মানিকগঞ্জে ডেঙ্গু পরীক্ষার কিট ও স্যালাইন সঙ্কট কাটেনি
মানিকগঞ্জে ডেঙ্গু পরীক্ষার এনএসওয়ান কিট ও স্যালাইন সঙ্কট এখনও কাটেনি। দেশব্যাপী চলমান এই সঙ্কট মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ১০ লাখ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনুকূলে ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও আইনি জটিলতার কারণে এখনই এই টাকা খরচ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল আওয়াল জানান, হাসপাতালের অনুকূলে বরাদ্দকৃত টাকায় কোনো কিছু ক্রয়ের ক্ষেত্রে পিপিআর এর শর্ত অনুযায়ী পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান এবং ঠিকাদার নিয়োগে কমপক্ষে একমাস সময় লাগে। এছাড়া কোটেশনের মাধ্যমে তিনটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দর যাচাই করে নিম্নদরদাতাকে দেওয়ার বিধান আছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারেও কিট ও স্যালাইন অপ্রতুল থাকায় সেটিও করা যাচ্ছে না।
তিনি জানান, এসব সীমাবদ্ধতা মাথায় রেখে তারা বিভিন্ন উপায়ে নানা স্থান থেকে কিট সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই সঙ্কট কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু সমাধান পেতে সময় লাগছে।
জেলা হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের জন্য শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তিনশ পিস নরমাল স্যালাইন আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ডা. আব্দুল আওয়াল বলেন, “প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শত শত লোক এই হাসপাতাল এবং কর্নেল মালেক সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভিড় করছেন। সাধারণ জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়েও ডেঙ্গু শনাক্ত করতে আসছেন অনেকে। একারণেই বেশি সমস্যা হচ্ছে।”
তিনি ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
উল্লেখ্য, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলার কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই এনএসওয়ান কিট সরবরাহ না থাকায় ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে জেলা শহরে এসে রোগ নির্ণয় করতে হচ্ছে এসব উপজেলার ৬৫টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ব্যক্তিদের। এতে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন তারা।
জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট আব্দুস সালাম জানান, যে কটি কিট আছে তা দিয়ে আজ (৭ আগস্ট) পর্যন্ত চালানো যাবে। কিন্তু, আগামীকালের জন্য কোনো কিট নেই। জরুরিভিত্তিতে যদি কিট না পাওয়া যায় তাহলে সমস্যায় পড়বেন তারা।
এদিকে, কর্নেল মালেক সরকারি মেডিক্যাল কলেজে প্রতিদিন গড়ে ১২০ জন রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হচ্ছে।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগী জেলা হাসপাতালে এবং কর্নেল মালেক সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভিড় করছেন। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত মানিকগঞ্জে ২৭৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। এদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। আজ সকাল পর্যন্ত ১২৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন এবং ২২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্যরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
Comments