহিরন বেওয়ার সঙ্গে রশিদ আলী বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সাইক্লিস্ট রশিদ আলী। ছবি: স্টার

বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সাইক্লিস্ট রশিদ আলী দেখে গেলেন ‘বাংলার নানি’-কে। গতকাল (২৮ জুলাই) বিকালে তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম হাজীগঞ্জ দুলালীতে ছুটে আসনে গরীবের ডাক্তার ‘বাংলার নানি’ খ্যাত জহিরন বেওয়ার বাড়িতে। রশিদ আলী গ্রামের প্রিয় মুখ ‘বাংলার নানি’র হাতে তুলে দেন নুতন একটি বাইসাইকেল ও কিছু প্রয়োজনীয় মেডিকেল জিনিসপত্র। আনন্দিত ও খুশি হন নানি।

লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘মুসলিম চ্যারিটি’-র কমিউনিটি এনগেজমেন্ট ম্যানেজার রশিদ আলী আনন্দ আলাচারিতায় মেতে উঠেন বাংলার নানির সঙ্গে। দুজনের মধ্যে কথা হয় বাইসাইকেল চালানোর উপকারিতা নিয়েও। দুজনে এক সঙ্গে গ্রামবাংলার মেঠো পথে চালিয়ে যান বাইসাইকেল। আনন্দে মুখরিত হয় সবুজে ঘেরা গ্রামটি।

”বাংলাদেশের নিউজপেপার দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত সংবাদটি পড়ে আমি ‘বাংলার নানি’ জহিরন বেওয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। তখনই ইচ্ছে হয় বাংলাদেশে গেলে নানির সাথে দেখা করবো। তার সঙ্গে দেখা করে আজ আমার স্বপ্ন পুরণ হলো। সত্যিই আমি গর্বিত বাংলাদেশে এরকম একজন মানুষের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে পেরে,” এমনটি জানালেন বিশ্বখ্যাত এই সাইক্লিস্ট।

“বাংলার নানি আমাকে বলছিলেন নিয়মিত বাইসাইকেল চালানোর জন্যে তার শরীরে কোন অসুখ-বিসুখ নেই, এটা সত্যি। আমারও শরীরে কোনো অসুখ-বিসুখ নেই। কারণ, আমিও নিয়মিত সাইকেল চালাই,” এমনটি বলে তিনি প্রত্যেক মানুষের প্রতি বাইসাইকেল চালানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে ও সাইকেল চালাতে অনুরোধ জানান।

“এটা আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি। এখন দেশ-বিদেশের অনেক বিখ্যাত মানুষ আসছেন আমাকে দেখার জন্য। এটা শুধু সম্ভব হয়েছে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার জন্য। আমি খুশি ও আনন্দিত,” এমনটি বললেন বল্লেন ‘বাংলার নানি’ খ্যাত জহিরন বেওয়া।

“আমি সাইকেল চালিয়ে গ্রামের বাড়ি-বাড়ি ঘুড়ে বেড়াই গ্রামের মানুষ বিশেষ করে গরিব মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে। অনেক সময় ওষধও বিনা পয়সায় দিয়ে দেই। ভালো লাগে,” জহিরন জানালেন।

“দ্য ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান আমাকে সহযোগিতা করেছেন এবং এসব সহযোগিতা জমা রেখেছি যা দিয়ে ভবিষ্যতে বাড়ির পাশে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করবো। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমার এ স্বপ্ন পূরণ করতে কাজ শুরু করে দিবো,” জহিরন বেওয়ার প্রত্যাশা।

বিশ্বখ্যাত সাইক্লিস্ট রশিদ আলীর সাথে ছিলেন মুসলিম চ্যারিটির হেড অব ফান্ড রাইজিং মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ ও বাংলাদেশ কো-অর্ডিনেটর ফজলুল করিম।

“দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় সংবাদের সুবাদে আমার ভাগ্য হলো বাংলাদেশের নিভৃত গ্রামে এক মহৎ মানুষের সাথে দেখা করার। এটা সত্যিই অবাক করার বিষয় যে ৯০ বছরের বেশি বয়সের একজন নারী এখনো সাইকেল চালিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুড়ে গরিব, অসহায় মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন,” এমনটি জানিয়ে মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জানালেন জহিরন বেওয়ার এই মহৎ কাজের ধারাবাহিকতা রাখতে মুসলিম চ্যারিটি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে।

এস দিলীপ রায়, দ্য ডেইলি স্টারের লালমনিরহাট সংবাদদাতা

Comments