অভিযুক্ত সবার ফাঁসি দাবি আবরারের মায়ের
আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের দিন থেকে টেলিভিশন দেখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তার মা রোকেয়া খাতুন। তবে ছেলের সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশ আজ অভিযোগপত্র জমা দিতে চলেছে জানার পর সকাল থেকেই টেলিভিশনের সামনে বসে ছিলেন তিনি।
অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়ার খবর দেখার পর চিৎকার করে হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করতে থাকেন তিনি।
অভিযোগপত্র দ্রুত জমা দেওয়ায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আবরারের বাবা বরকতউল্লাহ। তার দাবি, যেভাবে দ্রুততার সঙ্গে অভিযোগপত্র দেওয়া হলো, বিচার প্রক্রিয়াও যেন সেই গতিতেই চলে।
খুনিদের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করে তিনি বলেন, হত্যাকারীদের ফাঁসি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে আর কেউ এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস পাবে না।
আজ (১৩ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার তদন্ত কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে উল্লেখিত আসামিরা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৩তম ব্যাচ), মুহতাসিম ফুয়াদ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৪তম ব্যাচ), অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), ইফতি মোশাররফ সকাল (বায়ো মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), মনিরুজ্জামান মনির (পানিসম্পদ বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), মো. মাজেদুর রহমান (ম্যাটেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), মোজাহিদুর রহমান (ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), হোসেন মোহাম্মদ তোহা (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), জিসান (ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), মো. আকাশ (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), মো. শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), নাজমুল শাদাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), এহতেশামুল রাব্বি তানীম (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), মোয়াজ আবু হোরাইরা (কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), মুনতাসির আল জেমি (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), মুজতবা রাফিদ (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ইসতিয়াক হাসান মুন্না (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৭তম ব্যাচ), মিজানুর রহমান (পানিসম্পদ বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) ও মাহামুদ সেতু (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৪তম ব্যাচ)।
এদের মধ্যে, ২১ জন আসামি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেও জিসান, আজতেসামুল রাব্বি তানীম, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম ও মুজতবা রাফিদ এখন পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন।
এর আগে, গত ১৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, “বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে।”
সেসময় মন্ত্রী বলেন, “এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করেছি। এই মামলার নির্ভুল অভিযোগপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবরারের পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পায়, তার ব্যবস্থা করা হবে।”
Comments