পিডব্লিউডির কাজ হারাতে পারেন জি কে শামীম
টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ কয়েকটি মামলায় গত ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের সঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের (পিডব্লিউডি) নির্মাণ কাজের চুক্তিগুলো বাতিল হয়ে যেতে পারে।
পিডব্লিউডি-সহ সরকারের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের একজন প্রভাবশালী কনট্রাকটর হিসেবে পরিচিত শামীম কারাগারে থাকায় কাজগুলো গতি হারাতে পারে এমন আশঙ্কায় পিডব্লিউডির চুক্তিগুলো বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি (প্রা) লিমিটেডের মার্কেটিং ম্যানেজার শাফায়াত হোসেন গত ২১ সেপ্টেম্বর জানান, তাদের প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের ১৫টি বড় নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
পিডব্লিউডির প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহাদত হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “তার (শামীমের) অনুপস্থিতে কাজের অগ্রগতি ব্যাহত হলে আমরা চুক্তি বাতিলসহ অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা নেবো।”
তবে বর্তমানে শামীমের সঙ্গে পিডব্লিউডির কতোগুলো চুক্তি রয়েছে সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।
গত ২১ সেপ্টেম্বর শামীমের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়া চালানোর অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
শামীমের বাসা ও নিকেতনের অফিসে অভিযান চালিয়ে র্যাব আটটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল সংখ্যক গোলাবারুদ, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর এবং প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা নগদ উদ্ধার করে। এছাড়াও, বিপুল পরিমাণের সিঙ্গাপুরি ও মার্কিন ডলার এবং বিদেশি মদও উদ্ধার কার হয়।
শামীম কীভাবে পিডব্লিউডির অধিকাংশ কাজ পেলেন?- উত্তরে পিডব্লিউডির প্রধান প্রকৌশলী বলেন, “শামীমের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজির কোনো অভিযোগ ছিলো না। তিনি সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়ায় তাকে কাজ দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়াও, ইলেক্ট্রনিক টেন্ডারিং ব্যবস্থায় কোনো দরদাতাকে ভয় দেখানো সহজ কাজ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিডব্লিউডির একজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ইলেক্ট্রনিক টেন্ডারিং ব্যবস্থাতেও শামীম অন্য দরদাতাদের নিয়ন্ত্রণে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
আর্থিক ও কারিগরিভাবে শামীমের প্রতিষ্ঠান সক্ষম হওয়ায় তাকে কাজ না দিয়ে পারা যায় না। তবে সে কারাগারে থাকায় সরকারি প্রকল্পগুলোর কাজ বাধাগ্রস্ত হবে কেননা, সে নিজেই কাজগুলো তদারকি করতো বলে জানান সেই কর্মকর্তা।
সূত্র জানায়, শামীমের প্রতিষ্ঠান যেসব প্রকল্পে কাজ করছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- র্যাব সদরদপ্তর, ২০-তলা সচিবালয় ভবন, বেইলি রোডে হিল ট্র্যাকস কমপ্লেক্স এবং আজিমপুরে কয়েকটি সরকারি আবাসিক ভবন।
Comments