স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

সাতক্ষীরায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ (২৯ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। এ সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
Satkhira Conviction
২৯ জুলাই ২০১৯, সাতক্ষীরায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামী বিজন মণ্ডলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ছবি: স্টার

সাতক্ষীরায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ (২৯ জুলাই) দুপুরে সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এ আদেশ দেন। এ সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামির নাম বিজন মণ্ডল (৪৭)। তিনি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গোয়ালডাঙা গ্রামের মনোহর মণ্ডলের ছেলে।

মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে আশাশুনি উপজেলার ফকরাবাদ গ্রামের অনিল কৃষ্ণ মণ্ডলের মেয়ে কঙ্কাবতী মণ্ডলের (৪০) সঙ্গে একই উপজেলার গোয়ালডাঙা গ্রামের মনোহর মণ্ডলের ছেলে বিজন মণ্ডলের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর প্রতিবেশী একজনের স্ত্রীর সঙ্গে বিজন মণ্ডল পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। প্রতিবাদ করায় কঙ্কাবতীর সঙ্গে বিজনের প্রায়ই বিরোধ হতো। এরই জের ধরে ২০১৭ সালের ১০ জুন রাত ১১টার দিকে বিজন তার স্ত্রীর মুখমণ্ডল ও নাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ায় কঙ্কাবতীর গলায় নাইলনের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন বিজন। পরে কঙ্কাবতীর লাশ বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে বাথরুমের সামনে আম গাছে ঝুলিয়ে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন বিজন ও তার পরিবারের সদস্যরা। 

সেখান থেকে আরও জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ জুন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে লোকমুখে খবর পেয়ে ১১ জুন সকালে বিজন মণ্ডলদের গোয়ালডাঙা গ্রামের বাড়িতে যান অনিল কৃষ্ণ মণ্ডলসহ স্বজনরা। সেখানে গিয়ে তারা কঙ্কাবতীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। জিজ্ঞাসা করায় গ্রামবাসীর সামনে বিজন তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা অনিল কৃষ্ণ মণ্ডল বাদী হয়ে ওই বছরের ১১ জুন রাতে জামাতা বিজন কুমার মণ্ডলসহ অজ্ঞাতনামা তিন জনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

১২ জুন বিজন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. জাহিদ হোসেনের কাছে পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার কারণে স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এজাহারভুক্ত আসামি বিজন মণ্ডলের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা শেষে আসামি বিজন মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে মামলার বাদী অনিল কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, এ রায়ে তিনি খুশী। উচ্চ আদালতে যেনো এ রায় বহাল থাকে, সেজন্য তিনি বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িতদের সহায়তা কামনা করেছেন।

তবে, আসামির মেয়ে বিশাখা মণ্ডল ও ছেলে ভ্যান চালক জগন্নাথ মণ্ডলের দাবি, তাদের বাবা নির্দোষ।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago