দাবি না মানলে বুয়েটের সব ভবনে তালা দেওয়ার হুমকি
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম শুক্রবার দুপুর ২টার মধ্যে ক্যাম্পাসে এসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির ব্যাপারে অবস্থান পরিষ্কার না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ে হয়েছে।
বুয়েটের শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তরফে আজ এই কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রায় হাজার খানেক শিক্ষার্থী বুয়েটের শহীদ মিনার চত্বরে এসে জড়ো হন। তারা বলেন যে আগামীকালের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক কাজ বন্ধ করে দিতে তারা বাধ্য হবেন।
চার দিন আগে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের এক দল নেতা-কর্মীর হাতে নিহত আবরার ফাহাদের খুনিদের বিচারের দাবিতে টানা আন্দোলন চালাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবরারের হত্যাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ যেসব দাবি তারা জানিয়েছেন তা পূরণের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি প্রশাসন। দাবি পূরণ না হলে ১৪ অক্টোবরের ভর্তি পরীক্ষা আটকে দেওয়ারও কথা বলেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান করেন।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবিগুলো হচ্ছে: আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার; মামলার সব খরচ ও আবরারের পরিবারের ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করা; দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তিতে বুয়েট প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া এবং অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিস দেওয়া।
এছাড়া বুয়েটে ‘সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করা; বুয়েট উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টাকে জবাবদিহি করা; আবাসিক হলগুলোতে র্যাগের নামে ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করতে জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলে পদক্ষেপ নেওয়া; নির্যাতন বিরোধী রিপোর্টের জন্য অফিসিয়াল সাইটে পোর্টাল খুলে ঘটনাগুলোর দ্রুত বিচার করা এবং শেরে বাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করা।
বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে (২১) রোববার দিবাগত মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের সিঁড়িতে নিথর অবস্থায় পাওয়া যায়। এর আগে আবরারকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটান ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। ধারণা করা হচ্ছে, ফেসবুকে সরকারবিরোধী মত প্রকাশের কারণে ছাত্রলীগের রোষানলে পড়েন আবরার।
Comments