আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তারের দাবি
নারায়ণগঞ্জের প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের ছেলে আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বী।
গতকাল (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের ডিআইটি এলাকার আলী আহম্মদ চুনকা পাঠাগার প্রাঙ্গণে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের মানববন্ধনে তিনি এ দাবি জানান। সেসময় হত্যার বিচার দাবিতে মাসিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মোমবাতি জ্বালানো হয়।
রফিউর রাব্বী বলেছেন, দুদিন আগে কালীর বাজারে এক ব্যবসায়ীর কাছে ৬৫ হাজার টাকা চাঁদা নিতে গিয়ে তাকে না পেয়ে ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগে পুলিশ আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তারের অভিযান চালিয়েছে। তাকে খুঁজছে পুলিশ আর সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ ত্বকী হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত গুরুতর অপরাধে তাকে ধরা হচ্ছে না, শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না।
আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করলে শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমানসহ বিভিন্ন জনের নাম প্রকাশিত হবে। তাই আজমেরী ওসমানকে গ্রেপ্তার করে, তার জবানবন্দি গ্রহণের মাধ্যমে ত্বকী হত্যায় আরো যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক।
সরকারের উদ্দেশ্যে রাব্বী বলেন, “ত্বকী, সাগর রুনিসহ আমাদের নারায়ণগঞ্জের সব হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি। এ হত্যাকাণ্ডগুলোকে ধামাচাপা দিয়ে লাভ নেই। আপনারা আজকে এ হত্যাকাণ্ডগুলোকে ধামাচাপা দিতে চাচ্ছেন, কারণ আপনারা দেখছেন এগুলোর সঙ্গে আপনার সরকার দলের লোকজন জড়িত। আপনারা যদি এ বিচার করে যান তাহলে আপনাদের জন্য মঙ্গল। নতুবা অপনাদের অনুপস্থিতিতে যারা থাকবে এটি তাদের জন্যে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।”
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ খেলাঘর আসরের সভাপতি রথিন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে ত্বকী শহরের শায়েস্তাখান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। সে শহরের চাষাঢ়ায় ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল এবিসি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্র ছিলো। নিখোঁজের একদিন পর (৭ মার্চ) দেখা যায় এ লেভেল পরীক্ষায় সে পদার্থ বিজ্ঞানে ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছিলো যা সারাদেশে সর্বোচ্চ। এছাড় সে ও লেভেল পরীক্ষাতেও পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়নে দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলো।
পরে ৮ মার্চ সকালে চাড়ারগোপে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ত্বকী হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে আটজনই পলাতক। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্ধেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ইউসুফ হোসেন লিটন ও সুলতান শওকত ভ্রমর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কিন্তু, এই হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর পরও এ মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন:
Comments