অনাগত শিশুর লিঙ্গ-পরিচয় জানতে

চীনে রক্ত ‘চোরাচালান’

হংকংয়ের সঙ্গে চীনের শেনজেন প্রদেশের সীমান্তে ফুতিয়ান স্থলবন্দরে মধ্যবয়সী এক নারীকে দেখে সন্দেহ হয় চীনা সীমান্তরক্ষীদের। তারা তল্লাশি চালিয়ে সেই নারীর কাছে এক শিশি রক্ত পায়। এমন দৃশ্য চীন-হংকং সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রয়শই দেখা যায়। কেননা, চীনে যা অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ে তা বৈধ।
Blood smuggling in China
ছবি: সংগৃহীত

হংকংয়ের সঙ্গে চীনের শেনজেন প্রদেশের সীমান্তে ফুতিয়ান স্থলবন্দরে মধ্যবয়সী এক নারীকে দেখে সন্দেহ হয় চীনা সীমান্তরক্ষীদের। তারা তল্লাশি চালিয়ে সেই নারীর কাছে এক শিশি রক্ত পায়। এমন দৃশ্য চীন-হংকং সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রয়শই দেখা যায়। কেননা, চীনে যা অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ে তা বৈধ।

চীন সরকার দেশটি থেকে এক-সন্তান নীতি আংশিক তুলে নিলেও, অনেক চীনা দম্পতি কেবল একটি সন্তানের জন্ম দিতে পছন্দ করেন। তখন তারা জানতে চান অনাগত সন্তানটি ছেলে হবে কী না।

দেশটিতে শিশুর লিঙ্গ-নির্ধারণী পরীক্ষা নিষিদ্ধ হওয়ায় গোপন পথে নারীদের রক্তের নমুনা পার্শ্ববর্তী হংকংয়ে পাচার করার প্রবণতা এখন প্রবল। ভবিষ্যৎ মা-বাবারা তাদের অনাগত সন্তানদের লিঙ্গ-পরিচয় জানার জন্যে গোপনে রক্তের নমুনা নিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন হংকংয়ের ক্লিনিকগুলোতে। তবে চীনা সীমান্তরক্ষীদের কড়া নজর এড়িয়ে হংকংয়ে যাওয়া তাদের জন্যে তৈরি করেছে নতুন চ্যালেঞ্জ।

মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে গতকাল (১৪ অক্টোবর) বলা হয়, চীনে অনাগত সন্তানের লিঙ্গ-নির্ধারণী পরীক্ষা নিষিদ্ধ হওয়ায় মূল ভূখণ্ড থেকে হংকংয়ে রক্ত পাচার গত তিন বছরে ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে। রক্তের নমুনাগুলো ভ্রূণের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য হংকংয়ে চোরাপথে পাঠানো হয়, যাতে ভবিষ্যৎ মা-বাবারা তাদের অনাগত সন্তানদের লিঙ্গ পরিচয় জানতে পারেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চীনা নারীদের ভ্রমণের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে হংকং। তবে যারা সেখানে যেতে পারছেন না তারা আশ্রয় নিচ্ছেন রক্ত পাচারের পথে। হংকংয়ে রক্তের শিশি পাচারের মাধ্যমে তাদের অনাগত সন্তানের লিঙ্গ-পরিচয় জানতে মরিয়া হয়ে উঠছেন তারা। প্রতিদিনই সীমান্ত পার হতে গিয়ে সীমান্তরক্ষীদের হাতে রক্তের শিশিসহ ধরা পড়ছেন অনেক নারী। এমনকী, রক্তের শিশিসহ ধরা পড়ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থরাও। কেননা, চোরাকারবারীরা তাদেরকে এ কাজে ব্যবহার করছেন। শুধু তাই নয় রক্ত পাচার করতে অনেককে বেছে নিতে হচ্ছে অদ্ভুতসব কৌশল।

সীমান্তরক্ষীদের চোখ এড়াতে গর্ভবতী মহিলারা কখনো মৃত পশুর দেহ বা স্ন্যাকসের বাক্সের মধ্যে নমুনা রক্তের শিশিটি লুকিয়ে রেখে তা হংকংয়ে নিয়ে আসেন।

টুইটারের মতো চীনা মাইক্রোব্লগিং সাইট ওয়েইবোতে কয়েক ডজন সংস্থা রয়েছে যারা এই পরিষেবাটি সরবরাহ করে থাকে। এ জাতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি সিএনএনকে বলেন, “মহিলারা যখন ছয় থেকে সাত সপ্তাহের গর্ভবতী হন তখন তারা (রক্ত) পরীক্ষা শুরু করতে পারেন।”

এখন সীমান্তরক্ষীদের হাতে ধরা পড়া এড়াতে এবং ডাক পরিষেবা ব্যবহার করে সরাসরি হংকংয়ে মেইল করার জন্য উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে নারীদের। সেই বিক্রয় প্রতিনিধি আরো বলেন, “আমরা এখন আর ম্যানুয়াল কুরিয়ারগুলি ভাড়া করি না। এটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি সরকার আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।”

হংকং কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সরকারের কোনো নিবন্ধিত চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে রক্ত পরীক্ষা করার কথা বললে হংকংয়ের ল্যাবগুলোতে সেগুলো পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকে না। তবে বাস্তবতা হচ্ছে- অনেক ল্যাবই সেই ব্যবস্থাপত্রের জন্যে অপেক্ষা করে না।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago