প্রতিটি গুমের তদন্ত ও বিচার একদিন হবেই: বিএনপি
আওয়ামী লীগের দশ বছরের শাসনামলে দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাসহ সারাদেশে ১ হাজার ২০৯ জন মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, “২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে গুম হওয়া মানুষের সংখ্যা ১ হাজার ২০৯ জন। যার ভিতর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুমের সংখ্যা ৭৮১ জন।”
আজ (৩০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও তাদের মদতদানকারীরাও বিচারের আওতার বাইরে থাকবে না। প্রতিটি গুমের তদন্ত ও বিচার একদিন হবেই।”
৩০ আগস্ট হলো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস’। ইংরেজিতে এই দিবসের পুরো নাম ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ অর্থাৎ গুমের শিকার ব্যক্তিবর্গের আন্তর্জাতিক দিবস। সাধারণ পরিষদ ২০১১ সাল থেকে এই দিবসটি পালনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে সব দেশকে।
রিজভী বলেন, “এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবার, স্বজন বা প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন যে, বিশেষ বাহিনী-র্যাব, ডিবি পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের পরিচয়ে সাদা পোশাকে ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের তুলে নেওয়া হচ্ছে। বেশীরভাগ গুমের জন্য সন্দেহ করা হয়-পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও র্যাবকে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে গুমের ধারাবাহিকতা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা শুরু হয়েছিল ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালে। গণতন্ত্রের অকাল প্রয়াণ ঘটানোর জন্যই গুমের মতো অমানবিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ক্ষমতাসীনরা।”
গুম একটি ভয়ঙ্কর মানবতাবিরোধী অপরাধ উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “গুমকে ব্যবহার করা হচ্ছে সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য নিয়ে। বিরোধী দল ও মতকে নির্মূল করে রাষ্ট্র-সমাজে একমাত্রিকতা, কর্তৃত্ববাদী ও একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে দীর্ঘস্থায়ী করাই এর মূল লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশেও গুমের ইতিহাস সৃষ্টি করেছে আওয়ামী সরকার। রাষ্ট্রীয় মদদ ছাড়া কাউকে গুম করা অসম্ভব। গুম ও ক্রসফায়ারের মতো গুরুতর অপরাধের ঘটনাগুলো সমাজে, সংবাদমাধ্যমে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও তাতে সরকারের টনক নড়ে না। এতেই বোঝা যায় এসব গুমের হোতা কারা।”
Comments