নিখোঁজের ৪ দিন পর মরদেহের টুকরো মিললো ওয়ারড্রবে
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক গৃহবধূ নিখোঁজের চারদিন পর নিজের ঘরের ওয়ারড্রবের ড্রয়ারে মাথাবিহীন মরদেহের সন্ধান মিলেছে। মরদেহটি টুকরো অবস্থায় পাঁচটি পলিথিনে মোড়ানো ছিলো।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত সুমি আক্তার (২২) নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার দেবকান্দা গ্রামের নিজাম উদ্দিনের মেয়ে ও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বড়বাড়ি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে মামুনের স্ত্রী।
গত দেড় বছর আগে তাদের মধ্যে বিয়ে হয়। এটি উভয়েরই দ্বিতীয় বিয়ে।
সুমি স্থানীয় গিলারচালা এলাকার সাবলাইন গ্রিনটেক গার্মেন্টস লিমিটেডের শ্রমিক ও তার স্বামী মামুন পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান। তারা গিলারচালা গ্রামের সফিকুল ইসলাম বিপুলের বাড়ির ভাড়াটিয়া। দেড় মাস আগে ওই বাড়িতে তারা ভাড়ায় উঠেন।
গত ১২ আগস্ট রাত ৯টার দিকে শ্রীপুর থানা পুলিশ পলিথিনে মোড়ানো মরদেহের অংশবিশেষ উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী মামুন পলাতক রয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিখোঁজ সুমি আক্তারের ছোট বোন বৃষ্টি আক্তার।
বৃষ্টি আক্তার বলেন, গত ৮ আগস্ট কারখানা ছুটির পর ওই রাতেই নেত্রকোনা বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা ছিলো সুমির। খোঁজ নিতে ৯ আগস্ট স্বামী মামুনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান সুমি বাড়ির পথে রওয়ানা হয়েছে।
পরদিনও বাড়িতে না যাওয়ায় বৃষ্টি আক্তার নিজে তাদের ভাড়া বাসায় খোঁজ নিতে আসেন। সেখানে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকী, মামুনের মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
পরে ১২ আগস্ট সন্ধ্যায় আবার খোঁজ নিতে এসে ঘর থেকে পঁচা গন্ধ পেয়ে আশপাশের লোকদের ডেকে আনেন বৃষ্টি। এতে স্থানীয় লোকদের সন্দেহ হলে তালা ভেঙ্গে তারা ঘরে ঢুকেন। পরে ওয়ারড্রবের ড্রয়ার খুলে পাঁচটি পলিথিন ব্যাগের সন্ধান পান।
বৃষ্টি আক্তারের দাবী, তার বোন সুমি আক্তারকে স্বামী মামুন হত্যা করার পর মরদেহ টুকরো টুকরো করে পালিয়েছে।
শ্রীপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) রাজীব কুমার সাহা জানান, নিহত সুমি আক্তারের স্বজনদের খবরে পলিথিনগুলো উদ্ধার করা হয়। পরিচিতি নির্ণয়ের জন্য সেগুলো গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের বাবা মামুনকে চিহ্নিত এবং কয়েকজনকে অজ্ঞাত হিসেবে অভিযুক্ত করে ১৩ আগস্ট শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, মরদেহটি একজন নারীর। তার পরিচিতি নির্ণয়ের প্রক্রিয়া চলছে।
Comments