নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে স্কটল্যান্ডে পা রেখেছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। প্রতিযোগিতা জুড়ে দেখা গেল সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবে রূপান্তর করার তীব্র তাড়না-প্রচেষ্টা। তাতে মিলল সুমিষ্ট ফলও। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলো সালমা খাতুনের দল। ফাইনালে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে জয়ের নায়ক ওপেনার সানজিদা ইসলাম।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ডান্ডির ফোর্টহিলে হেসে-খেলে থাই নারীদের ৭০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩০ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে সালমা-নাহিদা আকতার-শায়লা শারমিনদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে থাইল্যান্ড পুরো ওভার খেলে ৭ উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে মাত্র ৬০ রান।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে বাছাইয়ের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের সঙ্গী হচ্ছে রানার্সআপ থাইল্যান্ডও।
গেলবারের বাছাইয়েও অপরাজিত থেকে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। ফাইনালে হারিয়েছিল আয়ারল্যান্ডের নারীদের। এবার প্রতিপক্ষ বদলালেও বাংলাদেশের জয়যাত্রায় ছেদ পড়েনি। একপেশে ম্যাচে কোনোরকম পাত্তাই পায়নি থাইল্যান্ড। ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে সবচেয়ে সফল দল এখন বাংলাদেশ। টাইগ্রেসদের দুটি শিরোপার বিপরীতে আয়ারল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবার করে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের ভিত পায় উদ্বোধনী জুটিতে। ১০.১ ওভারে আসে ৬৮ রান। মুর্শিদা খাতুন ৩৪ বলে ৩৩ রান করে বিদায় নিলে ভাঙে এই জুটি। পরের ব্যাটাররা যাওয়া-আসার মধ্যে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে রাখেন সানজিদা। সেই সঙ্গে সচল রাখেন রানের চাকা।
৪৭ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর আগ্রাসী হয়ে ওঠেন সানজিদা। এটি তার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬০ বলে ৭১ রানে। তার অসাধারণ ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়ের মার। থাইল্যান্ডের হয়ে নাতায়া বুচাথাম ২ উইকেট নেন ৩১ রানে।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের সামনে অসহায় ছিল থাইরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট তুলে নেন নাহিদা। ব্যক্তিগত পরের ওভারে আরও একটি শিকার ধরেন এই বাঁহাতি স্পিনার। তার সঙ্গে অধিনায়ক সালমা ও খাদিজা তুল কুবরা উইকেট শিকারে যোগ দিলে নবম ওভারে ১৭ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে ফেলে থাইল্যান্ড। ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়াও নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের।
পঞ্চম উইকেটে ২৪ রানের একটি ছোট জুটি পায় থাইরা। এরপর জোড়া আঘাত হানেন অফ স্পিনার শায়লা। শেষদিকে ১৪ বলে অপরাজিত ১৫ রান করে থাইদের হারের ব্যবধান কিছুটা কমান রাতনাপর্ন পাদুংলার্ড। বাংলাদেশের হয়ে নাহিদা ১৭ ও শায়লা ৯ রানে ২টি করে উইকেট নেন। দলনেতা সালমা ৪ ওভারে ২ মেডেনসহ ১ উইকেট নিয়ে দেন মাত্র ৪ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল: ১৩০/৫ (২০ ওভারে) (সানজিদা ৭১*, মুর্শিদা ৩৩, নিগার ৮, শায়লা ৩, জাহানারা ৩, ফাহিমা ০, ফারজানা ২*; সুথিরুয়াং ০/২১, বুচাথাম ২/৩১, তিপোচ ১/১৮, লাওমি ১/১৩, কামচোম্পু ০/২৭, পাদুংলার্ড ০/১৪)
থাইল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল: ৬০/৭ (২০ ওভারে) (চান্তাম ১, চাইওয়াই ৫, কোঞ্চারোয়েনকাই ৩, বুচাথাম ৫, লিয়েংপ্রাসার্ট ১১, তিপোচ ৮, সুথিরুয়াং ০, কামচোম্পু ৪*, পাদুংলার্ড ১৫*; জাহানারা ০/৩, নাহিদা ২/১৭, ঋতু ০/৮, সালমা ১/৪, খাদিজা ১/৮, ফাহিমা ০/৭, শায়লা ২/৯)।
Comments