কী প্রেম পুতিনের সাথে?
আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সখ্যতার বিষয়টি আবারো আলোচনায় এসেছে। তবে সেই আলোচনা মার্কিন মুলুকে নয়, উঠেছে জি-৭ বিশ্বনেতাদের মঞ্চে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ‘অদ্ভুত সম্পর্ক’ আমেরিকান মূল্যবোধকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করে দিচ্ছে।
ট্রাম্প চাচ্ছেন শিল্পোন্নত সাতটি দেশের সংগঠন গ্রুপ সেভেন বা জি-৭ সদস্য দেশগুলোর প্রধানদের পরবর্তী শীর্ষ সম্মেলন মিয়ামিতে তার গলফ অবকাশ কেন্দ্রে আয়োজন করতে। শুধু তাই নয়, তিনি চান সেই সম্মেলনে পুতিনকে আমন্ত্রণ জানাতে। কিন্তু, তার সেই ‘চাওয়ায়’ বাধ সেধেছেন জি-৭ এর বাকি নেতারা।
পুতিনকে জি-৭ এ নেওয়ার বিষয়ে অপর সদস্য দেশ তথা- যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান ও কানাডার রয়েছে বিশেষ আপত্তি। বিশেষ করে, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির একনায়কোচিত আচরণ ও ইউক্রেনে রুশ সেনাদের হস্তক্ষেপ নিয়ে সংগঠনটির চলতি অধিবেশনে ট্রাম্পের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল এবং ব্রিটেনের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানায়, গত ২৪ আগস্ট ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত জি-৭ এর তিনদিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনের নৈশভোজসহ বিভিন্ন আলোচনা পর্বে পুতিনকে নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন জি-৭ এর অন্য সদস্যরা।
সম্মেলনের আয়োজন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক চান কিন্তু, ট্রাম্প যেভাবে পুতিনকে নিয়ে ভাবছেন ততোটা নয়। দলীয় কোন্দলে পদত্যাগ করা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কন্তে মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে মৌন সমর্থন দিলেও এ বিষয়ে অনেকটাই নীরব জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তবে মনে মনে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেন বলে ধরে নিচ্ছেন অনেকে।
এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে নিয়ে জি-৭ এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ভোটাভুটির কথাও ভেবেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু, জেতার সম্ভাবনা নেই দেখে সে পথে আর পা বাড়াননি তিনি। পরে, সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “অনেকেই আমার মতের সঙ্গে একমত আবার অনেকে একমত নন। তাই ভাবছি, বিষয়টি যেভাবে চলে চলুক।”
বিশ্লেষকদের মত, ট্রাম্প যদি জি-৭ এর অন্য সদস্যদের অগ্রাহ্য করে পরবর্তী সম্মেলনের আয়োজক হিসেবে পুতিনকে আমন্ত্রণ জানান তাহলে আমেরিকার পরবর্তী নির্বাচনে প্রশ্ন উঠবে ‘কী প্রেম পুতিনের সাথে’। আর এর জবাব দিতে হবে ভোটারদের কাছে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ট্রাম্পকে মুখোমুখি হতে হবে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর।
Comments