লাইভ আপডেট: আফগানদের লিড ৩৭৪
চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের চেয়ে ৩৭৪ রানে এগিয়ে আফগানিস্তান। এখনও তাদের হাতে উইকেট রয়েছে দুটি। বলা বাহুল্য, বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ইনিংসে তাড়া করতে হবে বিশাল লক্ষ্য। আর এই টেস্টের ফল নিজেদের দিকে আনতে হলে অবিশ্বাস্য কিছুই করে দেখাতে হবে সাকিব আল হাসানদের।
চারশোর পথে আফগানদের লিড
বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানে বেঁধে ফেলে আফগানিস্তান পেয়েছিল ১৩৭ রানের লিড। দ্বিতীয় ইনিংসে ইব্রাহিম জাদরান ও আসগর আফগানের হাফসেঞ্চুরিতে সেটা ফুলে-ফেঁপে ধারণ করেছে বিশাল আকার।
আলোকস্বল্পতায় তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩৭ রান। অপরাজিত আছেন আফসার জাজাই ৩৪ রানে। তার সঙ্গী ইয়ামিন আহমেদজাই রানের খাতা খোলেননি এখনও।
বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানদের অল্প রানে বেঁধে ফেলা। অধিনায়ক সাকিবের হাত ধরে শুরুটাও হয়েছিল পরিকল্পনামাফিক। প্রথম ওভারেই নেই আফগানদের ২ উইকেট। কিন্তু চাপটা ধরে রাখা যায়নি।
চতুর্থ উইকেটে ইব্রাহিম ও আসগর ১০৮ রানের জুটি গড়লে বিপদ বাংলাদেশের জন্য মহাবিপদে রূপান্তরিত হয়। প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ইব্রাহিম ফেরেন ৮৭ রানে। আসগর করেন ৫০ রান। ৫৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সাকিব সবচেয়ে সফল।
দিন শেষে আফগানদের লিড চারশোর পথে- ৩৭৪ রান। হাতে উইকেট থাকায় তারা লিড আরও বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
চট্টগ্রামের মাঠে শেষ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটা নিউজিল্যান্ডের। ২০০৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে তারা করেছিল ৩১৭ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (তৃতীয় দিন শেষে)
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস: ৩৪২
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ১৯৪/৮) ৭০.৫ ওভারে ২০৫ (সাদমান ০, সৌম্য ১৭, লিটন ৩৩, মুমিনুল ৫২, সাকিব ১১, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৭, মোসাদ্দেক ৪৮*, মিরাজ ১১, তাইজুল ১৪, নাঈম ৭; আহমেদজাই ১/২১, নবি ৩/৫৬, জহির ০/৪৬, রশিদ ৫/৫৫, কাইস ১/২২)।
আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস: ৮৩.৪ ওভারে ২৩৭/৮ (ইহসানউল্লাহ ৪, ইব্রাহিম ৮৭, রহমত ০, হাশমতউল্লাহ ১২, আসগর ৫০, আফসার ৩৪*, নবি ৮, রশিদ ২৪, কাইস ১৪, আহমেদজাই ০*; সাকিব ৩/৫৩, মিরাজ ১/৩৫, তাইজুল ২/৬৮, নাইম ২/৬১, মুমিনুল ০/১৩, মোসাদ্দেক ০/৩)।
আলোকস্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ খেলা
আলোকস্বল্পতায় তৃতীয় দিনের খেলা নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগেই শেষ করার সিদ্ধান্ত দিলেন আম্পায়াররা। ফ্লাডলাইট অবশ্য আগেই জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তা হুট করেই বন্ধ হয়ে যায়।
সাকিবের তৃতীয় শিকার কাইস
নতুন বল নিয়েই সাফল্য পেল বাংলাদেশ। ৮৩তম ওভারের পঞ্চম বলে কাইস আহমেদকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেললেন সাকিব আল হাসান। তার আর্ম বল বুঝে উঠতে পারেননি এই টেলএন্ডার। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়ার পর রিভিউ নেন তিনি। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি।
কাইসের সংগ্রহ ২৬ বলে ১৪ রান। তার বিদায়ে ভাঙল আফগানদের ২৫ রানের অষ্টম উইকেট জুটি।
ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩৫ রান। উইকেটে ৩২ রান করা আফসার জাজাইয়ের সঙ্গী মাত্রই নামা ইয়ামিন আহমেদজাই।
দ্বিতীয় নতুন বল নিল বাংলাদেশ
আফগানদের সাত উইকেট ফেলে দেওয়ার পর বেশ ভালো জুটি গড়েছেন আফসার জাজাই ও কায়েস আহমেদ। অষ্টম উইকেটে এর মধ্যেই ২৫ রান যোগ করেছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে প্রতিটি রানই কাঁটা বিঁধছে টাইগারদের বুকে। ভাগ্য ফেরাতে তাই দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছে বাংলাদেশ। তবে নতুন বলেও সুবিধা করে উঠতে পারছে না তারা।
৮২ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৩৫ রান। আফসার জাজাই ৩২ ও কায়েস আহমেদ ১৪ রানে ব্যাট করছেন।
রশিদ খানকে বোল্ড করে দিলেন তাইজুল
ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। ২৪ রান করেছেন। তার পুরোটাই বাউন্ডারি দিয়ে। ৬টি চার মেরে ২২ বলে এ রান করেন। তবে আরও ক্ষতি করার আগে তাকে বিদায় করেছেন তাইজুল ইসলাম। তার বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে অনেকটা ইয়র্কার বানিয়ে ফেলেছিলেন। বল বাঁক খেলে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান রশিদ।
৭৪ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২১০ রান। ২১ রানে ব্যাট করছেন আফসার জাজাই। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন কায়েস আহমেদ।
আফগানিস্তানের দলীয় দুইশ
লিডটা জত বাড়িয়ে নিয়ে হয়তো শেষ বিকেলে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে আনার চিন্তা রয়েছে আফগানিস্তানের। তাই বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছেন তারা। বিশেষ করে অধিনায়ক রশিদ খান ব্যাটিংয়ে নেমেই হাত খুলে খেলছেন। তরুণ নাঈম হাসানের ওভারে ৫টি চার মেরেছেন তিনি। তাতে দলের দ্বিশতকও পূর্ণ করেছেন। ৬৮.৫ ওভারে পূর্ণ দলের দুইশ।
৭১ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০৫ রান। রশিদ খান ২০ ও আফসার জাজাই ১৬ রানে ব্যাট করছেন। ৩৪২ ছাড়িয়েছে লিড।
নবিকে ফেরালেন মিরাজ
মেহেদী হাসান মিরাজের আগের বলেই দারুণ এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন মোহাম্মদ নবী। দ্রুত রান বাড়িয়ে নেওয়াই তার উদ্দেশ্য। তবে পরের বলেই পাল্টা আঘাত করেছেন মিরাজ। হাঁটু গেড়ে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে সরাসরি মুমিনুল হকের হাতে ধরা পড়েছেন নবী। ১৩ বলে ৮ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
৬৮ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৮৪ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ১৫ রানে ব্যাট করছেন আফসার জাজাই। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন রশিদ খান।
ভয়ঙ্কর ইব্রাহিমকে ফেরালেন নাঈম
বাংলাদেশের হতাশা বাড়িয়ে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন ইব্রাহিম জাদরান। বেশ হাত খুলে ব্যাট করছিলেন। ছক্কাই মেরেছেন চার চারটি। তবে আরও একটি মারতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন তিনি। নাঈম হাসানের বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে শট করেছিলেন। লংঅন সীমানায় মুমিনুল হকের সহজ ক্যাচে পরিণত হন এ অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান। ২০৮ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৮৭ রান করেছেন তিনি।
৬৫ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৭১ রান। ১৪ রানে ব্যাট করছেন আফসার জাজাই। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন মোহাম্মদ নবী।
তিনশর কাছাকাছি আফগানিস্তানের লিড
