মেননের দাবি- গণমাধ্যমে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে

শনিবার বরিশাল শহরের অশ্বিনী কুমার হলে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বরিশালে গতকাল শনিবার বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান রাশেদ খান মেনন যে বক্তব্য দিয়েছেন তা গণমাধ্যমে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। মেনন বলছেন, তার সম্পূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন না হওয়ায় জাতীয় রাজনীতি ও ১৪ দলের রাজনীতিতে একটা ভুল বার্তা গেছে।

দলের জেলা সম্মেলনে মেনন বলেছিলেন, জনগণ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। আমি সাক্ষী দিয়ে বলছি, এই নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি, কিন্তু জনগণ ভোট দিতে পারেনি।

তার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ রোববার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির জোটসঙ্গী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে কাদের বলেছেন, “মেনন মন্ত্রী হলে কি এ কথা বলতে পারতেন?” নির্বাচন শেষ হওয়ার এত দিন পর কেন সাবেক এই মন্ত্রী নির্বচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কথা তুলছেন সেই প্রশ্নও রেখেছেন ওবায়দুল কাদের।

বরিশাল শহরের অশ্বিনী কুমার হলে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনে গতকাল মেনন বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমি নিজেও আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। অথচ আজ সেই ভোটে সাধারণ জনগণ নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারছে না। এমনকি উপজেলা নির্বাচন, ইউনিয়ন নির্বাচনেও ভোটের অধিকার হারাচ্ছে মানুষ।”

এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আজ এক বিবৃতিতে মেনন বলেন, আমার একটি বক্তব্য সম্পর্কে জাতীয় রাজনীতি ও ১৪ দলের রাজনীতিতে একটা ভুল বার্তা গেছে। আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ উপস্থাপন না করে অংশ বিশেষ উত্থাপন করায় এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই এ যাবতকালের নির্বাচন ১৪ দলের সংগ্রামেরই ফসল এবং সরকারও গঠিত হয়েছে ১৪ দলের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আজকে মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতার যে বিপদ বিদ্যমান তাকে মোকাবেলা করতে ১৪ দলের ওই সংগ্রামকেই এগিয়ে নিতে হবে।

“আমি কেবল এখনই নয়, জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে আমি পার্লামেন্টে রাষ্ট্রপতি ভাষণের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলাম একাদশ সংসদের সফল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু অভিজ্ঞতাটি সুখকর নয়। বিএনপি-জামাত নির্বাচনে আসলেও নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা, নিদেন পক্ষে জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার কৌশল প্রয়োগ করেছে নির্বাচনে। ... এটা যেমন সত্য তেমনি এ ধরনের পরিস্থিতিতে অতি উৎসাহী প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বাড়াবাড়ি করতে পারে। কিন্তু তাতে এই নির্বাচন অশুদ্ধ বা অবৈধ হয়ে যায় না।”

রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের সেই ভিডিও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়।

ভিডিওতে মেননকে বলতে শোনা যায়, “এই নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। আমি সাক্ষী দিয়ে বলছি, আমি জনগণ, সেই জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। ইউনিয়ন পরিষদে পারে না, উপজেলায় পারে না। তাহলে শেখ হাসিনা আপনি আমি মিলে যে ভোটের জন্য লড়াই করেছি ঘেরাও করেছি আজিজ কমিশনকে আমরা ১ কোটি ১০ লাখ ভুয়া ভোটারের সেই তালিকা ছিঁড়ে ফেলার জন্য নির্বচন বর্জন করেছিলাম নমিনেশন পেপার সাবমিট করার পরে। আজকে কেন আমার দেশের মানুষ, আমার ইউনিয়ন পরিষদের মানুষ, আমার উপজেলার মানুষ, আমার জেলার মানুষ, আমার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে আসবে না?”

“উন্নয়ন মানে গণতন্ত্র হরণ নয়, উন্নয়ন মানে ভিন্ন মতের সংকোচন নয়, উন্নয়ন মানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ নয়, উন্নয়ন মানে গণতন্ত্রের স্পেস কমিয়ে দেওয়া নয়।”

মেননের এই বক্তব্যই গণমাধ্যমে আসার পর, লিখিত বিবৃতি দিয়ে এর প্রতিক্রিয়া জানালেন তিনি।

আরও পড়ুন: 

আমি সাক্ষী, সংসদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি: মেনন

মেনন মন্ত্রী হলে কি এ কথা বলতে পারতেন: কাদের

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

2h ago