ছেলের অসুস্থতায় সিঙ্গাপুরে গিয়েও ফিটনেস নিয়ে কাজ করেন ইমরুল
তামিম ইকবাল বিশ্রামে থাকায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের দলে জোর বিবেচনায় ছিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু শিশুপুত্র ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় ক্রিকেট থেকে কিছু দিন বাইরে চলে যেতে হয় তাকে। ছেলের অসুস্থতা বাড়লে যেতে হয় দেশের বাইরেও। এই সময় ফেরার লড়াই থেকে যেন ছিটকে না পড়েন সেজন্য সব সংকটের মধ্যেও চালিয়েছেন ফিটনেস ঠিক রাখার কাজ। যার ফল মিলেছে। খেলায় ফিরেই পেয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরি।
রোববার শেষ হওয়া জাতীয় লিগের প্রথম রাউন্ডে আলো ছড়িয়েছেন ইমরুল। শেষ দিনে টেল এন্ডারদের নিয়ে অসাধারণ দুই জুটি গড়ে করেন ডাবল সেঞ্চুরি। প্রথম শ্রেণীতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করে ইমরুল অপরাজিত থাকেন ৩১৯ বলে ২০২ রানে।
তবে ঠিক এই পরিসংখ্যানই বোঝাচ্ছে না তার এবারের দ্বিশতকের মাহাত্ম। আগের দিনের অপরাজিত ২৯ রান নিয়ে নেমে ১৮৩ বলে যখন স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক ততক্ষণে ৮ উইকেট হারিয়ে বসেছে তার দল। এরপর রুবেল হোসেনকে নিয়ে নবম উইকেটে ৮৪ রান, যাতে রুবেলের অবদান মাত্র ২ আর আল-আমিন হোসেনকে নিয়ে দশম উইকেটে আনেন ৪৩ রান, আল-আমিনের অবদান তাতে মাত্র ১। ম্যাচের এই পরিস্থিতিতে ইমরুল জানালেন নিজের বিশ্বাসের জায়গা থেকেই ছুটেছেন তিনি, ‘ওদের ফিল্ডার সব বাইরে রাখছিল। আমার সঙ্গী ছিল আল-আমিন। ওরে আগলে রেখে মোটামুটি সব বল মোকাবেলা করে এগিয়েছি। চার-ছয় মেরে এগিয়েছি। বিশ্বাস ছিল সুযোগ নিলে কিছু একটা করতে পারব। ’
গত কয়েকদিন খেলার মধ্যে ছিলেন না। ছেলেকে নিয়ে দেশে-বিদেশে ছুটোছুটি করতে হয়েছে। এতসব হ্যাপা সামলে জাতীয় লিগে নামার আগে এসেই বিপ টেস্টেও প্রত্যাশা অনুযায়ী স্কোর করেন। দ্য ডেইলি স্টারকে ইমরুল জানান সংকটের সময়ে দেশের বাইরেও ফিটনেস নিয়ে কাজ করতে ভুলেননি, ‘খেলার মধ্যে ছিলাম না কয়েকদিন। ব্যাটিং অনুশীলন করা হচ্ছিল না। কিন্তু ফিটনেসটা যাতে না পড়ে সেই চেষ্টা করেছি। সিঙ্গাপুরে রাত্রি বেলা বের হয়ে ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। যাতে ফিরেই স্বচ্ছন্দে ব্যাটিংটা করতে পারি। আমার মনে হয় সেটা আমাকে চাঙ্গা রেখেছে।’
ইমরুল সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৮ সালে। সাদা পোশাকে তামিম ইকবালের এক সময়ের নিয়মিত ওপেনিং সঙ্গী এখন কোন সংস্করণেই দলে নেই। তার জায়গায় এসে গেছেন সাদমান ইসলামের মতো তরুণরা। সামনে ভারত সফরের আগে দলে জায়গা ফিরে পেতে খেলতে চেয়েছিলেন বড় ইনিংস, ‘আসলে ভাই দেখেন এখন তো অনেক প্রতিযোগিতা। তরুণরা ভালো করছে। এদের মধ্যে জায়গা করতে হলে সব সময়ই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। নিজের সেরাটা দিতে হবে। বড় রান না করলে আসলে টিকে থাকা মুশকিল। ইচ্ছা ছিল বড় রান করব। অবশেষে সেটা হলো। ’
২০১৪ সালে মিরপুরে বিসিএলে ২০ চার ৯ ছক্কায় করেছিলেন ২০৪ রান। প্রথম শ্রেণীতে সেটাই ছিল তার একমাত্র দ্বিশতক। পাঁচ বছর পর আরেকটি এমন ইনিংসের ফল কাজে লাগল কিনা বুঝবেন ভারত সফরে দলে জায়গা পেলেই, ‘যদি সুযোগ পাই (ভারত সফরে) তখন বলা যাবে এটা কাজে লাগবে কিনা, তার আগে তো কিছু বলা যায় না। তবে রান করলে তো নিজের একটা আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। ফিরে আসার জন্য একটা জ্বালানি পাওয়া যায়।’
Comments