ভারতীয় পেসের সামনে নড়বড়ে বাংলাদেশ

Shadman Islam

লাল মাটির শক্ত উইকেট, আছে ঘাসের ছোঁয়া। সকালের আর্দ্রতায় এমন উইকেট পেসারদের জন্য লোভনীয়। তবে নড়বড়ে টেকনিক আর ভুল প্রয়োগে সময়টা আরও ভীতি-জাগানিয়া হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য। দারুণ বল করে সকালের সেশন তাই পুরোটাই রাজত্ব করলেন ভারতীয় পেসাররা, যেখানে টিকে থাকার সংগ্রামে বিপর্যস্ত দশা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রথম দিনের প্রথম সেশন: বাংলাদেশ ২৬ ওভারে ৬৩/৩ (সাদমান ৬, ইমরুল ৬, মুমিনুল ব্যাটিং ২২*, মিঠুন ১২, মুশফিক ব্যাটিং ১৪*; ইশান্ত ১/১২, উমেশ ১/২৬, শামি ১/১২, অশ্বিন ০/১১)।

তথ্য

ভারতের তিন পেসার ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদব আর মোহাম্মদ শামি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ৩ উইকেট। তিনজনই দেখিয়ে চলেছেন পেসের ঝাঁজ। প্রথম ১৯ বল পর রান পায় বাংলাদেশ। প্রথম ঘণ্টায় তোলে মাত্র ১৯ রান, হারায় ২ উইকেট। প্রথম সেশনে মাত্র ৪ ওভার স্পিন করিয়েছে ভারত। ইনিংসের ১৫তম ওভারে আক্রমণে এসে চার ওভার বল করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

ইমরুল কায়েস

যেকোনো উইকেটেই শুরুতে বেশ কিছুটা নড়বড়ে থাকেন ইমরুল কায়েস। ইন্দোরে ভারতীয় পেসের সামনে নেমে তার অবস্থা হয় আরও সঙ্গিন। প্রতি বলেই মনে হচ্ছিল, তিনি আউট হতে চলেছেন। ইশান্ত শর্মা কিছুটা বাইরে বল করছিলেন বলে তার খেলা কিছুটা সহজ হচ্ছিল। কিন্তু উমেশ যাদব নাজেহাল করে তোলেন ইমরুলের সময়। গতি, বাউন্স আর মুভমেন্টে বিপর্যস্ত ইমরুলের কাঁপুনি বাড়ে কয়েকগুণ।

উমেশকে খেলতে না পারায় দমবন্ধ পরিস্থিতি থেকেই হয়তো বেরুনোর পথ খুঁজছিলেন। কিন্তু তা আর মেলেনি। উমেশের আচমকা লাফানো বল নরম হাতে খেললে বল মাটিতে নামানো যেত। ইমরুল ডিফেন্স করতে গেলেন শক্ত হাতে। থার্ড স্লিপে ১৮ বলে ৬ রানে আজিঙ্কা রাহানের হাতে তখন তার বিদায় ঘন্টা।

সাদমান ইসলাম

ভারতের কোয়ালিটি পেসে নড়বড়ে ছিলেন সাদমান ইসলামও। তবে ইমরুলের থেকে অনেকটাই সাবলীল লাগছিল তাকে। রয়েসয়ে অনেকটা সময় নিয়ে মনে হচ্ছিল তাল পাচ্ছিলেন। ইশান্ত শর্মাকে পয়েন্ট দিয়ে কাট করে এনেছিলেন ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি।

সাদমানের অ্যাপ্রোচ পড়েই ইশান্ত হাঁটলেন প্রলুব্ধ করার পথে। অফ স্টাম্পের বাইরে ড্রাইভ করার জন্য ঝুলিয়ে দিলেন বল। একবার, দুইবার মিস। তৃতীয়বার লাগল ব্যাটের কানায়। ঋদ্ধিমান সাহার হাতে তখন জমা সাদমানের ২৪ বলে ৬ রানের দৌড়।

মোহাম্মদ মিঠুন

উইকেটকিপিং ছেড়ে কেবল ব্যাটসম্যান হিসেবে এই টেস্টে নেমেছেন মুশফিকুর রহিম। মনে হচ্ছিল, তিনি নামবেন চারে। কিন্তু ১২ রানে ২ উইকেট পড়ার পর বিস্ময়করভাবে চারে দেখা গেল মোহাম্মদ মিঠুনকে। ক্রিজে এসে ইমরুলের চেয়ে খুব ফারাক তৈরি করতে পারেননি তিনি। মোহাম্মদ শামির বলে অনেকবারই মনে হয়েছে এই বুঝি শেষ মিঠুনের দৌড়। ভারতের নেওয়া এলবিডাব্লিউয়ের রিভিউতে বেঁচেছেন কোনোমতে। কিন্তু দুর্বল টেকনিক, রক্ষণে আত্মবিশ্বাসহীনতা নিয়ে টিকে থাকা দায়। প্রথম ঘন্টার পর শামির বলে থেমেছে তার ৩৬ বলে ১২ রানের সংগ্রাম।

অপরাজিত দুজন:

মুমিনুল হক

বাকি সবার কাঁপাকাঁপির মাঝে একমাত্র অধিনায়ক মুমিনুল হকই কিছুটা নিবেদন দেখাতে পারছেন। উমেশ যাদবদের পেস বুঝে নামাতে পারছেন ব্যাট, জায়গায় গিয়ে ছাড়ছেন। আবার কখনো ব্যাটের ফেস ওপেন করে রানও করছেন। লাঞ্চ বিরতি পর্যন্ত ৫৬ বলে ২২ রান করেছেন মুমিনুল, মেরেছেন ৪টি চার।

মুশফিকুর রহিম

পাঁচে নেমে সাবলীল নন মুশফিকুর রহিম। ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদবদের বলে একাধিকবার পরাস্ত হয়েছে। উমেশের বলে ফিরেও যেতে পারতেন। ব্যক্তিগত ৩ রানে উমেশের বলে কাবু হয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন। ভারত দলনেতা বিরাট কোহলি লাফিয়ে তা হাতে নিয়েও রাখতে পারেননি। অবশ্য জড়তা কিছুটা কাটাতে শুরু করেছেন মুশফিক। অপরাজিত আছেন ২২ বলে ১৪ রানে।

১৭ ওভারে ৩১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর মুমিনুল-মুশফিক প্রতিরোধ লড়াই শুরু করেছেন। তাতে রান তোলার গতিও বেড়েছে বেশ। চতুর্থ উইকেটে ৯ ওভারে তারা যোগ করেছেন ৩২ রান।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

13m ago