ধরা পড়েনি আজমেরী ওসমান, ২ সহযোগীর রিমান্ড শুনানি আজ

Ajmeri Osman
আজমেরী ওসমান। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদা না পেয়ে মারধর ও হুমকির অভিযোগের ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জের প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

তবে পুলিশ বলছে, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের পর আরো তথ্য পাওয়া যাবে।

আজ (৮ সেপ্টেম্বর) তাদের রিমান্ড শুনানি হবে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় বাচ্চু মিয়া নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে ৬৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ দেওয়া হয় আজমেরী ওসমান, জেলা ছাত্রসমাজের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন রুপুসহ চারজনের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের কয়েক ঘণ্টা পরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শহরের আল্লামা ইকবাল রোডে দেওয়ান মঞ্জিলের নিচতলায় আজমেরী ওসমানের কার্যালয়ে ও পঞ্চমতলার বাসায় অভিযান চালিয়ে শাহাদাৎ হোসেন রুপু ও মোকলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সেসময় পলাতক ছিলো আজমেরী ওসমান। পরদিন তথা ৬ সেপ্টেম্বর সকালে আজমেরী ওসমানকে প্রধান করে এবং গ্রেপ্তারকৃত দুজনসহ পলাতক জুয়েলকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার প্রধান আসামি আজমেরী ওসমান হলেন জাতীয় পার্টির প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের ছেলে এবং নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ভাতিজা।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ৬ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের পর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর বিকাল পর্যন্ত আজমেরী ওসমানের আল্লামা ইকবাল রোডের দেওয়ান মঞ্জিলের নিচতলার কার্যালয় বন্ধ ছিলো। অন্যান্য দিনে নেতাকর্মীদের ভিড় থাকলেও গত দুদিন কাউকে দেখা যায়নি। বাড়ির দারোয়ান শুধু অফিস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেই বাড়ির একজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর রাতে পুলিশের অভিযানের সময় হাজী সাহেব (আজমেরী ওসমান) বাসায় ছিলেন না। আর পরদিন বিকাল পর্যন্ত অফিসে কিংবা বাসায় তাকে যাওয়া-আসা করতেও দেখা যায়নি। তিনি কোথায় রয়েছেন তাও জানান নেই।

তিনি আরো বলেন, কলেজ এলাকায় প্রতিদিনই পুলিশ টহল দেয়। ৫ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল পর্যন্ত কয়েকটি গাড়ি টহল দিয়েছে। তবে ভবনে আসেনি।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পলাতক আসামি আজমেরী ওসমান ও জুয়েলকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্নভাবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামি বর্তমানে কারাগারে আছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ, মামলার মূল রহস্য উৎঘাটন, ঘটনার সঙ্গে আরো কারা জড়িত আছে ও পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। ওই রিমান্ড আবেদনের শুনানি ৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। রিমান্ড মঞ্জুরের পর আরো তথ্য পাওয়া যাবে।

মামলার বাদী বাচ্চু মিয়া মামলায় উল্লেখ করেন, ৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় ০১৭৩৯০৮৯৪৯২ থেকে আমার মোবাইল নাম্বারে ফোন করে বলে, ‘চাচা আমাকে চিনতে পারছেন। আমি আজমেরী ওসমান বলছি। আমার একটা লোক আপনার কাছে যাবে তাকে আপনি ৬৫ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে দিবেন। এবং তাকে আদর্শ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে মিষ্টি খাওয়াইয়া টাকা দিয়ে দিবেন।’

“কিছুক্ষণ পর মোকলেছ নামে একজন লোক আমার সঙ্গে কালি মন্দিরের সামনে দেখা করে। আমি তাকে মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য কালির মন্দিরের পাশে আদর্শ মিষ্টির দোকানে মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য ডাকলে সে মিষ্টি খাবে না বলে পরবর্তীতে গ্রামীণ হোটেলে নিয়ে হালিম খাওয়ানোর জন্য বললেও হালিম খাবে না বলে দোকান থেকে বের হয়ে যায়। আমি দোকান থেকে বের হলে মোকলেস আমাকে বলে আপনাকে হাজী সাহেব ডাকছে। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে মোকলেস সহ আরো অজ্ঞাত ৭ থেকে ৮ জন আমার প্যান্টের কোমরের বেল্ট ধরে টানতে টানতে কালির বাজার মাংস পট্টি আফসু মহাজনের হোটেলের সামনে নিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে মাথা, কপালসহ শরীরে বিভিন্ন জায়গায় জখম করে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন- দাবিকৃত ৬৫ হাজার টাকা না পেয়ে আজমেরী ওসমানের নির্দেশে সব আসামি আমাকে নারায়ণগঞ্জে থাকতে দিবে না বলে ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেয়।

তবে বাচ্চু মিয়ার অভিযোগের বিষয়ে আজমেরী ওসমান কিংবা তার পরিবারের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরো পড়ুন:

আজমেরীর দুই সহযোগীকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে চায় পুলিশ

আজমেরী ওসমানের কার্যালয় ও বাসায় পুলিশি অভিযান, গ্রেপ্তার ২

Comments

The Daily Star  | English
FY26 Bangladesh budget subsidy allocation 2025-26

FY26 Budget: Subsidy spending to hold steady

The budget for fiscal 2025-26 is likely to be smaller than the current year’s outlay, but subsidy spending is expected to remain almost unchanged at Tk 1,15,741 crore.

10h ago