নিউজিল্যান্ডকে নাটকীয় জয় এনে দিলেন সাউদি-ফার্গুসন-টিকনার
শেষ ৩১ বলে ৪২ রান চাই ইংল্যান্ডের। হাতে রয়েছে ৮ উইকেট। উইকেটে আছেন থিতু হয়ে যাওয়া জেমস ভিন্স ও অধিনায়ক ইয়ন মরগান। এমন সমীকরণে জয় ছিল তাদের হাতের নাগালে। কিন্তু ইংল্যান্ডের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচটি বের করে নিল নিউজিল্যান্ড। ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করলেন কিউই দলনেতা টিম সাউদি, ব্লেয়ার টিকনার ও লোকি ফার্গুসন। রান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তারা তুলে নিলেন গুরুত্বপূর্ণ সব উইকেট। ফলে ইংলিশদের বিপক্ষে নাটকীয় জয় পেল স্বাগতিকরা।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নেলসনে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৪ রানে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে হারের পর টানা দুটিতে জিতে তারা এগিয়ে গেছে ২-১ ব্যবধানে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু পায় নিউজিল্যান্ড। ওপেনার মার্টিন গাপটিল চড়াও হন প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর। উদ্বোধনী জুটিতে ৩.৫ ওভারে আসে ৪০ রান, সেখানে তার অবদান ৩৩। ১৭ বলের ইনিংসে ৭ চার মেরে প্যাট ব্রাউনকে ফিরতি ক্যাচ দেন গাপটিল। এরপর ছন্দপতন। দলীয় ৪২ রানে টম কারানের ডেলিভারিতে বিদায় নেন আরেক ওপেনার কলিন মুনরো। টিকতে পারেননি টিম সেইফার্টও। তার উইকেটটি নেন অভিষিক্ত ম্যাট পার্কিনসন।
৬৯ রানে ৩ উইকেট হারানো কিউইরা এরপর পায় তাদের ইনিংসের সেরা জুটিটি। চতুর্থ উইকেটে ৪৪ বলে ৬৬ রান যোগ করেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ও রস টেইলর। এতে বড় সংগ্রহের জ্বালানী পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ডি গ্র্যান্ডহোম তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। ৩৫ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৫৫ রান করেন তিনি। তাকে ফেরান টম কারান। সঙ্গী হারিয়ে টেইলরও মাঠ ছাড়েন দ্রুত। ২৪ বলে ২৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
শেষদিকে জিমি নিশামের ১৫ বলে ২০ ও মিচেল স্যান্টনারের ৯ বলে ১৫ রানের কল্যাণে নিউজিল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান পর্যন্ত পৌঁছায়। ইংল্যান্ডের হয়ে ২৯ রানে রানে ২ উইকেট নিয়ে সফল বোলার টম কারান। বেধড়ক মার খান পেসার সাকিব মাহমুদ। টেইলরের উইকেট নিলেও খরচ করেন ৪৯ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় ইংল্যান্ডও শুরু থেকেই ছিল দুরন্ত। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা টম ব্যান্টন ও ডাভিড মালান প্রতিপক্ষ বোলারদের পরীক্ষায় ফেলেন। তবে ব্যান্টনকে বেশিদূর এগোতে দেননি টিকনার। ১০ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ১৮ রান করেন তিনি। দলীয় ২৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় ইংলিশরা। এরপর ভিন্সের সঙ্গে ৪৫ বলে ৬৩ রানের জুটি গড়েন মালান। তিনি তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি। ৩৪ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৫৫ রান করে ইশ সোধির শিকার হন মালান।
তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক মরগানকে নিয়ে ভিন্স ২৮ বলে ৪৯ রান যোগ করেন। তখন ম্যাচ হেলে ছিল ইংলিশদের দিকেই। কিন্তু ১৫তম ওভারের শেষ বলে ১৩ বলে ২ ছয়ে ১৮ রান করা মরগান স্যান্টনারের বলে আউট হলে পাল্টে যায় চিত্র। পরের ওভারে মাত্র ৩ রান দেন সাউদি, স্যাম বিলিংস হন রানআউট। ১৭তম ওভারে ৫ রানের বিনিময়ে ভিন্সের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি নেন পেসার টিকনার। ভিন্স ৩৯ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে ৪৯ রান করেন।
১৮তম ওভারে নিজের বিধ্বংসী রূপ দেখান গতিতারকা ফার্গুসন। ৩ রান খরচায় ফেরান লুইস গ্রেগরি ও স্যাম কারানকে। ফলে মাত্র ১০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ইনিংসের শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৯ রান দরকার ছিল তাদের। তবে সাউদি আরেকটি দুর্দান্ত ওভার করে মাত্র ৪ রান দেন। তাতে ৭ উইকেটে ১৬৬ রানে থামে সফরকারীরা। সাউদি ৪ ওভারে দেন ২৮ রান, উইকেট অবশ্য পাননি। টিকনার ও ফার্গুসন দুজনেই ২৫ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
ম্যাচসেরা হন ডি গ্র্যান্ডহোম। আগামী ৮ নভেম্বর নেপিয়ারে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুদল। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায়।
Comments