রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট-জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার নেপথ্যে সিন্ডিকেট

rohingya nid forgery
ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করছে স্থানীয় কিছু মানুষ এবং রোহিঙ্গা দালালদের সিন্ডিকেট। এরা অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করে বলে পুলিশ ও পাসপোর্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এই সিন্ডিকেটটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), নাগরিকত্ব সনদ, জন্মসনদ এবং পরিচিত মাধ্যম ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে ঘুষ দিয়ে পুলিশি যাচাই-বাছাইকরণের কাজও সম্পন্ন করিয়ে নেয়।

পুলিশ ও পাসপোর্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাসপোর্টের জন্য করা আবেদনে রোহিঙ্গারা ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের কাট্টলি এলাকা থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ তিন রোহিঙ্গা যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, “এই তিনজন ২০১৭ সালে পরিবারসহ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে তাদের আটক করা হয়। এদের মধ্যে দুজন বাংলাদেশে আসার কয়েক মাসের মধ্যেই ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পাসপোর্ট পেয়ে যান। অন্যজন এ বছরের জানুয়ারিতে পাসপোর্ট পান।”

এরা হলেন- ইউসুফ (২৫), তার ছোট ভাই মুছা (২০) এবং আজিজ (২৫)।

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এরা নোয়াখালী থেকে পাসপোর্ট তৈরি করেছেন এবং ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ঢাকায় অবস্থিত তুরস্কের দূতাবাসে যাচ্ছিলেন।”

একইদিন রাতে কাট্টলি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের বার্মা কলোনি এলাকা থেকে আরও চার রোহিঙ্গা নারীকে আটক করেছে বায়েজিদ থানা পুলিশ। এদের মধ্যে একজন নারীর কাছে বাংলাদেশের এনআইডি কার্ড পাওয়া গেছে।

মোস্তাফিজুর বলেন, “আটক তিন রোহিঙ্গা উখিয়ার থাইংখালী শিবিরে বসবাস করে আসলেও, পাসপোর্ট পেতে তারা নোয়াখালীর ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।”

“স্থানীয় মানুষ এবং রোহিঙ্গা দালালদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের সহায়তায় এরা পাসপোর্ট পেয়েছেন। এর জন্য তাদের তিনজনকে যথাক্রমে ৬০ হাজার, ৯০ হাজার এবং এক লাখের কিছু বেশি টাকা খরচ করতে হয়েছে,” যোগ করেন ওসি।

রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড, জন্মসনদ ও নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়ী করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু সাইদ।

আকবরশাহ থানার ওসি জানান, বৃহস্পতিবার আটক হওয়া তিন রোহিঙ্গা প্রথমে উখিয়ার এক রোহিঙ্গা দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই রোহিঙ্গা দালাল তাদেরকে কক্সবাজারের চকরিয়ার অপর এক বাংলাদেশি দালালের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে চকরিয়ার ওই দালাল রোহিঙ্গাদের ফেনীর আরেক দালালের কাছে পাঠান। আর্থিক চুক্তির পর ফেনীর ওই দালাল তাদেরকে নোয়াখালীতে নিয়ে যান।

ওসি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তাদের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে এবং আবেদন করার একমাসের মধ্যেই তারা পাসপোর্ট পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই তিন রোহিঙ্গা।

“ওই সিন্ডিকেটের শক্তিশালী এবং ক্ষমতাবান নেটওয়ার্ক থাকায় পুলিশি যাচাই-বাছাইকরণসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় এসব অনিয়মের একটিও শনাক্ত করা যায়নি”, বলেন ওসি।

(সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে এই Syndicate helps Rohingyas get NID, passports লিংকে ক্লিক করুন)

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

11h ago