কুশিয়ারা নদীর সাড়ে ৩ মণ ওজনের বাঘাইড়
১৫০ কেজি অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিন মণ ওজনের বাঘাইড় মাছটি সিলেটের লালবাজারে এনেছেন একদল জেলে। বিক্রির জন্যে ‘আগে আসলে আগে পাবেন, পরে আসলে পস্তাবেন’- এভাবেই নগরীতে মাইকিং করা হয়।
গতকাল (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় লালবাজারে গিয়ে দেখা যায়, দেখতে বাঘের মতো ডোরা কাটা মাছটি দেখানোর জন্য রাখা হয়েছে। সিলেটের স্থানীয় ভাষায় ‘বাঘ মাছ’ নামে পরিচিত সুস্বাদু এই মাছটি দেখতে ভিড় করছেন মানুষ। কেউ আবার ছবিও তুলছেন।
আনোয়ার মিয়া নামে এক মাছ ব্যবসায়ী খাতায় ক্রেতাদের নাম লিখছেন। কে, কতো কেজি কিনবেন তা লিখছেন। আনোয়ার জানান, মাছটির দাম চেয়েছেন চার লাখ টাকা। তবে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় কেটে বিক্রির জন্যে ক্রেতাদের নাম লেখা হচ্ছে।
গতরাতে মাছটি ফ্রিজে রাখার পর আজ (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মাছটি কেটে কেজি হিসেবে বিক্রি করা হয়। প্রতি কেজি সাড়ে তিন হাজার এবং লেজ ও মাথার অংশ আড়াই হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
জকিগঞ্জের একদল জেলে কুশিয়ারা নদী থেকে মাছটি ধরেছেন। জেলেরা সিলেটের কাজির বাজার মাছের আড়তে নিয়ে আসলে পাঁচজন মিলে মাছটি নিলামে কিনেন।
ষাটোর্ধ হাজি মানিক মিয়া জানান, মাঝেমধ্যে ‘বাঘ মাছ’ বাজারে ওঠে। সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে এক সময় এই মাছ প্রচুর ধরা পড়তো। সেসব মাছ আকারে অনেক বড় হতো। কিন্তু, গত ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে এই মাছ দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে জেলেরা ধরে বাজারে তোলেন কিন্তু সেগুলো আকারে ছোট থাকে।
সিলেটের মতো দেশের অন্য এলাকায় এই মাছ তেমনটা পাওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঘাইড় মাছের একটি কাটা থাকে। কাটা থেকে মাছ আলাদা করলে লালচে হলুদ রং বের হয়। দেখতে খাসির মাংসের মতো মনে হবে। তার মতে, ‘বাঘ মাছ’ ধরার জন্য আলাদা জাল আছে। সচরাচর জাল দিয়ে এই মাছ ধরা যায় না।
তবে এ বছর লালবাজারসহ সিলেটের অন্যান্য বাজারে বেশ কয়েকটি বিশাল আকৃতির বাঘাইড় মাছ উঠেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশে দুই প্রজাতির বাঘাইড় মাছ আছে। এর একটি হলদেটে বাঘাইড় অপরটি সবুজাভ বাঘাইড়। দুই প্রজাতির মাছকেই আইইউসিএন বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘মহা বিপন্ন’ বলে ঘোষণা দিয়েছে।
শেখ নাসির, দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী
Comments