আসগর আফগানকে ফেরানো গেলেও অপর প্রান্তে অনড় ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাট করছেন। অভিষেকে হাফসেঞ্চুরি করেছেন, এগিয়ে যাচ্ছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দিকে। তার ব্যাটে চড়ে এরমধ্যেই আফগানিস্তানের লিড ছাড়িয়েছে ২৯৩ রানে। মানে বাংলাদেশের সামনে বেশ বড় চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে।
চা বিরতির আগে ৬০ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৫৬ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ইব্রাহিম ৮২ ও জাজাই ৪ রানে ব্যাট করছেন।
ফিফটি করেই ফিরলেন আসগর
প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে আউট হয়েছিলেন আসগর আফগান। দ্বিতীয় ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করার পর পরই বিদায় নিয়েছেন তিনি। ভেঙেছে ১০৮ রানের জুটি। তাইজুল ইস্লামের লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে রাখা বলতি ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন এ আফগান ব্যাটসম্যান। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে চলে যায় লেগ স্লিপে দাঁড়ানো সাকিব আল হাসানের হাতে। ১০৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫০ রান করেছেন আসগির।
৫১ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩৬ রান। ৬৬ রানে ব্যাট করছেন ইব্রাহিম। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন আফসার জাজাই।
আসগরের হাফসেঞ্চুরি
ইব্রাহিম জাদরানের পর আসগর আফগানও করলেন হাফসেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসেও হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন এ ব্যাটসম্যান। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটা তার তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। ১০১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। এ রান করার পথে ৪টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন এ ব্যাটসম্যান। ইব্রাহিমের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে দলের লিডও বাড়াচ্ছেন তিনি।
৪৮ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৩৫ রান। ইব্রাহিম ৬৫ ও আসগর ৫০ রানে ব্যাট করছেন। আফগানদের লিড ছাড়িয়েছে ২৭৩ রানে।
ইব্রাহিম-আসগর জুটিতে শতরান
তাইজুল ইসলামের বলে এগিয়ে এসে লং অফ সীমানার উপর দিয়ে দারুণ এক ছক্কা হাকালেন ইব্রাহিম জাদরান। একই সঙ্গে আসগর আফগানের সঙ্গে তার জুটির শতরানও পূর্ণ হলো। অথচ দলীয় ২৮ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল দলটি। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার তো করেছেনই, লিডকেও বড় করছেন তারা।
৪৫ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৩৩ রান। ইব্রাহিম ৬৪ ও আগর ৪৯ রানে ব্যাট করছেন। এরমধ্যেই লিড ছাড়িয়েছে ২৭০ রানে।
আফগানিস্তানের দলীয় শতক
২৮ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর দারুণ জুটি গড়েছেন ইব্রাহিম জাদরান ও সাবেক অধিনায়ক আসগর আফগান। দলীয় শতকও পূরণ করেছেন তারা। ইব্রাহিম তো ক্যারিয়ারের র প্রথম হাফসেঞ্চুরি করেছেন। হাফসেঞ্চুরির পথে আছেন আসগর আফগানও। এ দুই জনের ব্যাটে বড় হচ্ছে আফগানিস্তানের লিড। এরমধ্যেই লিড পৌঁছেছে প্রায় আড়াইশ রানে।
৩৯ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১০৪ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ইব্রাহিম ৫১ ও আসগর ৩৩ রানে ব্যাট করছেন।
ইব্রাহিমের হাফসেঞ্চুরি
এক প্রান্তে তিনটি উইকেট পড়লেও অপর প্রান্তটি ধরে রেখেছেন ইব্রাহিম জাদরান। এরপর আসগর আফগানের সঙ্গে গড়েছেন দারুণ একটি জুটিও। আফগানিস্তানের লিডও বড় হচ্ছে তার ব্যাটেই। নিজেও তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। নাঈম হাসানের বলে মিড উইকেটে ঠেলে দুই রান নিয়ে নিজের ফিফটি পূরণ করেন তিনি। ১১৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় এসেছে এ রান।
৩৭ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৯৯ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ইব্রাহিম ৫০ ও আসগর ২৯ রানে ব্যাট করছেন।
ইব্রাহিম-আসগর জুটিতে পঞ্চাশ
দলীয় ২৮ রানে আফগানদের তিনটি উইকেট তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। কিন্তু এরপর ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও আসগর আফগান হতাশা উপহার দিয়ে যাচ্ছেন টাইগার বোলারদের। দারুণ এক জুটি গড়েছেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এরমধ্যেই জুটি ছাড়িয়েছে পঞ্চাশ রানের কোটা। সাকিব আল হাসানকে ছক্কা হাঁকিয়েই জুটির হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ইব্রাহিম। ১০১ বলে এসেছে তাদের জুটির ফিফটি। তাতে ইব্রাহিমের অবদান ২৯ রান। ২৫ রান করেছেন আসগর আফগান।
৩৩ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮৭ রান। ইব্রাহিম ৪৫ ও আসগর ২৬ রানে ব্যাট করছেন।
বড় লিডের পথে আফগানিস্তান
প্রথম সেশনে ৩টি উইকেট নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। সাকিব জোড়া শিকার করেছেন। একটি শিকার নাঈমের। ফেরানো গেছে আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান রহমত শাহকেও। আপাত দৃষ্টিতে পারফরম্যান্স ভালোই বলা চলে। তবে ক্রমেই বেড়ে চলেছে আফগানদের লিড। এরমধ্যেই ১৯৩ রান ছাড়িয়েছে তাদের। ফলে বড় লক্ষ্যই পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
লাঞ্চ বিরতির আগে ২৬ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৫৬ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ইব্রাহিম জাদরান ২৪ ও আসগর আফগান ১৬ রানে ব্যাট করছেন।
সৌম্যর দারুণ ক্যাচে আউট হাসমতউল্লাহ
প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত করেছিলেন সাকিব আল হাসান। এরপর প্রায় ১৪ ওভার টাইগারদের ভুগিয়েছেন হাসমতউল্লাহ শাহিদি ও ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান। ২৪ রানের একটি ছোট জুটিও গড়েছিলেন। তবে বড় ক্ষতি করার আগে হাসমতকে ফিরিয়েছেন নাঈম হাসান। তার রিপার বলটি রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে চেয়েছিলেন হাসমত। ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের প্যাডে বল চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো সৌম্য সরকারের হাতে। তড়িৎ গতিতে দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন সৌম্য। ৩৭ বলে ২টি চারের সাহায্যে ১২ রান করেছেন হাসমত।
১৫ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৩২ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ১২ রানে ব্যাট করছেন ইব্রাহিম জাদরান। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন আসগর আফগান।
সেঞ্চুরিয়ান রহমতকে ফেরালেন সাকিব
আগের বলেই ওপেনিং জুটি ভেঙেছেন সাকিব। পরের বলে ফেরালেন আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান রহমত শাহকে। সাকিবের ফুলার লেংথের বলটি ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন তিনি। ঠিকভাবে খেলতে পারেননি এ আফগান ব্যাটসম্যান। ব্যাটে লেগে সোজা চলে সাকিবের হাতে। খালি হাতে ফিরলেন রহমত।
৩ ওভার শেষে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫ রান। ইব্রাহিম জাদরান ০ রানের ব্যাট করছেন। নতুন ব্যাটসম্যান হাসমতউল্লাহ শাহিদি ব্যাট করছেন ১ রানে।
শুরুতেই ইহসানকে ফেরালেন সাকিব
ইনিংসের প্রথম বলেই চার মেরেছিলেন ইহসানউল্লাহ জানাত। উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার। আগ্রাসী ব্যাটিং করে লিডটা যতোটা বড় করা যায়। তবে দুই পরই উল্টো আঘাত হেনেছেন সাকিব। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন এ ওপেনারকে। পা এগিয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন ইহসান। সাকিবের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েছিলেন ইহসান। কিন্তু আম্পায়ার্স কলে আউট হন তিনি। ৩ বলে ৪ রান করেছেন এ ওপেনার।
প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রানের লিড আফগানদের
আগের দিন শেষ বিকেলে দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও তাইজুল ইসলাম। তাই তৃতীয় দিনে তাদের দিকেই তাকিয়ে ছিল টাইগাররা। কিন্তু দিনের শুরুতেই শেষ হয় তাদের প্রতিরোধ। শেষ ২ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে আর যোগ করতে পেরেছে ১১ রান। এক প্রান্তে অবশ্য অপরাজিত থেকে গেছেন মোসাদ্দেক। সঙ্গীর অভাবে পূর্ণ করতে পারেননি নিজের হাফসেঞ্চুরিও। ৮২ বলে ৪৮ রান করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের শেষ উইকেট হিসেবে নাঈম হাসানকে শিকার করে নিজের পাঁচ উইকেট পূরণ করেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন নাঈমকে। রিভিউ নিয়েছিলেন নাঈম। তবে লাভ হয়নি। ১২ বলে ৭ রান করেছেন এ ব্যাটসম্যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস: ৩৪২
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৭০.৫ ওভারে ২০৫ (সাদমান ০, সৌম্য ১৭, লিটন ৩৩, মুমিনুল ৫২, সাকিব ১১, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৭, মোসাদ্দেক ৪৮*, মিরাজ ১১, তাইজুল ১৪, নাঈম ৭; আহমেদজাই ১/২১, নবি ৩/৫৬, জহির ০/৪৬, রশিদ ৫/৫৫, কাইস ১/২২)।
বাংলাদেশের দলীয় দ্বিশতক
রশিদ খানের গুগলি বুঝতে পারেননি নাঈম হাসান। তবে বিপদ হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল ফাইন লেগ দিয়ে সীমানার বাইরে চলে যায়। তাতে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মূল্যবান চারটি রান। আর তাতেই দুইশত রানের কোটা পার করে তারা। ৬৮.৫ ওভারে এলো বাংলাদেশের দলীয় দ্বিশতক।
৭০ অভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২০৪ রান। মোসাদ্দেক ৪৭ ও নাঈম ৭ রানে ব্যাট করছেন।
তৃতীয় দিনের শুরুতেই আউট তাইজুল
ধৈর্যটা আর এদিন ধরে রাখতে পারলেন না তাইজুল ইসলাম। তৃতীয় দিনে উইকেটে নেমেই মোহাম্মদ নবির করা ওভারের তিন বল না যেতেই বাউন্ডারি হাঁকাতে চেয়েছিলেন তিনি। বলের পেসের তারতম্যটা বুঝতে না পাড়ায় সংযোগ ঘটাতে পারেননি ব্যাটে। বোল্ড হয়ে যান তিনি। তাতে ভাঙে ৪৮ রানের জুটি। বড় লিডের পথেই রয়েছে আফগানরা। ৫৮ বলে ২টি চারের সাহায্যে ১৪ রান করেন তাইজুল।
৬৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৯৬ রান। মোসাদ্দেক হোসেন ৬৭ রানে ব্যাট করছেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নেমেছেন নাঈম হাসান।
‘ম্যাজিকাল কিছু’ করে জেতার আশা সাকিবের
হাতে ২ উইকেট নিয়ে ১৪৮ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ম্যাচ তাই অনেকটাই আফগানিস্তানের পকেটে। এই অবস্থা থেকে ‘ম্যাজিকাল কিছু’ করতে পারলেই কেবল ইতিবাচক ফল আনা সম্ভব মনে হচ্ছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের, ‘ম্যাচ জেতা অবশ্যই সম্ভব এবং ক্রিকেটে অনেক এমন হয়েছে যে প্রথম ইনিংসে পেছনে থাকার পরেও এমন শত শত উদাহরণ আছে যে দল ফিরে আসে। আমরাও আশা করবো যেন এমন কিছুই হয়। এর জন্য অবশ্যই আমাদের যে দুই উইকেট আছে তারা যদি ভালো ব্যাটিং করে একটু এগিয়ে নিতে যেতে পারে আর বোলিংটা যদি ভালো করতে পারি।’
শেষ দুই উইকেট নিয়ে লিড নেওয়া অকল্পনীয়। তবে আফগানদের লিডটা যতোটা পাড়া যায় কম রাখাই প্রত্যাশা সাকিবের, ‘আমি তো প্রত্যাশা করবো যেন এই দুই উইকেট অন্তত একটি সেশন ব্যাটিং করে। যদি সেটা করতে পারে তাহলে রানটি অনেক কমে আসবে। ৭০-৮০ পর্যন্তও যদি আমরা আনতে পারি সেটি আমাদের জন্য অনেক বড় সুবিধা হবে। যদিও অনেক কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ হবে, তবে যেভাবে ব্যাটিং করেছে আমি বিশ্বাস রাখতেই পারি।’
সেটা করলেও কাজ ফুরোচ্ছে না। বাকি আছে লম্বা পথ। সেই পথে ম্যাজিকাল কিছু চাইছেন অধিনায়ক, ‘অবশ্যই খুব ভালো বোলিং করতে হবে। যেটা বিশ্ব ক্রিকেটে অনেকেই অনেক সময় করেছে যে এমনভাবে পিছিয়ে থাকার পরেও ভালোভাবে কামব্যাক করেছে। এমন সুযোগ যদি আমাদের থাকে এবং আমাদের বোলাররা ম্যাজিকাল কিছু করে দেখাতে পারে, এরপরে আমাদের ব্যাটসম্যানদের ওপরেও নির্ভর করতে হবে।’
দ্বিতীয় দিন শেষে চালকের আসনে আফগানিস্তান
প্রথম দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান আসগর আফগান ও আফসার জাজাইয়ের বিদায়ের পর আফগানিস্তানকে সাড়ে তিনশো ছোঁয়া সংগ্রহ পাইয়ে দেন অধিনায়ক রশিদ খান। টেস্টে নিজের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে করেন ৫১ রান। এরপর বল হাতেও তিনি অনবদ্য। বাংলাদেশের পাতা স্পিন ফাঁদের ফায়দা তুলে নিয়ে বিপদে ফেললেন সাকিব আল হাসানদেরই। নিলেন ৪ উইকেট। তার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আফগানরা।
ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ১৯৪/৮। অধিনায়ক সাকিব, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরা হতাশ করেন। সেট হয়ে আউট হন সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। গড়ে ওঠেনি ভালো কোনো জুটি। আফগান স্পিনারদের ওপর দাপট দেখাতে পারেন কেবল মুমিনুল হক। কিন্তু তিনিও তড়িঘড়ি করতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। তার ব্যাট থেকে আসে ৭১ বলে ৫২ রান।
আশার আলো হয়ে উইকেটে আছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৭৪ বলে ৪৪ ও তাইজুল ইসলাম ৫৫ বলে ১৪ রানে। শেষ বিকেলে আফগান স্পিনারদের ঘূর্ণিজালের মায়ায় আটকা না পড়ে তারা দেখান দৃঢ়তা। দুজনের অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেট জুটির সংগ্রহ ৯৪ বলে ৪৮ রান। তবে এখনও আফগানদের থেকে ১৪৮ রানে পিছিয়ে সাকিবরা। হাতে রয়েছে মাত্র ২ উইকেট। তৃতীয় দিনে বিস্ময়কর কিছু না ঘটলে বেশ বড় লিড পেতে যাচ্ছে আফগানিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (দ্বিতীয় দিন শেষে)
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস: (আগের দিন ২৭১/৫) ১১৭ ওভারে ৩৪২ (ইব্রাহিম ২১, ইহসানউল্লাহ ৯, রহমত ১০২, হাসমতউল্লাহ ১৪, আসগর ৯২, নবি ০, আফসার ৪১, রশিদ ৫১, কায়েস ৯, আহমেদজাই ০, জহির ০; তাইজুল ৪/১১৬, সাকিব ২/৬৪, মিরাজ ১/৭৩, নাঈম ২/৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৯, সৌম্য ০/২৬, মুমিনুল ০/৯, মোসাদ্দেক ০/১)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৬৭ ওভারে ১৯৪/৮ (সাদমান ০, সৌম্য ১৭, লিটন ৩৩, মুমিনুল ৫২, সাকিব ১১, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৭, মোসাদ্দেক ৪৪*, মিরাজ ১১, তাইজুল ১৪*; আহমেদজাই ১/২১, নবি ২/৫৩, জহির ০/৪৬, রশিদ ৪/৪৭, কাইস ১/২২)।
Comments