কেবল বৃষ্টির পূর্বাভাসেই আশা বাংলাদেশের
আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, রবি ও সোমবার চট্টগ্রামে হতে পারে তুমুল বৃষ্টি। খেলা ভেসে যাওয়ারও সম্ভাবনা আছে। তা যদি হয় তাহলেই বরং বেঁচে যাবে বাংলাদেশ। আর যদি কাছের বঙ্গোপসাগরের বাতাস এসে তাড়িয়ে নেয় বৃষ্টি, তাহলে রশিদ খানদের স্পিনে উড়ে যাওয়ার শঙ্কাতেই থাকবে বাংলাদেশ। কারণ তিন দিন পর ম্যাচের যা অবস্থা তাতে অতি আশাবাদীর পক্ষেও বাংলাদেশের হয়ে বাজি ধরার সাহস করা মুশকিল। পীড়াদায়ক হলেও টেস্টের নবীন আফগানিস্তানের বিপক্ষে এমন রুঢ় বাস্তবতার সামনেই পড়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনটাও নিজেদের করে নিয়েছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশকে ২০৫ রানে থামিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তারা করে ফেলেছে আরও ২৩৭ রান। হাতে ২ উইকেট নিয়ে লিড হয়ে গেছে ৩৭৪ রানের।
তৃতীয় দিনে ঘন কালো মেঘের কারণে আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হয়েছে ২০ মিনিট আগেই। চট্টগ্রামের আকাশের এই গোমড়া মুখই এখন পারে বাংলাদেশকে উজ্জ্বল করতে।
কেননা কাজটা বাংলাদেশের জন্য প্রায় অসম্ভব। কিছু তথ্যই দিতে পারে প্রমাণ। আফগানিস্তানের লিড হয়ে গেছে ৩৭৪ রানের। অর্থাৎ এই মুহূর্তে আফগানরা ইনিংস ছেড়ে দিলে বাংলাদেশকে জিততে হলে করতে হবে ৩৭৫ রান। ১৪২ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার ঘটনা আছে আর মাত্র ৭টি। নিশ্চিতভাবেই এই লিড আরও বেড়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য আরও বড় হওয়ার কথা।
আর বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড লিডের ধারেকাছেও নেই। ২০০৯ সালে গ্রানাডায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১৭ রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ।
যদি পরিসংখ্যানটা মেলাতে হয় চট্টগ্রামের মাঠ নিয়ে, তাহলে আরও হতাশার খবর আছে সাকিবদের জন্য। চট্টগ্রামে কখনোই রান তাড়া করে টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এমনকি চতুর্থ ইনিংসে ৩৩১ রানের বেশি করতেও পারেনি। অর্থাৎ আফগানিস্তানকে হারাতে হলে রেকর্ড বই রীতিমতো ওলটপালট করতে হবে সাকিবদের।
সকাল থেকে সারাদিনই কেবল হতাশার গল্প। আগের দিন শেষ ২ উইকেট নিয়ে লড়াই করার পণ ছিল দলের। কিন্তু সেই লড়াই টেকেনি তিন ওভারের বেশি। ২০৫ রানে অলআউট হওয়ার পর প্রথম ওভারেই সাকিব হেনেছিলেন জোড়া আঘাত। নাঈম হাসানও শুরুতে পেয়েছিলেন এক উইকেট। কিন্তু এরপর আর কোনো চাপ দেওয়া যায়নি আফগানদের।
চতুর্থ উইকেটে আসগর আফগান আর ইব্রাহিম জাদরান মিলে গড়েন ১০৮ রানের জুটি, তাতেই বিশাল রানের বোঝার নিচে পড়া নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সেশনে মাত্র ১ উইকেট হারায় আফগানরা। ফিফটি করেই আসগর আর সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ইব্রাহিম ৮৭ রানে থামলে কিছুটা উদযাপনের সুযোগ পায় বাংলাদেশ।
শেষ সেশনে পড়েছে আরও ৪ উইকেট কিন্তু রানও বেড়েছে তরতরিয়ে। অধিনায়ক রশিদ নেমে নাঈমের এক ওভারেই মারেন পাঁচ বাউন্ডারি। এক প্রান্ত ধরে রেখে রান বাড়াচ্ছেন উইকেটরক্ষক আফসার জাজাই। তাতে দুশ্চিন্তা বেড়ে কয়েকগুণ হচ্ছে স্বাগতিকদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
(তৃতীয় দিন শেষে)
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস: ৩৪২
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২০৫
আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস: ৮৩.৪ ওভারে ২৩৭/৮ (ইহসানুল্লাহ ৪, ইব্রাহিম ৮৭ , রহমত ০, হাসমতুল্লাহ ১২, আসগর ৫০, আফসার ব্যাটিং ৩৪*, নবি ৮, রশিদ ২৪, কাইস ১৪, ইয়ামিন ০*; সাকিব ৩/৫৩, মিরাজ ১/৩৫, তাইজুল ২/৬৮, নাঈম ২/৬১, মুমিনুল ০/১৩, মোসাদ্দেক ০/৩)।
Comments