রোহিঙ্গা বিষয়ে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিলো গাম্বিয়া

rohingya influx
হত্যা-নির্যাতন থেকে বাঁচতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। রয়টার্স ফাইল ছবি

সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আজ (১১ নভেম্বর) মিয়ানমারের নামে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

গাম্বিয়ার আইনজীবীরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এ মামলায় মিয়ানমারের গণহত্যার আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার ব্যবস্থা বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে জরুরিভাবে আদেশ দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে গাম্বিয়া এ মামলা করেছে।

বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এক কঠোর বিদ্রোহ দমন অভিযান শুরু করে। সেসময় গণধর্ষণ, হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াসহ জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান গত মাসে সতর্ক করে দিয়েছে যে সেখানে গণহত্যার পুনরাবৃত্তির গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে।

সেই সঙ্গে মিশন গত সেপ্টেম্বরে তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে জানায়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আইনি অঙ্গনে মিয়ানমারের জবাবদিহি আদায় করা উচিত।

বিশ্বআদালত হিসেবে পরিচিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের অভিযানের মধ্যে ছিলো হত্যা, গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সাধন, ভৌত বিনাশ বয়ে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরি, জন্মরোধের ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া ও জোরপূর্বক স্থানান্তর। এগুলো গণহত্যার বৈশিষ্ট্য। কারণ এসবের উদ্দেশ্য ছিলো রোহিঙ্গা গোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়া।

গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবুবাকার মারি তামবাদো এক বিবৃতিতে বলেন, “রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের চালানো গণহত্যার বিচার ও জবাবদিহি চাইতে এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে বৈশ্বিক আচরণ যা সব রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক তাকে সমর্থন ও জোরদার করতে গাম্বিয়া এ পদক্ষেপ নিচ্ছে।”

এর আগে গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কৌঁসুলি গাম্বিয়ার নাগরিক ফেতুউ বেনসোদা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে চালানো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরুর জন্য বিচারকদের অনুমতি চান।

তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেওয়া দেশ মিয়ানমার এ আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য না হওয়ায় তিনি সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশে তদন্ত চালাতে চান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত রাষ্ট্রগুলোর মাঝে বিরোধ মীমাংসা করে দেয়। দুটি আদালতই দ্য হেগে অবস্থিত।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হো দা সোন গত মাসে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনকে একতরফা হিসেবে আখ্যায়িত করে দাবি করেন, এটি বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গৌণ উৎসের ভিত্তিতে তৈরি। তিনি বলেন যে মিয়ানমার জবাবদিহির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয় এবং বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষের বাংলাদেশে গমনের কারণ হওয়া সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

JCD blocks Shahbagh again demanding justice for Shammo murder

The protesters also demanded the resignation of the vice-chancellor and proctor of Dhaka University

19m ago