গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশা, দেখার কেউ নেই

Lalmonirhat road vulnerable
লালমনিরহাট রেলস্টেশনের সামনের সড়কটির বেহাল দশা। ছবি: স্টার

পায়ে হেঁটে চলাচল সম্ভব নয়। যানবাহনে চলাচল করতে হয়। তারপরও যানবাহন যেতে চায় না লক্কর-ঝক্কর সড়কটি দিয়ে। আর একটু বৃষ্টি হলে লালমনিরহাট শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পরিণত হয় অবহেলিত কোনো মফস্বলের সড়কে। ইচ্ছে করলে চাষ দিয়ে ধান রোপণও করে ফেলা যায়।

লালমনিরহাট শহরের স্টেশন রোড। প্রায় ৪০০ মিটার এই সড়কের বেহাল দশা গেল ৬-৭ বছর ধরে। এই সড়কের পাশে রয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস ও জেলার কেন্দ্রীয় মসজিদ। স্টেশনে ট্রেন ধরতে প্রতিদিন এই সড়কে সহস্রাধিক মানুষ যাতায়াত করে।

সড়কটির মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রয়োজন না থাকায় রেল কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে বহু বছর আগে। রেলের সড়ক এই অজুহাতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষও দায়িত্ব নিতে পিছিয়ে যাচ্ছে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, যেহেতু সড়কটি রেলওয়ে অপারেশনাল এলাকার মধ্যে নেই। তাছাড়া সড়কের পাশে রেলওয়ে স্টাফ কোয়ার্টারগুলোতে কোন কর্মচারী বসবাস করেন না, তাই রেল কর্তৃপক্ষ সড়কটির জন্য কোনো খরচ করতে আগ্রহী নয়।

“শহরবাসীর স্বার্থে পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কটি সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করতে পারে। আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত পত্র দিলে অবশ্যই সম্মতি দেওয়া হবে,” জানালেন তিনি।

“ট্রেন ধরতে যাত্রীরা কীভাবে আসবেন সেটা তাদের ব্যাপার, আসলে ট্রেন তো কারও জন্য অপেক্ষা করে না,” বলেন রেলের এই প্রকৌশলী।

লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু বলেন, “সড়কটি পৌরসভার হলে এতো অবহেলায় পড়ে থাকতো না। রেলওয়ে জায়গার ওপর সড়ক অথবা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ জটিলতার সৃষ্টি করে।”

শহরের অন্য স্থানে রেলওয়ে জায়গার ওপর বেশ কয়েকটি সড়ক পৌর কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করেছেন এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন, “এসব সড়কের প্রস্তাবনা অনেক আগেই নেওয়া হয়েছিলো, তাই করা হয়েছে।”

“আমরা রেলওয়ের কাছে পত্র লিখবো এ ব্যাপারে। যদি রেলের কোনো আপত্তি না থাকে, তাহলে সড়কটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে পৌর কর্তৃপক্ষ,” বলেন তিনি।

Lalmonirhat road vulnerable
বৃষ্টি হলে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ছবি: স্টার

লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আতিকুল ইসলাম বলেন, “সড়কটির দুর্দশা ও বেহাল অবস্থার কারণে সমস্যায় পড়তে হয় নামায পড়তে আসা মুসল্লিদের। আর একটু বৃষ্টি হলে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হয়।”

মেয়রকে একাধিকবার সড়কটি মেরামত করার অনুরোধ জানানো হলেও মেলেনি কোনো সাড়া।

স্টেশন রোড এলাকার আক্তার হোসেন (৬৫) বলেন, “এটা পৌর মেয়রের অবজ্ঞা মাত্র। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন রোডটি না করে এর একটু পশ্চিমে অযথা রেলের জায়গার ওপর একটি সড়ক করেছেন, যেটির কোনো ব্যবহার নেই।”

বছরের পর বছর বেহাল দশায় থাকা স্টেশন সড়কটি নির্মাণের আবেদন করেছি কিন্তু সাড়া মেলেনি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। তিনি এমনটি জানিয়ে বলেন, “পৌর কর্তৃপক্ষ রেলের জায়গায় সড়ক নির্মাণ করছেন, আবার রেলের জায়গা কারণ দেখিয়ে স্টেশন সড়কটি নির্মাণে দায়িত্ব অবহেলা করছেন।”

“খানাখন্দে ভরে যাওয়া সড়কটি দিয়ে আমরা চলাচল করতে পারি না। বৃষ্টি হলে এই সড়কে যাওয়া ছেড়ে দেই। জানি না এই সড়কটি নির্মাণে মেয়রের বোধোদয় হবে কী না।”, বলেন নুর হোসেন (৫৪) নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি।

রিকশাচালক নাজির হোসেন (৩৩) জানান, তারা বরাবরই বড় মসজিদের সামনে দিয়ে স্টেশন সড়কটি বর্জন করে চলেন।

“কোনো গর্ভবতী নারীকে এই সড়ক দিয়ে স্টেশনে নেওয়ার চেষ্টা করা হলে বিপদ নেমে আসবে নিশ্চিত,” বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

12m ago