কারগিল যুদ্ধের সৈনিকও ভারতীয় নাগরিক নন!

দুই দশক আগে কারগিল যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করেছিলেন মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (৫২)। অবসরের পর আসাম পুলিশের সীমান্ত শাখায় এএসআই হিসেবে সন্দেহভাজন নাগরিক ও অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত, আটক, বিতাড়নের মতো কাজ করতেন তিনি।
sanaullah
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

দুই দশক আগে কারগিল যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হয়ে লড়াই করেছিলেন মোহাম্মদ সানাউল্লাহ (৫২)। অবসরের পর আসাম পুলিশের সীমান্ত শাখায় এএসআই হিসেবে সন্দেহভাজন নাগরিক ও অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত, আটক, বিতাড়নের মতো কাজ করতেন তিনি।

দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এ বছরের শুরুতে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাকে বিদেশি ঘোষণা করার পর ভারতের সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। আজ (৩১ আগস্ট) প্রকাশিত চূড়ান্ত নাগরিক তালিকাতেও ঠাঁই হয়নি তার।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এই জুনিয়র কমিশনড অফিসারের (জেসিও) দুই মেয়ে ও এক ছেলের নাম চূড়ান্ত তালিকায় না থাকলেও, নাম রয়েছে তার স্ত্রীর।

কারগিল যুদ্ধে অবদানের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত মোহাম্মদ সানাউল্লাহকে কামরূপের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০৮ সালে ‘সন্দেহজনক’ ভোটার হিসেবে তার নাম তালিকাভুক্তির পর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে তার নামে মামলা হয়। এরপর মে মাসে তাকে বন্দীশিবিরে পাঠানো হয়। পরে গুয়াহাটি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি। তবে হাইকোর্ট ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায় খারিজ করে দেয়নি। আদালত জানায়, তার আবেদনের ওপর শুনানি চলবে।

মোহাম্মদ সানাউল্লাহ ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায় গুয়াহাটি হাইকোর্টে বিচারাধীন থাকায় চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির কোনো সুযোগ ছিলো না। এনআরসির ধারা অনুসারে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত কোনো বিদেশি ও তার সন্তানরা চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাবেন না।

অপরদিকে এনডিটিভি জানিয়েছে, গত প্রায় এক বছর ধরে আসামের নাগরিক তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য লড়াইয়ের পর এখন বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন হীতেশ চৌধুরী ও তার পরিবার।

গুয়াহাটির অদূরে বোকো জেলার চামারিয়া শহরে নিজের পরিবারের সঙ্গে বাস করেন ৪৫ বছর বয়সী এই মানুষটি। গত বছর, এনআরসির প্রাথমিক খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পরে তার নামটি বাদ পড়ে।

হীতেশের স্ত্রী জগৎ তারা চৌধুরীর নাম এনআরসির প্রাথমিক খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পরে আবার তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়।

উদ্বিগ্ন এই নারী বলেন, “আমরা প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছি। যদি আমাদের বিদেশি ঘোষণা করা হয় তবে আমাদের বাচ্চারা কী করবে?”

হীতেশ জানিয়েছেন যে, যদি তাদের নাম নাগরিক তালিকায় না থাকে তবে ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, “আমি প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছি। আমার কাছে সমস্ত বৈধ কাগজপত্র রয়েছে অথচ আমি তালিকায় নেই। এর থেকে কোনো উপায়ে রেহাই পাবো, কীভাবে আমাদের নাম উঠবে তা আমি সত্যিই জানি না। আমাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে? আমি আর এই নাগরিক তালিকায় বিশ্বাস রাখতে পারছি না।”

আরও পড়ুন:

এনআরসি কোনো বাংলাদেশিকে বহিষ্কারের কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল বা ফাইনাল নয়: আসামের মন্ত্রী

আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ ১৯ লাখ

ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ’-‘বাংলাদেশি’ ইস্যু!

Not just India's 'internal' issue

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago