উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু
বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশের অভিমুখে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে বাগেরহাট ও খুলনার উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
ওই এলাকা থেকে দ্য ডেইলি স্টারের স্থানীয় সংবাদাতারা জানান, দুই জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় আজ শুক্রবার সকাল বৃষ্টি ঝরছে। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় জরুরি বৈঠক করেছে বাগেরহাট জেলা প্রশাসন।
আমাদের বাগেরহাট সংবাদদাতা জানান, ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে বাগেরহাটের উপকূলজুড়ে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এ বৃষ্টি শুরু হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে মোংলাসহ দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে চার নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে গভীর সাগরে না গিয়ে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশীদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর বিষয়ে সব সরকারি কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জরুরি সভা করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি।
খুলনায় প্রস্তুত ৩৩৮ সাইক্লোন সেল্টার
বুলবুলের প্রভাবে খুলনায় সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় খুলনা জেলাসহ ৯ উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি ৩৩৮টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার বলেন, বিকেল ৪টায় খুলনা সার্কিট হাউজে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব মোকাবেলা ও সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করেছে জেলা প্রশাসন। উপকূলীয় দাকোপ ও কয়রা উপজেলায় ২৪০৬০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গত মধ্যরাতে (০৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
Comments