পেসার থাকলে ঝামেলায় পড়তাম: রহমত শাহ
উপমহাদেশের দল হওয়ায় তারা ভেবেছিলেন, বাংলাদেশের তাদের পেস বলেই নেবে পরীক্ষা। কিন্তু খেলতে নেমে আফগানিস্তান দেখল, বাংলাদেশ তাদের একাদশে একজনও বিশেষজ্ঞ পেসার রাখেনি। স্পিনের বিপক্ষে বরাবরই স্বচ্ছন্দ রহমত শাহ প্রথম দিনে ইতিহাস গড়া দারুণ সেঞ্চুরির পর বললেন, প্রতিপক্ষ দলে শক্ত পেসার থাকলে তিনি বরং খানিকটা ঝামেলাতে পড়তেন।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম দিন আলোয় ভাসিয়েছেন রহমত। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২৭১ রান তুলে নিয়েছে আফগানরা। ১০২ রান করা রহমত প্রথম আফগান ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়েছেন টেস্ট সেঞ্চুরির রেকর্ড।
তিন নম্বরে নামার পর দলকে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে দেখেছিলেন রহমত। চতুর্থ উইকেটে আসগর আফগানের সঙ্গে ১২০ রানের জুটি গড়ে সেই অস্বস্তি তাড়িয়েছেন। নিজে সেঞ্চুরি করে আউট হলেও তার দেখানো পথে আসগরও আছেন সেদিকে।
রহমত যখন ব্যাট করতে নামেন, তখন ঘূর্ণি বলে চোখ রাঙাচ্ছেন তাইজুল ইসলামরা। কিন্তু তাতে ভড়কে না গিয়ে ক্রিজে গিয়েই ইতিবাচক অ্যাপ্রোচ নেন তিনি। সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান, নাঈম হাসান, তাইজুল কেউই বিপদে ফেলতে পারেননি তাকে। নিপুণ দক্ষতায় সামলেছেন সবাইকে। দৃঢ়তা দেখিয়ে উল্টো হতাশা বাড়িয়েছেন বাংলাদেশের।
এমন উইকেটেও বাংলাদেশের স্পিন খেলা তার জন্য কি এতই সহজ? পশতু ভাষায় দোভাষীর সাহায্য নিয়ে ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান বোঝাতে চাইলেন স্পিন বেশ ভালোই খেলেন তিনি, পেস হলে পড়তেন ঝামেলায়, ‘তারা আসলে মোটেও সাধারণ মানের কোনো স্পিনার নন। সাকিব আল হাসানকে নিয়ে তাদের বেশ শক্ত স্পিন বোলিং আক্রমণ আছে। সে দুনিয়ার সেরা একজন স্পিনার, সেই সঙ্গে তাইজুল ইসলামের টেস্ট রেকর্ডও বেশ ভালো, মেহেদী হাসানও ভালো। আমরা পেস খেলার মাইন্ডসেট নিয়ে নেমেছিলাম, তারা স্পিনার খেলিয়েছে। পেসার থাকলে আমি হয়ত ঝামেলায় পড়তাম।’
রহমত উইকেটের ভাব বুঝে অনায়াসে ব্যাট করেছেন বলে জানান প্রথম সেশনে ২ উইকেট নেওয়া তাইজুলও, ‘না, উইকেট যেমন ও ওইরকম মুখস্থ খেলা খেলে গেছে। হয়তো বা উইকেটে এমন কিছু থাকলে ও এমন খেলতে পারত না।’
তিন টেস্টের ক্যারিয়ারে এর মধ্যে দারুণ মুন্সিয়ানা দেখিয়ে ফেলেছেন রহমত। সর্বশেষ তিন টেস্ট ইনিংসে তার রান যথাক্রমে ৯৮, ৭৬ ও ১০২। সবচেয়ে বড় কথা, যেভাবে তিনি ব্যাট করেন মনেই হয় না টেস্ট আঙিনায় আনকোরা কেউ। রহমত জানালেন টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আগে প্রচুর চার দিনের ম্যাচ খেলে দীর্ঘ পরিসরের জন্য অভ্যস্ত হয়েছেন তারা, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা অনেক সীমিত ওভারের ম্যাচ খেলি। কিন্তু ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে আমরা অনেক চার দিনের ম্যাচ খেলেছি। আমরা দুবার সেখানে টুর্নামেন্ট জিতেছি এবং শিখেছি কীভাবে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট খেলতে হয়। চার দিনের ম্যাচ ও পাঁচ দিনের ম্যাচের মধ্যে তফাৎ খুব বেশি না।’
Comments