পাকিস্তানের নিরাপত্তায় উল্টো ‘দমবন্ধ’ অবস্থায় পড়ে শ্রীলঙ্কা
কড়া নিরাপত্তা দিয়ে শ্রীলঙ্কাকে অতিথি করেছিল পাকিস্তান। প্রথম সারির কয়েকজন ক্রিকেটারকে ছাড়া বিশেষ সেই সফরে তিনটি করে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলে ফিরেছে শ্রীলঙ্কা। নিরাপত্তা নিয়ে কোন সমস্যা না হলেও লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান শাম্মি সিলভা জানান, ক্রিকেটাররা যেখানে প্রায় বন্দিদশার মতো ছিলেন। যা তাদের খেলাতেও প্রভাব ফেলেছে। এমন অবস্থায় পাকিস্তানে টেস্ট খেলা চলতে পারে না বলেও মত তার। তবে বন্ধু বোর্ড প্রধানের এমন মন্তব্য হতাশা ব্যক্তি করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে যায় শ্রীলঙ্কা। ২০০৯ সালে টেস্ট সিরিজ খেলতে যাওয়া লঙ্কানদের দলের উপর সরাসরি সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই পাকিস্তানে বন্ধ আছে খেলা। বার কয়েক বিশেষ ব্যবস্থায় সীমিত আকারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানো হলেও বড় পরিসরে খেলা চালানো যাচ্ছিল না পাকিস্তানে।
এবার পাকিস্তানে বন্ধুত্বের আহবানে সে দেশে দুই ভেন্যুতে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলতে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। যদিও নিরাপত্তার শঙ্কায় প্রথম সারির বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার সফরে যাননি। তবে যারা গেছেন তারা ফিরে এসে জানিয়েছেন তাদের বিরক্তি।
করাচি এবং লাহোর দুই ভেন্যুতেই নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ বাড়াবাড়ি ব্যবস্থা ছিল। ক্রিকেটাররা মাঠ এবং হোটেলের বাইরে কোথায় যেতে পারেননি। চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পাননি, নিজেদের নির্ভার রাখতে পারেননি। এই অবস্থাতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হারলেও দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে শ্রীলঙ্কা।
শাম্মি সিলভা বলেন, ‘আমরা দল পাঠানোয় পাকিস্তান খুশি হয়েছে, কৃতজ্ঞও হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি আমরা খতিয়ে দেখেছি যে। সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলতেই সেখানে দমবন্ধ অবস্থায় পড়তে হয়েছে, টানা পাঁচদিন এসব পরিস্থিতিতে টেস্ট খেলা মুশকিল। কারণ ক্রিকেটাররা হোটেলের বাইরে যেতে পারে না। মাঠ যেতে হলে আধাঘণ্টা আগে সব রাস্তা ফাঁকা করে দিতে হয়। এই কারণে কেউ কোথাও চলতে ফিরতে পারে না স্বচ্ছন্দে।’
তিনি জানান খেলার চাপ সরাতে সিরিজ চলার সময় ক্রিকেটারদের নির্ভার রাখার সুযোগ দরকার, ‘তাদের শপিং করা দরকার, তাদের জৈবিক চাহিদা আছে, বাইরের দুনিয়াটা দেখা দরকার। তারা সারাক্ষণ রুমে বন্দি হয়ে থাকতে চায় না।’
পাকিস্তানে ক্রিকেটাররা অনেকটা বন্দি অবস্থায় থাকায় তারা বোর্ড প্রধানকে বিরক্তির কথাও জানিয়ে জানিয়েছে।
লঙ্কান বোর্ড প্রধানের এমন মন্তব্যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এক উচ্চপদস্থ কর্তা হতাশা জানান, ‘এমন মন্তব্যে আমরা খুবই হতাশ। তাদের চাওয়া মতই তাদের প্রেসিডেন্সিয়াল নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। আমরা চেষ্টা করেছি তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও স্বচ্ছন্দ পরিবেশ দিতে।’
আগামী জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওদের হোম সিরিজ হিসেবে তিন টি-টোয়েন্টি ও দুই টেস্টের খেলার কথা বাংলাদেশের। সে সিরিজটি পাকিস্তানের মাটিতে করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে পিসিবি। লঙ্কান বোর্ড প্রধানের এই মন্তব্য পাকিস্তানে লম্বা সফর করার ব্যাপারে অন্য দলকেও প্রভাব ফেলতে পারে।
Comments