বাবাকে অস্ত্রোপচার টেবিলে রেখে ভারতকে বাঁচান আদিল
খেলার ৭৩তম মিনিটে নিশ্চিত দ্বিতীয় গোল পেতে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। গোল লাইন থেকে বল ফিরিয়ে ভারতকে বাঁচান আদিল খান। ৮৮তম মিনিটে সেই আদিলই দারুণ হেডে হারতে যাওয়া ম্যাচে ভারতকে এনে দেন স্বস্তির ড্র। অথচ এই আদিল সেদিন দেশের হয়ে খেলতে নেমেছিলেন বাবাকে অস্ত্রোপচার টেবিলে রেখে।
খেলার দিন বিকালে টিম মিটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন আদিল। তখনই আসে অপ্রত্যাশিত ফোন কল। সাধারণত খেলার দিনে ফোন-টোন ধরতে চান না। কিন্তু এই ফোন যে তাকে ধরতেই হয়। ফোনের ওপাশ থেকে শুনতে পান বাবা বদরুদ্দিন খান হার্টে দুটো ব্লক নিয়ে হাসতাপাতালে ভর্তি, লাগবে জরুরী অস্ত্রোপচার।
এমন দুঃসংবাদ পেয়ে ছুটে যাওয়ারও অবস্থা নেই। একটু পরই যে তাকে নামতে হবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। আদিল যখন বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, তার বাবা তখন অস্ত্রোপচার টেবিলে।
২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে শক্তিতে অনেক এগিয়ে থাকা ভারত সেদিন বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি। রক্ষণভাগের খেলোয়াড় আদিল নিজের সেরাটা না দিলে তো হারতেই হতো র্যাঙ্কিংয়ে ৮৩ ধাপ এগিয়ে থাকা ভারতকে। কেবল রক্ষণ সামলেই ক্ষান্ত হননি আদিল। নিজের ব্যক্তিগত অস্থিরতা মাথায় নিয়েও শেষ মুহূর্তে গোল করে দেশকে হার থেকে বাঁচিয়েছেন। ম্যাচ হয় ১-১ গোলে ড্র।
বাবার অসুস্থতায় মানসিক অস্থিরতা নিয়ে নেমেছিলেন। কিন্তু নেমে দিয়েছেন নিজের সেরাটা। অম্ল-মধুর এক পরিস্থিতিতে তাই আবেগের বান। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এই ফুটবলার বলছিলেন তার মনের খবর, ‘খেলার আগে আমি আপসেট ছিলাম। এই পরিস্থিতিতে তুমুল জনস্রোতের মাঝে শেষ মুহূর্তের গোল করা ছিল ভীষণ আবেগী ব্যাপার।’
‘আমার পুরো ক্যারিয়ারে খেলার সময় অন্য কিছুই মাথায় আনিনি। মাঠে নামলে ওই ৯০ মিনিটই থাকে আমার সব জুড়ে। কিন্তু সবার জীবনেই ব্যক্তিগত সংকট তৈরি হয়।’
ম্যাচ শেষে অবিস্মরণীয় গোল নিজের বাবাকে উৎসর্গ করেছেন। আশার খবর আদিলের বাবাও কিছুটা সুস্থ, নিজের নৈপুণ্যেও খুশিও তিনি, ‘নিজের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। যদিও মনে করি প্রথমার্ধে আরও ভালো খেলা যেত। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে আমরা তিন-চার গোল দিতে পারতাম।’
Comments