দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য পেতে দূরদর্শী নীতি নির্ধারক দরকার: সাকিব

দেশের ক্রিকেট নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করার কথা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু আদতে এর কোনো অস্তিত্ব আছে কি? না-কি কেবল আশার মুলো দেখিয়েই খালাস?
shakib
সাকিব আল হাসান। ছবি: খালিদ হুসাইন অয়ন

দেশের ক্রিকেট নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করার কথা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু আদতে এর কোনো অস্তিত্ব আছে কি? না-কি কেবল আশার মুলো দেখিয়েই খালাস?

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলনেতা সাকিব আল হাসানের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হলো- বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তিন-চার বছর আগেই বলেছিলেন, তারা লং-টার্ম (দীর্ঘমেয়াদী) পরিকল্পনা করবেন। কিন্তু সেটা হয়নি। বরং এখনও বলা হচ্ছে, তার পরিকল্পনা করবেন...

মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে সাকিব হেসে উত্তর দেন, ‘সেটা তো আপনি পাপন ভাইকে জিজ্ঞেস করবেন...আমাকে করছেন কেন!’ সেই সঙ্গে তেতো সত্যটা বলতেও দ্বিধা করেননি তিনি, ‘আমি দেখিনি (দীর্ঘমেয়াদী পরকল্পনা)। আমি বলতে পারব না।’

রবিবার (২০ অক্টোবর) নিজের বাসায় দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব কথা বলেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের গুরুত্বপূর্ণ সব ইস্যু নিয়ে। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য পেতে পরিকল্পনা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ একজন দূরদর্শী নীতি নির্ধারক থাকা যিনি পরিকল্পনা করবেন এবং সেখানেই থেমে যাবেন না, সেগুলোকে বাস্তবায়নও করবেন।

শুরুতে সাকিব বলেছেন বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে, ‘যখন যে সিরিজ বা টুর্নামেন্টটা হয়, আমরা সেটা নিয়েই ফোকাস করি। তবে যদি বিশ্বকাপ বা অন্য কোনো বড় টুর্নামেন্ট থাকে, তাহলে ছয় মাস বা আট মাস আগে থেকে পরিকল্পনা করা হয়। তারপরও চলমান (কারেন্ট) সিরিজ নিয়ে আমরা চিন্তায় থাকি। এটা আসলে আমাদের সংস্কৃতিগত কারণেও। মানুষ প্রত্যাশা করে, আমরা সব ম্যাচই জিতব। আমরা গাছ লাগিয়ে পরদিনই ফল পেতে চাই। তাই স্বাভাবিকভাবেই এটা কঠিন হয়ে যায়।’

এরপর তিনি জানিয়েছেন, নীতি নির্ধারক পর্যায়ে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কাউকে দরকার বাংলাদেশের ক্রিকেটে, ‘আসলে এমন কারও দায়িত্বে থাকা উচিত, যিনি দল নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। দীর্ঘ মেয়াদে একজন একজন নীতি নির্ধারক দরকার। তখন অনেক কিছু ভালো হবে। অনেক কিছু পাল্টানোর আছে। এটা আসলে টেকনিক্যাল ব্যাপার। ছোট ছোট অনেক সূত্র ধরে ধরে ঠিক করতে হবে। যেমন- উইকেটরক্ষক, বোলার, বাঁহাতি স্পিনার, অফ স্পিনার, লেগ স্পিনার, চায়নাম্যান, ভালো পেস বোলার, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের জন্য ভালো বোলার। সবকিছুই। যেমন- খুব জোরে বল করতে হয় না। ১১০ কিলোমিটারে বল করেও অনেকে টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে পারে। আবার ওয়ানডে ফরম্যাটে কী ধরনের খেলোয়াড় খেলবে, এ সবকিছু মিলিয়ে যদি কেউ একজন পরিকল্পনা করে, তাহলে খুব ভালো হবে।’

এক্ষেত্রে সাকিব উদাহরণ টানেন বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের যারা কি-না চার বছর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল, ‘ওদের (ইংল্যান্ডের) যেমন একজনই সকল পরিকল্পনা করেন- অ্যান্ড্রু স্ট্রস (দেশটির ক্রিকেট পরিচালক)। শেষ চার বছর ধরে দলটির ক্রিকেট বিষয়ক পরিকল্পনা কিন্তু ওই একজনেরই। ওরকম একজনকে দরকার। যিনি কেবল ক্রিকেট নিয়েই পরিকল্পনা করবেন, বাকিরা তো সঙ্গে থাকবেই। তবে এমন কাউকে দরকার, যার দূরদৃষ্টি রয়েছে। এরকম একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষ দিয়ে যদি পরিকল্পনা করা যায়, তাহলে ভালো ফল আসবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago