শোভন-রব্বানীর পদত্যাগ, ছাত্রলীগের দায়িত্বে জয়-লেখক

ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান জয় (বামে), সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য

ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তারা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

শোভনের স্থলে বর্তমান কমিটির এক নম্বর ভাইস প্রসিডেন্ট আল নাহিয়ান খান জয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও রব্বানীর স্থলে এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, নতুনভাবে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ছাত্রলীগের পরবর্তী কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুতি নিবেন। সেই সঙ্গে আগের কমিটিও বহাল থাকবে।

জাবি উপাচার্যের কাছে উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা দাবি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক গ্রহণ, টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠনের মতো গুরুতর অভিযোগ ছিল ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগগুলো ফলাওভাবে গণমাধ্যমে আসার পর তাদের সরতে হলো।

৮ সেপ্টেম্বর রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সভায় উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা তখন ছাত্রলীগ নেতাদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের ক্ষোভ ব্যক্ত করেছিলেন। তখন থেকেই ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে রদবদলের ব্যাপারে জল্পনা শুরু হয়। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজে সিদ্ধান্ত নিবেন এমন কথাও তখন বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের।

ঘটনাপ্রবাহের শেষ পর্যায়ে এসে বৃহস্পতিবার গোলাম রাব্বানী ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লেখেন। চিঠিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ও গুলিস্তানের কার্যালয়ের বিষয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। রাব্বানী দাবি করেন, তারা বারবার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছেন।

গত ১৩ মে সম্মেলনের এক বছরের মাথায় ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন ছাত্রলীগ সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক। এরপর থেকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ না পাওয়া নেতারা আন্দোলন শুরু করেন। অভিযোগ ওঠে, অর্থের বিনিময়ে যোগ্যদের বাদ দিয়ে মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শিবির ও ছাত্রদলের নেতাদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।

এর রেশ কাটতে না কাটতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা সামনে চলে আসে। উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে, তাদের কাছ থেকে বরাদ্দের ৪ থেকে ৬ শতাংশ নিয়ে ছাত্রলীগকে দেওয়ার দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তিনি এ অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর দাবি, কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, উপাচার্যের ছেলে ও স্বামীর মধ্যস্ততায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সঙ্গে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। তবে উপাচার্যের কাছে ‘ন্যায্য পাওনা’ চাওয়ার কথা দ্য ডেইলি স্টারের কাছে স্বীকার করেছেন রব্বানী নিজেই।

 

আরও পড়ুন: 

আমরা ‘ন্যায্য পাওনা’ দাবি করেছিলাম: রাব্বানী

শিক্ষা নয়, জাবির আলোচনার বিষয় ‘২ কোটি টাকা’র ভাগ-বাটোয়ারা

‘২ কোটি টাকা ভাগের সংবাদে শিক্ষক হিসেবে খুব বিব্রত বোধ করি’

জাবি উপাচার্যের সঙ্গে ছাত্রলীগের ‘প্রশ্নবিদ্ধ বৈঠক’, টিআইবির উদ্বেগ

জাবি ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দল ও সংঘর্ষের নেপথ্যে ৪৫০ কোটি টাকার নির্মাণ কাজ

জাবিতে চলমান উন্নয়ন পরিকল্পনার ‘মাস্টারপ্ল্যানে’ গোড়ায় গলদ!

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago