শেখ কামাল ক্লাব কাপের তৃতীয় আসর থেকে যা জানা গেল

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের পর্দা নেমেছে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর)। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ফাইনালে স্বাগতিক দল চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে মালয়েশিয়ার টেরেঙ্গানু এফসি।
Ctg Abahani
ছবি: বাফুফে

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের পর্দা নেমেছে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর)। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ফাইনালে স্বাগতিক দল চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে মালয়েশিয়ার টেরেঙ্গানু এফসি।

প্রতিদ্বন্দ্বিতার মান বেড়েছে, আয়োজনের মান নিয়ে প্রশ্ন

ক্লাব কাপের তৃতীয় আসর বসেছিল এবার। প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্তরা একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন, মাঠে যে ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবার হয়েছে, তার মান নিঃসন্দেহে আগের দুই আসরের চেয়ে ভালো।

পাঁচ দেশের আটটি দল অংশ নেয় সদ্যসমাপ্ত আসরে। এদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে দুটি, ভারত থেকে সর্বোচ্চ তিনটি এবং মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ ও লাওস থেকে একটি করে ক্লাব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

বরাবরের মতো এবারও প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ও চট্টগ্রাম আবাহনী। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যোগাযোগের ঘাটতি ছিল বেশ দৃষ্টিকটু।

তাছাড়া ফাইনালে ওঠা দুই ক্লাবকে দশ দিনের মধ্যে পাঁচটি করে ম্যাচ খেলতে হয়েছে। এতে করে মাঠে সেরা নৈপুণ্য দেখানোটা খেলোয়াড়দের পক্ষে বেশ কঠিন ছিল। পাশাপাশি বারবার সূচি বদল করাটাও দলগুলোকে অসুবিধায় ফেলেছে।

গোল উৎসব

২০১৫ সালে ক্লাব কাপের প্রথম আসরে হয়েছিল ৫৪ গোল। সে রেকর্ড এবার ভেঙে গেছে। ১৫ ম্যাচে হয়েছে ৫৯ গোল। তবে আগের (২০১৭) আসরের চিত্র ছিল একেবারে ভিন্ন। মাত্র ৩৬ গোল হয়েছিল সেবার।

গোল উৎসবের পেছনে ক্লাবগুলোর রক্ষণের দুর্বলতাকে মুখ্য করে দেখার উপায় নেই। বরং যাদের আক্রমণভাগ শক্তিশালী ছিল, তারাই সফলতা পেয়েছে। দলগুলো যে সব বিদেশি ফুটবলার খেলিয়েছে, তাদের অধিকাংশই আক্রমণভাগের খেলোয়াড়।

বিদেশি খেলোয়াড়দের দাপট

আসরের নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি দল সর্বোচ্চ ছয়জন বিদেশি স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছে। আর প্রতি ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছেন পাঁচজন করে।

কেবল লাওসের ইয়ং এলিফ্যান্টস ক্লাবের স্কোয়াডে কোনো বিদেশি ফুটবলার ছিল না। তারা ঘরোয়া খেলোয়াড়দের নিয়ে আসরে অংশ নিয়েছে। কিন্তু তাদের অভিযান থামে গ্রুপ পর্বে।

প্রতিযোগিতার ৫৯ গোলের ৩৯টিই করেছেন বিদেশিরা। এতে করে যে বাস্তবতা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে ওঠে তা হলো, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর স্থানীয় স্ট্রাইকাররা তাদের বিদেশি সতীর্থদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে।

দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা ফুটবলকেও ভালোবাসেন

ক্লাব কাপের সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রামে। তবে উত্তেজনার ঢেউ কেবল বন্দরনগরীতে সীমাবদ্ধ ছিল না। গোটা বাংলাদেশের মানুষ বুঁদ ছিল ফুটবল উন্মাদনায়। বিশেষ করে, দুই স্থানীয় ক্লাব- চট্টগ্রাম আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচগুলোতে স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।

গেল কয়েকদিনে দেশের ক্রিকেট অঙ্গনের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝড়। এই সংকটময় পরিস্থিতির মাঝেও ক্লাব কাপ নিয়ে বাড়তি আগ্রহ ছিল গণমাধ্যমের।

উন্মাদনা কেবল দেশেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বিদেশি যে সব ক্লাব খেলতে এসেছিল, তাদের ভক্ত-সমর্থকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য মাধ্যমে সরব ছিলেন।

ধার করে রানার্সআপ

ক্লাব কাপের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আয়োজক চট্টগ্রাম আবাহনী। এবার তারা হয়েছে রানার্সআপ। তবে দুবারই তারা ফাইনালে জায়গা করে নেয় অন্যান্য ক্লাব থেকে ধার করা খেলোয়াড় দিয়ে। এবারের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের শুরুর একাদশে দলটির নিজস্ব ফুটবলার ছিল মাত্র একজন।

ফলে আসরে অংশ নেওয়া ক্লাবগুলোর একটির কোচ চট্টগ্রাম আবাহনীকে 'নকল দল' হিসেবেও অভিহিত করেছেন। তাদের কোচের দায়িত্বে থাকা মারুফুল হকেরও বাস্তবতাটা জানা।

ফাইনালে হারের পর বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম সেরা এই কোচ বলেছেন, যদি চট্টগ্রাম আবাহনী শিরোপা জিতেও যেত, তাহলেও ক্লাবটিতে বা দেশের ফুটবলে কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়ত না।

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago