কেন এমন লড়াইবিহীন হার?

Naim Sheikh
ছবি: বিসিবি

দিল্লিতে দাপুটে জয়ে ভারতকে হারিয়ে তাগিদ নিয়েই রাজকোটে এসেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখানে জেতা তো দূরে থাক, ন্যূনতম লড়াই আসেনি মাহমুদউল্লাহদের কাছ থেকে। কেন এভাবে হার, অধিনায়কের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি জুতসই জবাব। তবে উইকেট যে একটা কারণ তা বেরিয়ে এসেছে নানা কথায় আর খেলার ধরনে।

১৫৩ রানের পুঁজি নিয়ে লড়াই করার কথা নয়, হয়নিও। রোহিত ৪৩ বলে ৮৫ রানের তাণ্ডব তুলে দেখিয়ে দিয়েছেন নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে দুই দলের তফাৎ।

মূলত মন্থর উইকেট হলেই বড় প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা সহজ বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু উইকেট যদি নিখাদ ব্যাটিং-বান্ধব হয়, তাহলেই উল্টো বিপদ। কারণ এখনো টি-টোয়েন্টিতে বিশাল সংগ্রহ গড়ার সামর্থ্য প্রশ্নাতীত নয় বাংলাদেশের। বিস্ফোরক ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যানের অভাবও আছে দলে।

দিল্লির উইকেটে ব্যাটে বল আসছিল মন্থর গতিতে। গতির তারতম্যে ফাঁদে পড়ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। আগ্রাসী ব্যাট করার সামর্থ্য থাকলেও এমন উইকেটে খুব বেশি তফাৎ তৈরি করা সম্ভব ছিল না ভারতীয়দের। ফলে ম্যাচ হয়েছে কম রানের। মন্থর উইকেটে খেলে অভ্যস্ত থাকা বাংলাদেশের জন্য তাই রান তাড়ার সুযোগ বেড়ে যায় অনেকটাই।

ঠিক উল্টো পরিস্থিতি হয়েছে রাজকোটে। এখানকার উইকেটে বল ব্যাটে আসছিল স্বচ্ছন্দে। হিসাব-নিকাশ করে এগিয়ে ঝড় তোলার জন্য সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাইশ গজ ছিল আদর্শ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল খুবই জুতসই। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে আসে ৫৪। কিন্তু এরপরের চার ওভারে আসে মাত্র ২৪। অর্থাৎ প্রথম দশ ওভারে ৭৮, পরের দশ ওভারে যেখানে আসার কথা কমপক্ষে আরও একশো রান, সেখানে বাংলাদেশ আনতে পেরেছে কেবলই ৭৫ রান।

উইকেট হাতে নিয়েও শেষে ঝড় তোলা যায়নি। শুরুতে টানা তিন চারে শুরু করা ওপেনার নাইম শেখ ডট বলে চাপ বাড়িয়ে ফেরেন ৩১ বলে ৩৬ করে (স্ট্রাইক রেট ১১৬.১৩)। লিটন দাস (২১ বলে ২৯) তার আগেই কাবু হন একাধিক জীবন পেয়েও। তার স্ট্রাইক রেট অবশ্য নাইমের চেয়ে বেশি (১৩৮.১০)। এরপর বলার মতো খেলেছেন কেবল সৌম্য সরকার (২০ বলে ৩০) আর মাহমুদউল্লাহ (২১ বলে ৩০)। দুজনের স্ট্রাইক রেটই চাহিদা মেটানো। কিন্তু ইনিংস টেনে নেওয়ার যে চাহিদা, তা তারা কেউই পূরণ করতে পারেননি।

শেষ দিকে ঝড় তোলার বদলে বল নষ্ট করেছেন আফিফ হোসেন (৮ বলে ৬) আর মোসাদ্দেক হোসেন (৯ বলে ৭)। দুজনের অ্যাপ্রোচই ছিল দৃষ্টিকটু। নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে আগ্রাসন দেখিয়ে নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ তারা নিতে পারেননি।

বাংলাদেশ খেলা হেরে যায় এখানেই। যেহেতু উইকেটে গতির তারতম্য হচ্ছে না, বাংলাদেশের বোলারদের করার ছিল সামান্যই। পাটা উইকেটে রোমাঞ্চকর শট খেলার মঞ্চ পেয়ে যান রোহিতরা, টপাটপ রান তুলে দ্রুত দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেন বাংলাদেশকে।

চার ওভারে ২৫ রান নিয়ে ১ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ভোগানো ওয়াশিংটন সুন্দরও ঠিক এই জায়গাতেই দেখেছেন পার্থক্য। দিল্লিতে উইকেটের ধরনেই একটা চেনা পরিস্থিতি পেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ, যা মেলেনি রাজকোটে, ‘বাংলাদেশ অমন উইকেটে (মন্থর) খেলে অভ্যস্ত। আপনি যদি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের খেলা দেখেন, তাহলে দেখবেন, ওখানে দিল্লির সেদিনের মতোই উইকেট থাকে। কাজেই যখন ওরকম উইকেট ওরা পায়, মানিয়ে নিতে পারে ভালোভাবে। হ্যাঁ, সেদিন তারা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেই জিতেছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

13m ago