আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের মানসিকতা আমাদের নেই, সেটা করিও না: প্রধানমন্ত্রী

PM BSS
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে কোনো ধরনের নির্যাতনের মানসিকতা তার সরকারের নেই এবং সরকার এ ধরনের কাজ করে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সত্যি কথা বলতে কি, এ ধরনের কোন মানসিকতা আমাদের নেই এবং আমরা সেটা করিও না।”

আজ মঙ্গলবার বিবিসি’তে প্রচারিত এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সিনিয়র সাংবাদিক মানসী বড়ুয়া এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, গণতন্ত্র এবং ঋণ খেলাপি হওয়ার সংস্কৃতি সম্পর্কেও কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানসী বড়ুয়া প্রশ্ন রাখেন, বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের ইতিহাস অনেক দিনের। এটি কোন বিশেষ সরকারের আমলে যে ঘটেছে তা নয়। কিন্তু বর্তমান সরকার এ ধরনের নির্যাতন বন্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে?

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ঘটনাচক্রে কিছু (দু-একটি) ঘটনা ঘটতে পারে। বরং আপনি যদি গত ১০ বছরে আমাদের অবস্থানটা দেখেন- আমরা কিন্তু অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পেরেছি।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আপনি আমার নিজের কথাটাই চিন্তা করুন- যখন আমি আমার বাবা-মা-ভাইদের সব হারালাম, খুনিদেরকে বিচার না করে ইনডেমনিটি দেওয়া হলো, অর্থাৎ আপনি অপরাধকে প্রশ্রয় দিলেন।”

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে বিচার পেতে ৩৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, “যে দেশে অপরাধকে স্বীকৃতি দিয়েই একটা সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয় সেই দেশে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে যায়।”

“তবে আমরা যেকোনো অপরাধের জন্য কঠোর আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন ওইভাবে কখনই হেফাজতে মৃত্যু হয় না বা নির্যাতনও যে খুব একটা করা হয়, তাও নয়,” যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে অপরাধীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহের যে কতগুলো নিয়ম রয়েছে-সেজন্য আমরা আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসি। তারা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বহুদেশে থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক স্বীকৃত পদ্ধতিতেই অপরাধীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর বাইরে কোন কিছুই করা হয় না, এটা হলো বাস্তবতা।”

শেখ হাসিনা বলেন, দেশ স্বাধীন হবার সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হলো। এই কালচারটাই চলে এলো, এটাই প্রচলিত হলো।

তিনি বলেন, “সে সময় দেশে সামরিক শাসন বলবৎ ছিল (কখনও সরাসরি আবার কখনও নাম পরিবর্তন করে) যেখানে ক্ষমতাটা ক্যান্টনমেন্টের ভেতরেই ছিল।”

“সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে দেশকে একটু সুষ্ঠু ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা একটা কঠিন দায়িত্ব, এই কঠিন দায়িত্বটা আমরা পালন করে যাচ্ছি,” বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, “কাজেই এখন যারা সমালোচনা করছে তাদেরকে যদি আপনারা সুনির্দিষ্টভাবে জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে, আমার মনে হয়, এ সম্পর্কে তারা খুব বেশি তথ্য দিতে পারবে না।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা শ্রেণি আছে যারা দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারটা বেশি করে চালাচ্ছে। দেশে অসাংবিধানিক এবং অস্বাভাবিক সরকার বা ‘মার্শাল ল’ থাকলেই তাদের খুব লাভ হয়।”

সরকার প্রধান বলেন, “তারা সারাক্ষণ আমাদের নানা খুঁটিনাটি দোষত্রুটি খুঁজে বের করতে লেগেই আছে। আমার কথা হলো আমার দেশের মানুষ স্বস্তিতে আছে কি না, তারা ভালো আছে কি না।”

তিনি বলেন, “আমি জানি, জেনেভাতে এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং আমাদের আইন মন্ত্রীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং অন্যান্য প্রতিনিধিরাও সেখানে ছিলেন এবং এর যথাযথ উত্তর তারা দিয়ে এসেছেন।”

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council set to hold emergency meeting this evening

Sources from the CA office confirmed that the meeting will take place at the State Guest House, Jamuna

55m ago